শিশুদের ওপর নির্যাতন কমেনি: ইউনিসেফ
১ জুলাই ২০১১প্রতি বছর বিশ্বের প্রায় ৭০ শতাংশ শিশু বিভিন্ন ধরণের সন্ত্রাসীমূলক কর্মকান্ডের শিকার হয়৷ যৌন পীড়ণ, মারধোর – কোন কিছুই বাদ যায়না৷ এসব শিশু অত্যন্ত ভীত অবস্থায় দিন কাটায়৷ জাতিসংঘের শিশুদের ওপর পীড়ণ প্রতিরোধে বিশেষ দপ্তরের প্রতিনিধি মার্টা সান্টোস পে বার্লিনে বৃহষ্পতিবার কথাগুলো বলেন৷ ইউনিসেফ এ নিয়ে সম্প্রতি একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, তাতে উল্লেখ করা হয়েছে যে সারা বিশ্বে প্রায় দেড়শো কোটি শিশু প্রতিদিন বিভিন্ন ধরণের অত্যাচার এবং নির্যাতনের শিকার হয়৷
ইউনিসেফ জার্মানির প্রধান ইয়ুর্গেন হেরয়েস বেশ জোর দিয়েই বলেন যে, বিভিন্ন দেশে শিশুদের অধিকার রক্ষা করতে যেসব আইন রয়েছে তার যথাযথ প্রয়োগ নেই৷ বিশেষ করে উন্নয়শীল দেশে তা লক্ষ্য করা যায় বিশেষভাবে এবং সেখানে আইনগুলো ভীষণ দুর্বল৷
শিশু শ্রম, বাল্য বিবাহ, যৌনাঙ্গচ্ছেদ, জোর করে পতিতা হিসেবে কাজ করানো – এসব কিছুই মেনে নেয়া হয় সহজে৷ সরকার বা সাধারণ মানুষ এসবের প্রতিকারে এগিয়ে আসে না, প্রতিবাদও করে না৷ এছাড়া অনেক দেশেই দেখা যায় শিশুদের শাসন করতে প্রয়োজনে মার-ধোর করা হচ্ছে৷ প্রতি চারটি শিশুর মধ্যে তিনজনের কাছ থেকে শোনা গেছে যে তাদের গায়ে হাত তোলা হয়৷ আক্ষেপের সঙ্গে জানান হেরয়েস৷
জার্মানিতেও শিশুরা অবহেলিত
তবে শুধু যে উন্নয়শীল দেশগুলোতেই এ ধরণের ঘটনা ঘটছে তা নয়৷ ইউনিসেফের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, গত বছর শুধু জার্মানিতেই প্রায় ১৮৩ জন শিশু নির্যাতন এবং নানা ধরণের অবহেলার শিকার হয়ে মারা গেছে৷
জার্মান ফার্স্ট লেডি বেটিনা ভুল্ফ জার্মানির প্রতিটি পরিবারের কাছে শিশুদের অধিকার আদায়ে সোচ্চার হবার আবেদন জানিয়েছেন, বলেছেন আরো গুরুত্ব সহকারে বিষয়টির দিকে নজর দিতে৷ এছাড়া শিশুদের প্রতি দায়িত্ব ও কর্তব্য যথাযথভাবে পালন করার ওপরও তিনি জোর দেন৷
এর সঙ্গে তিনি বলেন, শুধু গায়ে হাত তোলা বা চড়চাপড় দেয়া ছাড়াও অনেক সময় দেখা যায় ফেসবুকে বাচ্চাদের নানা রকমের ছবি তুলে দেয়া হয়৷ তা করে আশেপাশের পরিচিতরাই৷ এটাও এক ধরণের মানসিক অত্যাচার৷ এর সঙ্গে যুক্ত হয় নানা ধরণের কটুক্তি৷
গত বছর জার্মান সরকার শিশুর অধিকার আদায়ে, শিশুদের ওপর অত্যচার প্রতিরোধে একটি গোল টেবিল বৈঠকের আয়োজন করে৷ সেখানে সিদ্ধান্ত নেয়া হয় নির্যাতিত শিশুদের সাহায্যে একটি হটলাইনের ব্যবস্থা চালু করা হবে৷ কোন ধরণের অঘটন ঘটলেই যে কেউ এই নম্বরে ফোন করে সাহায্যের আবেদন করতে পারবে৷ এরপরই এগিয়ে আসে হাজার হাজার শিশু৷ শিশুরা মুখ খুলতে শুরু করে৷ জার্মানির পর এধরণের হটলাইন ব্যবস্থা চালু করেছে ইটালি৷
প্রতিবেদন: মারিনা জোয়ারদার
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক