রুখে দিল যাদবপুর
২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯যথাসম্ভব চেষ্টা করেছিলেন বিজেপির ছাত্র শাখা অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের কর্মী-সমর্থকরা৷ সোমবার দক্ষিণ কলকাতার গড়িয়াহাট থেকে তাদের কয়েক হাজার কর্মী-সমর্থকের এক মিছিল রওনা হয় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে৷ বিজেপির সাংসদ এবং কেন্দ্র সরকারের রাষ্ট্রমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়কে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকতে বাধা দেওয়া এবং হেনস্থা করার প্রতিবাদে ছিল এই মিছিল৷ অবধারিতভাবেই যা আরো বেশি উত্তেজনা ছড়াত আগে থেকেই স্পর্শকাতর যাদবপুরে৷
কিলোমিটার দুয়েক যাওয়ার পর পুলিশ রাস্তার মাঝখানে ব্যারিকেড গড়ে মিছিল আটকায়৷ এরপর প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে দফায় দফায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ান এবিভিপি কর্মীরা৷ বারবার ব্যারিকেড ভেঙে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা হয়৷ বৃষ্টির মতো ইট ছোঁড়া হয় পুলিশকর্মীদের লক্ষ্য করে৷ কিন্তু পুলিশের পক্ষ থেকে এদিন অত্যন্ত সংযম দেখানো হয়৷ লাউড স্পিকারে আবেদন জানানো হয়, যেহেতু মিছিলের কোনো আগাম অনুমতি পুলিশের কাছ থেকে নেওয়া হয়নি, এই মিছিল বেআইনি৷ ফলে মিছিলটিকে কোনোমতেই রাস্তা দেওয়া হবে না৷ দীর্ঘক্ষণ বিরোধ চলার পর শেষে এবিভিপি কর্মীরা রণে ভঙ্গ দেয়৷
ওদিকে মিছিল আসার খবর পেয়েই যাদবপুরের সমস্ত অধ্যাপক দল-মত নির্বিশেষে একজোটে এসে ব্যারিকেড গড়ে দাঁড়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটকের সামনে৷ তাঁদের বক্তব্য ছিল পরিষ্কার৷ বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকতে হলে, ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে পৌঁছাতে হলে তাঁদের ব্যারিকেড ভেঙেই এগোতে হবে৷ সংকট মুহূর্তে অধ্যাপকদের এভাবে ছাত্র-ছাত্রীদের পাশে এসে দাঁড়ানো যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃতি৷ গর্বের সঙ্গে জানালেন সমাজতত্ত্বের ছাত্রী রোশনি গুহ৷ এর আগেও ২০১৬ সালের আন্দোলনের সময় যখন যাদবপুরে হামলার চেষ্টা হয়েছিল, অধ্যাপক অধ্যাপিকারাই ছিলেন প্রতিরোধের সামনের সারিতে৷
এর আগে গণ মাধ্যমে বারবার যে কথা উঠে এসেছে, রোশনিও এদিন ডয়চে ভেলেকে সেকথাই জানালেন যে, তাঁদের বিশ্ববিদ্যালয়ের যেসব ছাত্র-ছাত্রী এবিভিপির সমর্থক, তাঁদের কয়েকজনকে যেমন তাঁরা চিহ্নিত করতে পেরেছেন, তেমনি এমন বহু লোককে দেখা গেছে, দেখা যাচ্ছে, যাঁরা কোনোমতেই ছাত্র নয়৷ এবং নিশ্চিতভাবেই বহিরাগত৷