সাংবাদিক, প্রতিবন্ধী এবং নারীদের জন্য কাজ করতে চাই: বেবী মওদুদ
২১ ডিসেম্বর ২০১১১৫ই ডিসেম্বর রিটার্নিং কর্মকর্তা মিহির সারোয়ার মোর্শেদ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের পাঁচ র্প্রার্থীকে জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করেন৷ এর আগে, মঙ্গলবার, তাঁদের নাম ও ঠিকানাসহ গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন বা ইসি৷ অবশ্য এই আসনগুলো ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীদেরই পাওয়ার কথা থাকায়, পাঁচ জনের সাংসদ হওয়ার বিষয়টি আগেই নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল৷
নতুন এই পাঁচ সংসদ সদস্য হলেন সাংবাদিক বেবী মওদুদ, আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা, মহিলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক পিনু খান, মহিলা আওয়ামী লীগ চট্টগ্রাম শাখার নেত্রী হাসিনা মান্নান ও সাবেক সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ফজিলাতুন নেসা বাপ্পি৷ শপথের পর, এই পাঁচ জন সংসদ সদস্যদের জন্য নির্ধারিত স্বাক্ষর বইতে সই করেন৷ সে সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বয়ং৷
সাংসদ হিসেবে নির্বাচিত হয়ে কেমন লাগছে? এ প্রশ্নের উত্তরে, তাঁদেরই একজন সাংবাদিক বেবী মওদুদ ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘সংসদ সদস্য হওয়ার কোনো আকাঙ্খা বা স্বপ্ন আমার ছিল না৷ বা এ নিয়ে আমি কখনও চিন্তা-ভাবনাও করি নি৷ আমি সবসময় একজন সাংবাদিক হিসেবে এদেশের রাজনীতি বলেন, সমাজ বলেন - এ নিয়ে যতোটা সচেতন থাকা যায়, যতোখানি সম্ভব কাজ করা যায় - তার চেষ্টা করেছি এবং করে যাচ্ছি৷ তবে একটা কথা যে, এতো মানুষ যে আমার শুভাকাঙ্খী - সেটা আমি ভাবতে পারি নি৷ এই যেমন একটি মেয়ে, যে এনজিও-তে কাজ করে - সে অনেক দূরের এক গ্রাম থেকে আমাকে ফোন করে শুভেচ্ছা জানিয়েছে৷ আবার কেউ কেউ বলেছে, আপনি হওয়া মানেই মনে হচ্ছে আমিই সংসদ সদস্য হয়ে গেছি - এই যে এতোখানি ভালোবাসা, এটাই আমাকে সবচেয়ে অভিভূত করেছে৷''
সাংবাদিক তিনি৷ এখন সংসদ সদস্যা নির্বাচিত হওয়ার পর কি করতে চান বেবী মওদুদ? তাঁর নিজের কথায়, ‘‘সাংবাদিকতা - এই পেশার মান উন্নয়নের কথা আসলে ঠিক কেউই ভাবে নি৷ না সরকারি মহলে, না আমাদের সাংবাদিকদের নেতা বা ইউনিয়ন মহলে৷ তাই আমি মনে করি, সাংবাদিকদের জন্য আমাদের এবার চিন্তা-ভাবনা করতে হবে৷ এর জন্য আমি যতোখানি পারি চেষ্টা করবো৷ এছাড়া, আমি প্রতিবন্ধীদের সঙ্গে কাজ করি৷ আমার নিজেরও একটি ‘অটিস্টিক' সন্তান আছে৷ সুতরাং প্রতিবন্ধীদের প্রতি আমার একটা দায়-দায়িত্ব আছে, তাদের জন্য আমার কিছু পরিকল্পনা আছে৷ আর এর পাশাপাশি, মেয়েদের জন্য কাজ তো আমাকে করতেই হবে৷ সরকার নারীর ক্ষমতায়নে বহু কিছু করলেও, আমাদের সমাজে এখনও নারী পাচার, একই শ্রমের কম মজুরি রয়ে গেছে৷ এখনও বহু মেয়ে হতদরিদ্রের মতো জীবনযাপন করছে বাংলাদেশে৷''
উল্লেখ্য, সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংসদে সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংখ্যা ৪৫ থেকে বাড়িয়ে ৫০ করা হয়৷ গত জাতীয় নির্বাচনে দলীয় সংসদ সদস্য সংখ্যার (আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতিতে) হিসাব করে নির্বাচন কমিশন আগেই জানিয়ে দিয়েছিল, যে এই পাঁচটি আসনই পাবে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ৷ অর্থাৎ বর্তমানে, এই পাঁচ জনকে নিয়ে সংরক্ষিত মহিলা আসনে আওয়ামী লীগের সদস্য সংখ্যা দাঁড়ালো ৪১৷ এছাড়া বিএনপি'র পাঁচ ও জাতীয় পার্টির চারজন সদস্য সংরক্ষিত আসনে রয়েছেন৷
প্রতিবেদন: দেবারতি গুহ
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক