1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সব দলকে নির্বাচনে আনাই চ্যালেঞ্জ

২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২

সব দলের অংশগ্রহণে স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করতে চান বাংলাদেশের নবনিযুক্ত প্রধান নির্বাচন কমিশনার৷ তবে আস্থা অর্জনে নতুন কমিশনকে আইন অনুযায়ী ক্ষমতা প্রয়োগ করতে হবে, বলছেন বিশ্লেষকরা৷

https://p.dw.com/p/47fv5
সব দলের অংশগ্রহণে স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করতে চান বাংলাদেশের নবনিযুক্ত প্রধান নির্বাচন কমিশনার৷ তবে আস্থা অর্জনে নতুন কমিশনকে আইন অনুযায়ী ক্ষমতা প্রয়োগ করতে হবে, বলছেন বিশ্লেষকরা৷
প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী প্রধান নির্বাচন কমিশনার হাবিুবল আউয়াল এবং চারজন নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর, আনিছুর রহমান, রাশেদা সুলতানা এবং আহসান হাবীব খানকে শপথ পড়ানছবি: PID

বাংলাদেশের প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং চারজন নির্বাচন কমিশনার রোববার বিকালে শপথ নিয়েছেন৷ এই নির্বাচন কমিশনের অধীনেই ২০২৩ সালে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা৷

শপথ নেয়ার পর নতুন প্রধান নির্বাচন কমিশনার হাবিুবল আউয়াল সবদলের অংশগ্রহণে স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ‘সর্বোচ্চ' চেষ্টা করবেন বলে জানিয়েছেন৷ সেখানে উপস্থিত সাংবাদিকদের তিনি বলেন, "শপথের মাধ্যমে কেবল দায়িত্ব অর্পিত হয়েছে৷ সংবিধান অনুযায়ী এবং শপথের প্রতি অনুগত থেকে যাতে দায়িত্ব পালন করতে পারি সে জন্য দোয়া চাইছি৷’’

এর আগে রাষ্ট্রপতির নিযুক্তির পর শনিবার তিনি বলেন, ‘‘সব দলকে নির্বাচনে আনাই আমার বড় চ্যালেঞ্জ৷''

বিশ্লেষকরা বলছেন, নতুন নির্বাচন কমিশনকে আস্থা অর্জন করতে হবে কাজের মাধ্যমে৷ তাদের কাজে যদি প্রমাণ হয় তারা সুষ্ঠু নির্বাচন করতে সক্ষম তাহলেই তারা আস্থা অর্জন করতে পারবেন৷

প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী রোববার বিকালে সুপ্রিম কোর্টের জাজেস লাউঞ্জে প্রধান নির্বাচন কমিশনার হাবিুবল আউয়াল এবং চারজন নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর, আনিছুর রহমান, রাশেদা সুলতানা এবং আহসান হাবীব খানকে শপথ পড়ান৷ এর আগের দিন শনিবার তাদের নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি৷

কমিশন নিয়ে ‘মাথাব্যাথা’ নেই বিএনপির

বিএনপি এরইমধ্যে জানিয়ে দিয়েছে তারা এই কমিশনের অধীনে নির্বাচনে যাবে না৷ তাই নির্বাচন কমিশন নিয়েও তাদের ভাবনা নেই৷ নিরপেক্ষ এবং নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন চান তারা৷ রোববার বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘‘নির্বাচন কমিশন নিয়ে আমাদের কোনো মাথাব্যাথা নেই৷ এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনই নিরপেক্ষ হবে না৷ নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে৷ নইলে বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেবে না৷”

তিনি আরো বলেন, ‘‘যদি আওয়ামী লীগ সরকার থাকে, নিশ্চিত থাকতে পারেন, কোনো নির্বাচনই হবে না৷ এ কারণে, তারা আবার তাদের মতো করে একই কায়দায় নির্বাচন করবে আর আমরা বসে বসে দেখব৷ আমরা সেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব না৷’’

প্রস্তাবিত নাম বাদ পড়লেও সন্তুষ্ট আওয়ামী লীগ

তবে নতুন নির্বাচন কমিশনকে অভিনন্দন ও স্বাগত জানিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ৷ দলের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের রোববার এক বিবৃতিতে বলেন, ‘‘আমাদের প্রস্তাবিত নাম বাদ পড়লেও সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন গঠিত হওয়ায় আমরা সন্তুষ্ট৷ গঠিত নির্বাচন কমিশনের প্রতি আমাদের আস্থা রয়েছে৷”

তিনি বলেন, "আওয়ামী লীগ নবগঠিত নির্বাচন কমিশনকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছে এবং নির্বাচন কমিশনের সব কার্যক্রমে সার্বিক সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করছে৷ এ নির্বাচন কমিশনের অধীনে আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হবে বলে প্রত্যাশা করি৷’’

‘শুধু কাঠামো নয় ব্যক্তির ওপরও অনেক কিছু নির্ভর করে’

সরকার যেন হাত-পা বেঁধে না রাখে: ডা. জাফরুল্লাহ

প্রধান নির্বাচন কমিশনার হাবিবুল আউয়ালের নাম গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী প্রস্তাব করেছিলেন৷ তার প্রস্তাবিত ব্যক্তিকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার করায় তিনি রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান৷ তিনি বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোকে এই নির্বাচন কমিশনকে মেনে নেয়ার আহ্বান জানান৷

ডয়চে ভেলেকে ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, ‘‘সরকারের কাছে আমার অনুরোধ তারা যেন হাবিবুল আউয়ালের হাত পা বেঁধে না রাখে৷ যদি তিনি স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারেন তাহলে ভারতের বহুল আলোচিত নির্বাচন কমিশনার টিএন শেষনের মতো হওয়ার সম্ভাবনা আছে তার৷ তার মধ্যে সেই চারিত্রিক দৃঢ়তা আছে৷ প্রতিরক্ষা সচিব হিসেবে, আইন সচিব হিসেবে তারমধ্যে আমি সেই দৃঢ়তা দেখেছি৷ শুধু কাঠামো নয় ব্যক্তির ওপরও অনেক কিছু নির্ভর করে৷’’

তিনি বলেন, ‘‘তারপর নির্বাচন কমিশনের যে আইন আছে যে ক্ষমতা আছে সেটা প্রয়োগ করতে দিতে হবে৷ ইভিএমের বিষয়টি ফয়সালা করতে হবে৷ আইনেরও কিছু সংশোধন করতে হবে৷ আর সরকার যেন কমিশনকে পুরোপুরি সহায়তা করে৷ তাদের কোনো কাজ যদি সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যায় তাহলেও সরকারের সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে হবে৷ সব রাজনৈতিক দলকেও সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে৷’’

তবে তার মতে, ‘‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ছাড়া আর চার জন কমিশনারের নিয়োগ গতানুগতিক হয়েছে৷ এখানে নারী একজন কেন দুই জন হতে পারতেন৷ আমলা কেন অন্য পেশা থেকেও হতে পারতেন৷’’

‘নতুন কমিশন নিয়ে জটিলতার আভাস পাওয়া যাচ্ছে’

রিট করলে জটিলতা হতে পারে: নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ

জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ পরিষদের (জানিপপ) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ মনে করেন, ‘‘এই নির্বাচন কমিশনের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ হলো একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজন করা৷ যারা নির্বাচনের মূল স্টেকহোল্ডার তাদের নির্বাচনে আনা৷ সেই সঙ্গে গত নির্বাচন কমিশনের যে নেতিবাচক ইমেজ সেখান থেকে নির্বাচন কমিশনকে বের করে ইতিবাচক ইমেজ তৈরি করা৷ আর যেন ত্রুটিপূর্ণ কোনো নির্বাচন না হয়৷”

তিনি বলেন, ‘‘নতুন কমিশন নিয়ে জটিলতার আভাস পাওয়া যাচ্ছে৷ প্রধান নির্বাচন কমিশনার হাবিবুল আউয়াল এবং একজন কমিশানেরর নাম প্রস্তাব করেছিলো এনপিপি নামে ছোটো একটি রাজনৈতিক দল৷ এটা নিয়ে কথা হচ্ছে৷ হাবিবুল আউয়াল সাহেবের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ প্রমাণিত৷ আইন ও ক্ষমতার বাইরে গিয়ে কাজ করার অভিযোগও আছে৷ এখন কোনো নাগরিক গিয়ে রিট করলে জটিলতার সৃষ্টি হতে পারে৷’’

সাবেক নির্বাচন কমিশনার গাজী মোহাম্মদ শাহনওয়াজ মনে করেন যারা নির্বাচন কমিশনে নিযুক্ত হয়েছেন তারা সবাই পোশাগত জীবনে সফল এবং সুনামের অধিকারী৷ তবে কমিশনে তাদের কাজের ওপরই তাদের সফলতা নির্ভর করছে৷তার কথা, ‘‘এই কমিশনের সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো নিবন্ধিত সব রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনে নিয়ে আসা৷ সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের আয়োজন করা৷ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মধ্যে যে মতবিরোধ আছে সেটা কমিয়ে আনতে হবে৷ এটা অনেক সময় নির্বাচন কমিশনের পক্ষে সম্ভব হয় না৷ তাই রাজনৈতিক দলগুলোরও দায়িত্ব আছে৷ তারা কমিশনের বাইরেও এটা নিয়ে কথা বলতে পারেন৷”

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান