শুরু হচ্ছে জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলন
৭ ডিসেম্বর ২০০৯সফলতায় আশাবাদী জাতিসংঘ মহাসচিব
এ পর্যন্ত মার্কিন রাষ্ট্রপ্রধান বারাক ওবামা, চীনের নেতা ওয়েন জিয়াবাও এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিংসহ ১০৫ টি দেশের নেতারা সম্মেলনে যোগ দিতে তাঁদের সম্মতির কথা জানিয়েছেন৷ কোপেনহেগেন সম্মেলনের প্রাক্কালে জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক জাতিসংঘের শীর্ষ কর্মকর্তারা এই সম্মেলনে একটি সমঝোতা হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন৷ জলবায়ু সম্মেলনে সব সদস্যদেশের সম্মতিতে একটি চুক্তি হবে বলে আশাবাদী জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি-মুন৷ একটি ড্যানিশ পত্রিকায় রবিবার প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে বান এ আশা প্রকাশ করেন৷
জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত কিয়োটো প্রটোকল পরবর্তী নতুন একটি চুক্তি করা সম্মেলনের লক্ষ্য৷ কিয়োটো প্রটোকলের মেয়াদ শেষ হচ্ছে ২০১২ সালে৷ বান ডেনমার্কের 'বার্লিংস্ককে টিডেন্ডে' পত্রিকার সঙ্গে সাক্ষাৎকারে বলেন, ''আমি কোপেনহেগেন নিয়ে খুবই আশাবাদী৷'' তিনি আরও বলেন, ''আমরা একটি চুক্তিতে উপনীত হতে পারব এবং এতে জাতিসংঘের সব সদস্যদেশই স্বাক্ষর করবে বলে আমার বিশ্বাস৷ যা একটি ঐতিহাসিক ব্যাপার৷'' তিনি বলেন, ''আমাদের উপযুক্ত রাজনৈতিক অঙ্গীকার আছে৷ সব দেশের সরকার এবং রাষ্ট্রপ্রধানদের লক্ষ্য একই৷ আর তা হচ্ছে বিশ্ব ঊষ্ণায়ন রোধ করা৷ এই লক্ষ্য অর্জনে কিভাবে ব্যবস্থা নিতে হবে সেটিই এখন নির্ধারণ করা বাকি৷''
ইউএনএফসিসিসি প্রধান ইভো দ্য বয়ার
এছাড়া, জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক জাতিসংঘের সংস্থা ইউএনএফসিসিসি'এর প্রধান ইভো দ্য বয়ার রবিবার কোপেনহেগেনে এক সাংবাদিক সম্মেলনে কার্বন নির্গমন কমানোর অঙ্গীকার ও লক্ষ্যমাত্রা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় অভিযোজন তহবিল নিয়ে কথা বলেন৷ তিনি বলেন, ''আমরা বছরে এক হাজার কোটি মার্কিন ডলারের স্বল্পমেয়াদী অর্থায়নের অনুসন্ধান করছি, যা ২০১২ সাল নাগাদ তিন হাজার কোটি ডলারে পৌঁছবে৷'' এছাড়া আরো দীর্ঘমেয়াদী তহবিলের অনুসন্ধানের কথা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ''২০২০ সাল নাগাদ বছরে ১০ হাজার কোটি ডলারের তহবিল গঠনের পরিকল্পনা রয়েছে৷'' এই সম্মেলনে একটি 'সমন্বিত, উচ্চাকাঙ্খী ও কার্যকর আন্তর্জাতিক জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক চুক্তি' হবে বলে বয়ার আশা প্রকাশ করেন৷
পরিবেশবাদীদের আন্দোলন
উল্লেখ্য, জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক আন্তঃসরকার প্যানেলের-আইপিসিসি'র ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ী, গ্রিন হাউস গ্যাস নির্গমন বর্তমান হারের চেয়ে না কমানো হলে মালদ্বীপ, কিরিবাতি এবং টুভালুর মতো দ্বীপরাষ্ট্রগুলো ২১০০ সাল নাগাদ পৃথিবীর মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবে৷ গ্রিন হাউস গ্যাস নির্গমন কমাতে কী উদ্যোগ নেওয়া হবে, তাই নির্ধারণ হবে কোপেনহেগেন সম্মেলনে৷ এদিকে, সম্মেলনের প্রাক্কালে পরিবেশ আন্দোলন কর্মীরা দলে দলে কোপেনহেগেনে পৌঁছতে শুরু করেছে৷ সম্মেলনে বিশ্ব নেতারা যাতে একটি কার্যকর সমঝোতায় পৌঁছতে পারেন সেজন্য তাঁদের উপর চাপ প্রয়োগ করতেই ইউরোপের বিভিন্ন শহরে হাজার হাজার আন্দোলনকারী মিছিল-সমাবেশ করে৷ তাই সম্মেলন শুরুর আগে কোপেনহেগেনে গড়ে তোলা হয়েছে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা বেষ্টনি৷
প্রতিবেদন: হোসাইন আব্দুল হাই, সম্পাদনা: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়