এবার ‘পার্লামেন্টে বন্দি' সু চি?
৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৬তাঁর দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসি (এনএলডি) সংসদ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করার পর থেকেই ‘গণতন্ত্রের মানসকন্যা' অং সান সু চি ভীষণ ব্যস্ত৷ দলীয় প্রধান হিসেবে সরকার গঠনের চেষ্টা-তদবিরে ব্যস্ততা তো ছিলই, দেশকে আবর্জনামুক্ত করার কাজেও কোমর বেঁধে নেমেছেন তিনি৷
ওদিকে রোহিঙ্গা মুসলমানদেরও অনেকটা ‘আবর্জনার' মতোই দূরে রাখছে মিয়ানমার সরকার৷ প্রতিদিন কতজন রোহিঙ্গা দেশ ছাড়লো তার হিসেব নেই, বিষয়টি নিয়ে কারো যেন কোনো ভ্রুক্ষেপই নেই৷ রোহিঙ্গারা গেলেই যেন সরকার বাঁচে৷ তাই সাগরপথে নিয়মিতই বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছেন রোহিঙ্গারা৷ সবচেয়ে কাছের ‘বিদেশ' বাংলাদেশ৷ তাই বাংলাদেশেও যাচ্ছেন অনেকে৷ আশ্রয় জুটছে না সবার৷ দালালসহও ধরা পড়ছেন অনেকে৷
মিয়ানমার ছাড়ার বা সেখানে থাকার নতুন কোনো পথের সন্ধান রোহিঙ্গারা এখনো পায়নি৷ দেশে থাকার একটাই উপায় – পূর্ণ নাগরিকের স্বীকৃতির আশা ছেড়ে দিয়ে সব নির্যাতন মেনে নেয়া৷ দেশ ছাড়ারও একটাই পথ – সাগরপথ৷
সেই পথে আছে ডুবে মরার, না খেয়ে মরার ভয়৷ জীবিত অবস্থায় তীরে উঠলে সেখানে আছে পুলিশি বাধা৷
কিন্তু অং সান সু চির সামনে নতুন কোনো বাধা নেই৷ এখনো সেই সামরিক বাহিনীই আড়াল থেকে খেলছে৷ সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা হিসেবে সংসদে যাচ্ছেন সু চি৷ প্রেসিডেন্ট হবার পথে আইনি যে বাধা তা নতুন আইন দিয়ে নাকচ করা যায় কিনা সে বিষয়ে ভাবছেন৷ কিন্তু সংসদে, সরকারে সব জায়গাতেই আছে সামরিক বাহিনীর লোকজন৷ সংসদে এক চতুর্থাংশ আসনের সাংসদই সামরিক কর্মকর্তা৷ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রতিরক্ষা এবং সীমান্ত সম্পর্ক বিষয়ক মন্ত্রণালয় এখনো সামরিক বাহিনীর হাতে৷
এ সবের পরও আশাবাদী মানুষ মিয়ানমারের সামনে দেখছে নতুন দিনের দিকে এগিযে যাবার পথ৷ সে পথ হয়ত ধীরে ধীরে সত্যিই দেশটিকে কাঙ্খিত গণতন্ত্রের দিকে এগিয়ে নেবে, হয়ত ধীরে ধীরে জেল থেকে মুক্তি পাবেন মিয়ানমারের সব রাজনৈতিক ও মানবাধিকার কর্মী৷ হয়ত বর্তমান ধারা বজায় রেখে মিয়ানমার সত্যিই অর্থনীতিতেও পেয়ে যাবে বিস্ময়কর সাফল্য৷
কিন্তু প্রায় তিন দশক অন্তরিন থেকে ‘গণতন্ত্রের মানসকন্যা' হয়ে যাওয়া অং সান সু চি কি রোহিঙ্গাদের বিষয়ে নতুন কিছু করবেন? নাকি এবার তিনি পার্লামেন্টেই ‘অন্তরিন' থাকার সিদ্ধান্ত নেবেন?
আপনার কী মনে হয়? জানান নীচে, মন্তব্যের ঘরে৷