শরণার্থী নিয়ে উদ্বেগ
১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৫অক্টোবর ফেস্টের আর বেশি দেরি নেই৷ জার্মানির সবচেয়ে বড় এই বাৎসরিক উৎসবকে ঘিরে আগে থেকেই শুরু হয় সাজসাজ রব, শুরু হয় সানন্দে আনন্দোৎসবে শরিক হবার অপেক্ষা৷ এবার যোগ হয়েছে নিরাপত্তা নিয়ে বড় রকমের শঙ্কা৷ সাংস্কৃতিক বৈপরিত্যের দুর্ভোগ এড়ানোর উপায় নিয়েও চিন্তিত অনেকে৷ মিউনিখের উরসুলা স্টেলেনব্যার্গের কথায় একই সঙ্গে উঠে এলো শরণার্থীদের প্রতি উদারতা আর পরিবর্তিত পরিস্থিতির কারণে জন্ম নেয়া শঙ্কা৷ বার্তা সংস্থা এএফপিকে তিনি বলেছেন, ‘‘আমাদের শহরে শরণার্থী আসছে বলে আমি গর্বিত৷ কিন্তু বিষয়টা কোথায় গিয়ে থামবে এটা তো ভাবতেই হবে৷ আর কত লোক আসবে? তারা ঘুমাবে কোথায়? কে খাওয়াবে তাদের? আমরা তাদের সাহায্য করতে চাই, কিন্তু অনেক গরিব জার্মানও যে আছে, সে কথাও তো মনে রাখতে হবে!''
শুধু সেপ্টেম্বর মাসের প্রথমার্ধেই মিউনিখে এসেছে ৭৫ হাজার শরণার্থী৷ জার্মানির অন্য কিছু স্থানেও অতিরিক্ত হারে আসায় কোনো কোনো অঞ্চলের স্থানীয় সরকার ইতিমধ্যে বিষয়টি নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছে৷ বাভারিয়া জানিয়ে দিয়েছে, তারা আর শরণার্থী নেবে না৷
ব্যাপক সমালোচনার মুখে সরকারও শরণার্থী নীতিমালায় পরিবর্তন আনছে৷ বলা হচ্ছে, কোনো অভিবাসনপ্রত্যাশীর আবেদন প্রত্যাখ্যাত হলে তাকে শুধু ফেরার টিকিট আর খাদ্যসামগ্রীর মতো সামান্য কিছু সহায়তা নিয়ে জার্মানি ছেড়ে যেতে হবে৷
শরণার্থী নীতির পরিবর্তনের বিষয়টি ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে৷ এ পরিবর্তনকে ‘অমানবিক' হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন অনেকেই৷
এদিকে জার্মানির শরণার্থী বিষয়ক কার্যালয়ের প্রধান মানফ্রেড শ্মিট পদত্যাগ করেছেন৷ ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করলেও ধারণা করা হচ্ছে, ব্যাপক হারে শরণার্থী গ্রহণ এবং অব্যবস্থাপনার কারণে সমালোচনার তোপ সামলাতে না পেরে সরে দাঁড়াতে বাধ্য হয়েছেন তিনি৷
জার্মানিতে যখন শরণার্থীর সংখ্যাধিক্য নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা চলছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কিছু দেশ তখনও নির্দিষ্ট কোটা মেনেই শরণার্থী গ্রহনে অনিচ্ছুক৷ জার্মানির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী টোমাস ডেমেজিয়ের জানিয়েছেন, পোল্যান্ড, ক্রোয়েশিয়ার মতো দেশগুলোকে শরণার্থী গ্রহণে বাধ্য করার জন্য চাপ প্রয়োগ করা হবে৷ আগামী বুধবারই হয়ত সে সুযোগ পাবেন ডেমেজিয়ের৷ সেদিনই শরণার্থী গ্রহণ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে বসবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন৷
এসিবি/ডিজি (এএফপি, রয়টার্স, ডিপিএ)