রায়ের পর সোশ্যাল মিডিয়া বন্ধ
১৮ নভেম্বর ২০১৫
বুধবার দু’টি রিভিউ আবেদনই খারিজ করে আদালত৷ বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বেঞ্চটি রায় ঘোষণা করে৷ এ বেঞ্চের অপর সদস্যরা হলেন বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী৷
২০১০ সালে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার শুরুর পর, এ দু’টি তৃতীয় ও চতুর্থ মামলা, যার চূড়ান্ত রায় ঘোষণা হলো৷ স্বাভাবিকভাবেই সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমেও উঠে এসেছে এ খবর৷
ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগের মামলায় ২০১০ সালের ২৯শে জুন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদকে গ্রেপ্তার করা হয়৷ এরপর ঐ বছরের ২রা আগস্ট তাকে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তার দেখানো হয়৷
২০১০ সালের ২৬শে জুন হরতালের আগের রাতে রাজধানীর মগবাজার এলাকায় গাড়ি ভাঙচুর ও গাড়ি পোড়ানোর অভিযোগে বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী বা সাকা চৌধুরীর বিরুদ্ধে রমনা থানায় মামলা দায়ের করা হয়৷ একই মামলায় সে বছরের ১৬ই ডিসেম্বর বিজয় দিবসের আগে গ্রেপ্তার করা হয় তাকে৷ আর ১৯শে ডিসেম্বর একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয় সাকাকে৷
ট্রাইব্যুনালের রায়ে রায়ে সাকা চৌধুরীর বিরুদ্ধে আনা মানবতাবিরোধী অপরাধের মোট ২৩টি অভিযোগের মধ্যে ১৭টির পক্ষে সাক্ষী হাজির করে রাষ্ট্রপক্ষ৷ রায়ে এগুলোর মধ্যে মোট ৯টি অভিযোগে তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল৷ বাকি আটটি অভিযোগ থেকে অবশ্য তাকে খালাস দেয়া হয়৷ অন্যদিকে, মুজাহিদের বিরুদ্ধে প্রমাণিত অভিযোগগুলোর মধ্যে চারটিতে সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল৷
বন্ধ সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম
এদিকে আপিল বিভাগের রায়ের পর বাংলাদেশে নিরপত্তার কারণে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দেয়া হয়৷ বাংলাদেশ ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এম এ হাকিম ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘দুপুরে রায়ের পরপরই ফেসবুক, ভাইবার হোয়াটসঅ্যাপ, ট্যাঙ্গোসহ সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলো বন্ধ করে দেয়ার নির্দেশ আসে বিটিআরসি থেকে৷ এর কিছুক্ষণ পর ইন্টারনেট সেবাই পুরোপুরি বন্ধের নির্দেশ দেয় বিটিআরসি৷ তাই আমরা এরপর ইন্টারনেট সেবা বন্ধ শুরু করি৷’’
তিনি আরো জানান, ‘‘সরকার সাকা-মুজাহিদের রায়ের পর নিরপত্তাজনিত কারণে এই নির্দেশ দিয়েছে৷ এটা সাময়িক৷ তবে সরকার পরবর্তী নির্দেশ না তেয়া পর্যন্ত ইন্টারনেট সেবা বন্ধ থাকবে৷’’
টেলিযোগাযোগমন্ত্রী তারানা হালিম অবশ্য দুপুরের পর ডয়চে ভেলেকে জানান, কারিগরি ত্রুটির কারণে ১০ মিনিটের জন্য বাংলাদেশে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ ছিল৷ তাঁর কথায়, ‘‘একটি জটিলতার কারণে সাময়িকভাবে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল৷ আমরা এরইমধ্যে ইন্টারনেট সেবা চালুর নির্দেশ দিয়েছি৷ আশা করি তা চালু হয়ে গেছে৷ তবে দেশের মানুষের নিরাপত্তার জন্য পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত ফেসবুক, ভাইবার হোয়াটসঅ্যাপ, ম্যাসেঞ্জার, ট্যাঙ্গোসহ সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলো পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে৷’’
প্রসঙ্গত, আপিল বিভাগের এই রায়কে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার সারা দেশে হরতাল ডেকেছে জামায়াতে ইসলামী৷
নিরাপত্তার কারণে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলি বন্ধ করা কতটা গুরুত্বপূর্ণ? জানান নীচের মন্তব্যের ঘরে৷