1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সমৃদ্ধির পাশাপাশি ব্যক্তি নিরাপত্তাও প্রত্যাশা

ফাতেমা আবেদীন
৭ জানুয়ারি ২০১৯

২০১৮ সালকে অনায়াসে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির বছরের তকমা দেওয়া যায়৷ এ বছর বাংলাদেশের উন্নয়ণ স্মারক লিপিবদ্ধ করার মতোই৷ সবচেয়ে বড় অর্জন হচ্ছে বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ৷

https://p.dw.com/p/3B4nk
ছবি: Bdnews24com

জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন নীতি সংক্রান্ত কমিটি (সিডিপি) গত ১৫ মার্চ এলডিসি থেকে বাংলাদেশের উত্তরণের যোগ্যতা অর্জনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়৷

জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কাউন্সিল (ইকোসক)-এর মানদণ্ড অনুযায়ী  একটি দেশের মাথাপিছু আয় হতে হবে কমপক্ষে ১২৩০ মার্কিন ডলার, বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় তার থেকে অনেক বেশি– ১৬১০ মার্কিন ডলার, বছর শেষে যেটি দাঁড়িয়েছে ১৭৫১ মার্কিন ডলারে৷ গড় আয়ু বেড়ে ৭২ বছরে উন্নীত হয়েছে৷ 

বাজেটের আকার ৪ লাখ কোটি টাকা অতিক্রম করেছে৷ রিজার্ভ রয়েছে প্রায় ৩৩ বিলিয়ন ডলার, প্রবৃদ্ধির হার ৭ দশমিক ২৮ শতাংশ৷

শিক্ষার হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭০ শতাংশে৷ বিদ্যুৎ সুবিধা ভোগ করছে দেশের ৯০ শতাংশ জনগণ৷ জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ৮৬ শতাংশ, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ৷ দেশে দারিদ্র্যের হার হ্রাস পেয়ে বর্তমানে ২১ দশমিক  ৮ শতাংশ এবং চরম দারিদ্র্যের হার ১১ দশমিক  ৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে৷

অর্থনৈতিক অগ্রগতির সূচকে বিশ্বের শীর্ষ পাঁচটি দেশের একটি আজ বাংলাদেশ৷ বিশ্বব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুসারে ক্রয়ক্ষমতার ভিত্তিতে বাংলাদেশের অর্থনীতি বিশ্বের মধ্যে ৩১তম৷ এইচবিএসসি'র প্রক্ষেপণ অনুযায়ী ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ বিশ্বের ২৬তম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ হবে৷

দেশের ৭০ শতাংশ জনগণ মোবাইল সুবিধা গ্রহণ করেছে৷ ইন্টারনেট সংযোগ সহজলভ্য হয়েছে উপজেলা পর্যায় থেকে প্রত্যন্ত অঞ্চলে

পৌনে এক কিলোমিটার পদ্মা সেতু দৃশ্যমান হয়েছে৷ ২০১৭ সালের শেষ দিকে  প্রথম স্প্যান বসলেও এ বছর প্রায় এক কিলোমিটার পদ্মা সেতু দৃ্শ্যমান হয়েছে৷ চলতি বছর সেতুর মোট ৪২টি খুঁটির মধ্যে দুই তীরে ১৬টি করে ৩২টি পাইলের মধ্যে ২০টি সম্পন্ন হয়েছে৷

এ বছরের উন্নয়নমূলক প্রাপ্তির তালিকা করলে শীর্ষে থাকবে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট৷  ১২ মে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণের মাধ্যমে পৃথিবীর ৫৭তম দেশ হিসেবে স্যাটেলাইট-প্রযুক্তির অভিজাত দেশের কাতারে যুক্ত হয়েছে বাংলাদেশ৷

সারাদেশে সড়ক, মহাসড়ক, সেতু, ফ্লাইওভার, পাতাল সড়ক, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, রেল, নৌ ও যোগাযোগ অবকাঠামোগত উন্নয়নে ব্যাপক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হয়েছে৷ মেট্রোরেল নির্মাণের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে৷

২০১৮ সালে বাংলাদেশের উন্নয়ন সত‌্যিই দেশটির জনগণকে গর্বিত করবে৷ কিন্তু একই সঙ্গে কিছু অপ্রাপ্তিও এইসব উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করে৷ এর মধ্যে অনতম সহিংসতা, ব্যক্তি নিরাপত্তার অভাব, গুম, ধর্ষণ, ক্রসফায়ারের মতো ঘটনা৷

প্রত্যাশা সামান্যই

তাই বাংলাদেশের উন্নতিতে আহ্লাদিত জনগণের ২০১৯-র প্রথম প্রত্যাশা ব্যক্তি নিরাপত্তা নিশ্চিত হওয়া৷ পাশাপাশি চলমান উন্নয়নগুলো যেন মুখ থুবড়ে না পড়ে এটাই জনগণের চাওয়া৷ 

Fatema Abedin, Intern, DW Bangla section.
ফাতেমা আবেদীন নাজলা, ডয়চে ভেলেছবি: privat

উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে বাংলাদেশের জনগণও প্রস্তুত, দেশের উন্নয়ন কর্মে অংশ নিতে নিয়মিত কর দেওয়া থেকে শুরু করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রাখছে দেশের জনগণ৷ তাই জনগণের প্রত্যাশাটাই প্রধান৷ জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়ছে৷ এই ব্যয় কমানোর পক্ষেই সবার মত৷ প্রত্যাশা দেশের চিকিৎসা, শিক্ষা খাত উন্নত হবে৷ সুচিকিৎসা নিশ্চিতের পাশাপাশি ব্যয় কমবে এমন চাওয়া সকলের৷ শিক্ষা খাত থেকে নকল দূরীকরণের দাবি অনেক পুরানো৷ জনসংখ্যা বাড়ছে, কিন্তু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বাড়ছে না৷ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বৃ্দ্ধি ও মান উন্নয়ন আরেকটি চাওয়া৷ একইসঙ্গে নগরায়ন সম্প্রসারণের আশা করেন একটি বিশাল জনগোষ্ঠী৷ এতে করে প্রধান শহরের ওপর অতিরিক্ত চাপ কমবে৷

তবে প্রতাশ্যার ঝুলিতে মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও ব্যক্তি নিরাপত্তা সর্বাগ্রে৷ উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশও ২০১৯ সালে জনগণকে নিরাপত্তা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা দিতে সক্ষম হোক, এটিই হোক আমাদের প্রার্থনা৷

প্রিয় পাঠক, আপনার কি কিছু বলার আছে? লিখুন নীচের মন্তব্যের ঘরে৷

Fatema Abedin, Intern, DW Bangla section.
ফাতেমা আবেদীন বাংলাদেশের উদ্যোক্তা ও সাংবাদিক
স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য