1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভারতীয় নারীদের কি জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে?

২ নভেম্বর ২০১৭

ভারতে হিন্দু এবং মুসলমানদের মধ্যে কয়েকটি বিয়ে নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে সন্ত্রাসবিরোধী এজেন্সি এনআইএ৷ অভিযোগ রয়েছে, এসব বিয়ের মাধ্যমে হিন্দু নারীদের কার্যত মুসলমান বানিয়ে সন্ত্রাসবাদে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে৷

https://p.dw.com/p/2mvtD
ছবি: Imago/Hindustan Times

ভারতের কেন্দ্রীয় সন্ত্রাসবিরোধী এজেন্সি এনআইএ সম্প্রতি ভারতের সুপ্রিম কোর্টকে জানিয়েছে যে, কেরালা রাজ্যে দুই ধর্মের মানুষের মধ্যে নব্বইটি বিয়ে নিয়ে তদন্ত করছে সংস্থাটি৷ কেননা, এসব বিয়ের সময় হিন্দু নারীদের প্রলুব্ধ করে বা জোর করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করতে বাধ্য করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে৷ গত দুই বছরে এসব বিয়ের ঘটনা ঘটেছে৷

এনআইএ আরো জানিয়েছে যে, কোনো সংগঠিত গোষ্ঠী অসহায় হিন্দু নারীদের সন্ত্রাসী হিসেবে নিয়োগ দিচ্ছে কিনা তা খতিয়ে দেয়ার দায়িত্ব রয়েছে সংস্থাটির৷ উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক এক ‘হাই-প্রোফাইল' মামলাকে কেন্দ্র করে এনআইএ তদন্তে নামে৷ গত ডিসেম্বরে ২৪ বছর বয়সি আখিলা অশোকান মুসলিম যুবক শাফিন জাহানকে বিয়ে করার পর হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন৷ তিনি তাঁর নাম বদলে রাখেন হাদিয়া৷ 

তবে হিন্দু বাবার অনুরোধে কেরালার হাইকোর্ট হাদিয়ার বিয়ে বাতিল করে দেয় এবং তাঁকে তাঁর বাবা-মায়ের কাছে ফিরে যেতে বলে৷ হাদিয়া ফিরে গেলে তাঁকে বন্দি করে রাখা হয়৷ অন্যদিকে, তার মুসলিম স্বামী আদালতের বিয়ে বাতিলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করে৷

বর্তমানে এই বিষয়টি নিয়ে ভারতের বিচার বিভাগে ব্যাপক বিতর্ক হচ্ছে৷ একটি আদালত একজন মানুষের ব্যক্তি জীবনের উপর কতটা জোর খাটাতে পারে সেটা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে৷ এখন সর্বোচ্চ আদালত হাদিয়াকে হাজির হতে বলেছে যাতে তিনি নিজে তাঁর পরিস্থিতির কথা জানাতে পারেন৷ অর্থাৎ তাঁকে জোর করে ধর্মান্তরিত করা হয়েছে, নাকি নিজের ইচ্ছায় ধর্মান্তরিত হয়েছিলেন, তা জানতে চায় আদালত৷ 

এদিকে, হিন্দু এবং মুসলমানদের মধ্যে বিয়ে নিয়ে তদন্তের বিষয়টির সমালোচনাও করছেন অনেকে৷ কেরালা রাজ্যের ক্ষমতাসীন দল ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী)-র ফুয়াদ হালিম বলেন, ‘‘এই তদন্তের মাধ্যমে আসলে ভোট পাওয়ার স্বার্থে দুই ধর্মের মধ্যে ইচ্ছাকৃতভাবে বিভেদ এবং ঘৃণার বীজ বোনা হচ্ছে৷'' তিনি এজন্য হিন্দু উগ্রবাদীদের দায়ী করেন৷ 

তবে নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক এনআইএ'র এক কর্মকর্তা ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন যে, কেরালায় যা হচ্ছে, তাকে স্রেফ মনস্তাত্বিক অপহরণের সঙ্গে তুলনা করা যায়৷ এজেন্সিটির কাছে এ সংক্রান্ত তথ্য প্রমাণ রয়েছে বলেও দাবি করেছেন সেই কর্মকর্তা৷

এনআইএ এখন অবধি দুই হিন্দু নারীর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন, যাঁরা দাবি করেছেন যে, তাঁদের ধর্মন্তরিত হতে প্রলুব্ধ করা হয়েছিল৷ তাঁদের একজন জানিয়েছেন যে, বিতর্কিত ইসলাম ধর্ম প্রচারক জাকির নায়েকের এক ভিডিও তাঁকে ধর্মান্তরিত হতে উৎসাহ জুগিয়েছিল৷

উল্লেখ্য, ডানপস্থি হিন্দু সংগঠনগুলো হিন্দু নারীদের ধর্মান্তরিত হওয়ার বিষয়টিকে ‘লাভ জিহাদ' হিসেবে বিবেচনা করেন৷ তারা দাবি করেন যে, মুসলমান পুরুষরা হিন্দু নারীদের বিয়ে করে তাদের ধর্মান্তরিত হতে বাধ্য করেন এবং অনেক সন্তান নেয়ার পর তাদের ছেড়ে দেন৷ তবে হিন্দু এবং মুসলমানদের মধ্যে বিয়ে দক্ষিণ এশিয়ায় নতুন কিছু নয়৷ এই চর্চা যুগ যুগ ধরে চলে আসছে৷

প্রতিবেদন: মুরালী কৃষ্ণান / এআই