লিবিয়ায় আবার বিভাজন বাড়ছে
বহুদিন বিভাজিত থাকার পর লিবিয়ায় কিছুটা ঐক্য ফিরতে যাচ্ছে বলে গত এক বছর ধরে মনে করা হচ্ছিল৷ কিন্তু এখন আবার আগের জায়গায় ফিরে গেছে দেশটি৷
আশাভঙ্গ
২০১১ সালে গাদ্দাফির পতনের পর লিবিয়ায় একের পর এক সংঘাত হয়েছে৷ মিলিশিয়া ও বিদেশি সরকারগুলোর সহায়তা নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রশাসন দেশের পূর্ব ও পশ্চিমাঞ্চল শাসন করেছে৷ গত ২৪ ডিসেম্বর দেশটিতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল৷ কিন্তু সেটা অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত হয়ে যায়৷
স্থগিত হওয়ার কারণ
নির্বাচনে কারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবে এবং নির্বাচনের নিয়ম কী হবে তা নিয়ে একমত হতে না পারায় নির্বাচন স্থগিত করা হয়৷
দুই প্রধানমন্ত্রী
গত ১০ ফেব্রুয়ারি সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ফাটি বাশাগাকে একটি নতুন সরকার গঠনের অনুমোদন দেয়৷ এরপর নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য ১৪ মাস সময় বেঁধে দেয়৷ কিন্তু বর্তমান প্রধানমন্ত্রী আব্দুল হামিদ বেইবা পদত্যাগ করতে অস্বীকার করেছেন৷ বছরখানেক আগে তার নেতৃত্বে একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা হয়েছিল৷ নির্বাচন পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকার অঙ্গীকার করেছেন তিনি৷
বাশাগার পরিচয়
৫৯ বছর বয়সি বাশাগা বিমানবাহিনীর সাবেক পাইলট ও একজন ব্যবসায়ী৷ ত্রিপোলিতে জাতিসংঘের সমর্থনে গঠিত একটি প্রশাসনে ২০১৮ সাল থেকে ২০২১ সালের মার্চ পর্যন্ত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন তিনি৷ তুরস্ক, ফ্রান্স, যুক্তরাষ্ট্র এমনকি মিশর ও রাশিয়ার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক আছে তার৷ স্থগিত হওয়া প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়তে চেয়েছিলেন তিনি৷
বেইবার পরিচয়
ক্যানাডায় প্রকৌশল নিয়ে পড়েছেন বেইবা৷ রাজনীতিতে তিনি নতুন৷ লিবিয়ার অন্যতম ধনী ব্যক্তি আলী বেইবার আত্মীয় তিনি৷ আলী বেইবা গাদ্দাফি আমলে রাজনীতি করতেন৷ তার সম্পদের উপর বেইবা অনেকখানি নির্ভরশীল বলে ধারনা করা হয়৷ প্রথমে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করতে না চাইলেও পরে তিনি প্রার্থিতা ঘোষণা করেছিলেন৷
হাফতারের প্রভাব
সাবেক ঊর্ধ্বতন এই সামরিক কর্মকর্তা বিশ বছরের বেশি সময় ওয়াশিংটনে ছিলেন৷ সেই সময় তিনি সিআইএর সঙ্গে কাজ করতেন বলে মনে করা হয়৷ ২০১১ সালে লিবিয়ায় ফিরে তিনি গাদ্দাফিবিরোধী বিক্ষোভে অংশ নেন৷ ২০১৪ সালে লিবিয়ান আরব আর্মড ফোর্সেস গঠন করে পূর্বাঞ্চল ও দক্ষিণের একটা বড় অংশের নিয়ন্ত্রণ নেন৷ অবশ্য ত্রিপোলি দখলের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছিলেন৷ হাফতারও প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করতে চেয়েছিলেন৷
সাইফ আল গাদ্দাফি
প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা দেয়ার পর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চেয়েছিলেন গাদ্দাফির ছেলে সাইফ৷ যদিও নির্বাচন কমিশন তার প্রার্থিতা বাতিল করে দিয়েছিল৷ ২০১১ সালের বিক্ষোভের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত তাকে খুঁজছে৷