সঙ্গী বাছাইয়ে ডিএনএ
২১ মে ২০১৪গবেষকরা বলছেন, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে অনকে বিষয়েই হয়ত মতের বা পছন্দের মিল থাকে৷ তবে গুরুত্বপূর্ণ মিলটি থাকে দু'জনের ডিএনএ গঠনে৷ অর্থাৎ, চোখ যাই খুঁজুক, বিয়ের জন্য পাত্র-পাত্রী বাছাইয়ের সময় মানুষ আসলে কাছাকাছি ডিএনএ গঠনের কাউকেই খুঁজে ফেরে৷
এই সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর আগে যুক্তরাষ্ট্রের ৮২৫টি দম্পতির জিন বিন্যাস পরীক্ষা করে দেখেছেন বিজ্ঞানীরা৷ সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারী এই ১৬৫০ জন অ্যামেরিকানের সবাই নন-হিস্পানিক শ্বেতাঙ্গ, যাঁদের জন্ম হয়েছে ১৯৩০ থেকে ১৯৫০ সালের মধ্যে৷
যুক্তরাষ্ট্র সরকারের তহবিলে পরিচালিত এই গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের জিনবিন্যাস থেকে ১৭ লাখ ডিএনএ ব্লক (সিঙ্গেল নিউক্লিওটাইড পলিমরফিজম) মিলিয়ে দেখেছেন গবেষকরা৷ আবার স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে যেসব বিষয়ে মিল পাওয়া যাচ্ছে, সেগুলোর সঙ্গে তুলনা করার জন্য মিলিয়ে দেখা হয়েছে অন্য কোনো দম্পতির নারী বা পুরষের ডিএনএ-র সঙ্গেও৷
গবেষক দলের প্রধান কলোরাডো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক বেঞ্জামিন ডমিঙ্গে বলেন, ‘‘আমরা জানি, মানুষ সাধারণত নিজের জাতি বা নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠীর ভেতরেই প্রেম বা বিয়েতে অভ্যস্ত৷ আমরা এর মূল কারণগুলো খুঁজে বের করার চেষ্টা করেছি৷ আমরা কেবল একটি নির্দিষ্ট গ্রুপের মানুষের (নন হিস্পানিক, শ্বেতাঙ্গ) মধ্যেই গবেষণা সীমাবদ্ধ রেখেছি৷ তারপরও আমরা দেখেছি, প্রতিটি দম্পতির মাঝে জিনগত অনেক সাজুয্য রয়েছে৷''
ডমিঙ্গে বলেন, জিনগতভাবে মিল আছে এমন জীবনসঙ্গী বেছে নেয়ার আসল প্রক্রিয়াটি হয়ত অনেক জটিল, হয়ত আরো অনেক বিষয় এর সঙ্গে সম্পর্কিত৷ তবে পাত্র-পাত্রী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে মানুষ সাধারণত একই ধরনের পারিবারিক ও সামাজিক অবস্থান, মানসিক গঠন, শিক্ষা, জাতি-ধর্ম-বর্ণ, বয়স ও শারীরিক গড়ন খুটিয়ে দেখে৷ হয়ত এর মধ্যে দিয়েই তাঁরা নিজেদের অজান্তে নিজেদের মতো জিনবিন্যাসের কাউকে বাছাই করতে চায়৷
‘‘যেমন ধরুন, সম্ভাব্য সঙ্গী বা সঙ্গিনীর উচ্চতা মানুষ গুরুত্বের সঙ্গে দেখে৷ লম্বা মানুষ লম্বা আরেকজনকেই বিয়ে করতে চায়৷ ফলে ওই দম্পতির ক্ষেত্রে একটি বিষয়ে জিনগত সাজুয্য তৈরি হয়৷ কিন্তু এই বাছাই প্রক্রিয়ার চূড়ান্ত সিদ্ধান্তটি কীসের প্রভাবে নেয়া হয় – তা বলা কঠিন৷''
অন্য জাতি বা নৃগোষ্ঠী, মিশ্র জাতির দম্পতি বা সমকামীদের মধ্যে একই গবেষণা চালানো হলে আরো অনেক চমকপ্রদ তথ্য হয়ত বেরিয়ে আসবে বলই গবেষকদের বিশ্বাস৷
জেকে/ডিজি (রয়টার্স, এপি)