সাফল্য থাকলেও স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় মানুষ খুশি নয়
১৮ অক্টোবর ২০১৬১৬ কোটি মানুষের দেশে কতজন চিকিৎসকের কাছে যেতে পারেন এবং স্বাস্থ্য সচেতনতা তাদের মধ্যে কেমন সেটাও জানা জরুরি৷ স্বাস্থ্য ব্যবস্থার একটি সূচক দেশের মানুষের গড় আয়ু৷ বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু বাড়ছে৷ এই গড় আয়ু এখন ৭০ বছর ছাড়িয়ে গেছে৷ ২০০৯ সালে একজনের গড় আয়ু ছিল ৬৭. ২ বছর৷ আর ২০১৩ সালে তা বেড়ে হয়েছে ৭০.১ বছর৷ গত এপ্রিলে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ‘মনিটরিং দ্য সিচুয়েশন অব ভাইটাল স্ট্যাটিসস্টিকস অব বাংলাদেশ' প্রকল্পের প্রাথমিক ফলাফলে এ তথ্য পাওয়া গেছে৷ তাতে বলা হয়েছে, নারীর গড় আয়ু ৭১.৪ বছর আর পুরুষের ৬৮.৮ বছর৷ বাংলাদেশের নারীরা পুরুষের তুলনায় গড়ে পৌনে তিন বছর বেশি বাঁচেন৷
জনসংখ্যাবিদ ও বিবিএস গড় আয়ু বাড়ার পিছনে যে কারণগুলোকে চিহ্নিত করেছেন তা হলো- শিশু ও মাতৃমৃত্যু হার হ্রাস, বাল্যবিবাহ প্রবণতা কমে যাওয়া, স্বাস্থ্য ও শিক্ষার সুযোগ বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন সামাজিক সূচকের অগ্রগতি৷ এখন মানুষ প্রাণঘাতী রোগের দ্রুত চিকিৎসাসেবা পাচ্ছেন৷ তাই এই প্রাণঘাতী রোগ মহামারি আকার ধারণ করতে পারছে না৷ বিবিএস বলছে, প্রতিবছরই গড় আয়ু বাড়ছে৷ একজন বাংলাদেশির গড় আয়ু ২০১০ সালে ৬৭.৭ বছর, ২০১১ সালে ৬৯ বছর ও ২০১২ সালে ৬৯.৪ বছর ছিল৷
এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার মানের ওপর সর্বশেষ যে র্যাংকিং প্রকাশ করেছে তাতে বাংলাদেশের অবস্থান ৮৮ তম৷ সার্কভুক্ত দেশগুলোর ভিতরে বাংলাদেশের উপরে কেবল রয়েছে শ্রীলঙ্কা৷ তাদের অবস্থান ৭৬ তম৷ ভারত ১১২ এবং পাকিস্তান রয়েছে ১২২তম অবস্থানে৷ ভুটান ১২৪, মালদ্বীপ ১৪৭, নেপাল ১৫০ এবং সব থেকে পিছনে রয়েছে আফগানিস্তান, ১৭৩ তম অবস্থানে৷ এই র্যাংকিং অনুযায়ী বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভারতের চেয়ে ভালো বলেই প্রতীয়মান হয়৷
বাংলাদেশ মা ও শিশুর মৃত্যুর হার কমিয়ে আনায় উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে৷ আর তার স্বীকৃতিও মিলেছে৷ বাংলাদেশ মা ও নবজাতকের টিটেনাস (এমএনটি) সংক্রমণ নির্মূলে সাফল্যের জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মর্যাদাপূর্ণ স্বীকৃতি অর্জন করেছে৷ গত মাসে এই স্বীকৃতি দেয়া হয়৷
মাত্র এক দশক আগেও দক্ষিন-পূর্ব এশিয়ার ছয়টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশে শিশু মৃত্যুর হার ছিল দ্বিতীয় সর্বোচ্চ৷ আর ১৯৯০ সালের তুলনায় ২০১৫ সালে মাতৃমৃত্যু হার শতকরা ৬৯ ভাগ কমেছে, যা এই ৬টি দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ অগ্রগতি৷ এই সময়ে পাঁচ বছরের কম বয়সি শিশুর মৃত্যু হার প্রতি হাজারে ৮৮ জন থেকে কমে ৩৮ জন হয়েছে আর নবজাতকের মৃত্যুর হার ৪২ থেকে কমে ২৩ হয়েছে৷
২০০৭ সালে যেখানে শতকরা ২৩ জন নবজাতকের জন্মের সময় প্রশিক্ষিত ধাত্রীর সহয়তা নিতেন, এখন তা হয়েছে শকরা ৪২ ভাগ৷ মাতৃমৃত্যু হার কমিয়ে আনার ক্ষেত্রেও বাংলাদেশের সাফল্য আছে৷ প্রতি এক লাখে ১৯৯০ সালে মাতৃমৃত্যু হার ছিল ৩৯৯ আর ২০১৫ সালে তা কমে দাড়িয়েছে ১৭৬ জনে৷ মাতৃমৃত্যু ১৯৯০ সালে প্রতি এক লাখে ছিল ৫৭৪ জন, ২০০৬ সালে তা হয়েছে ৩২০ জন৷
চিকিৎসা এবং অকাঠামো
স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় থেকে সর্বশেষ প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রতি ২,৮৯৪ জনের জন্য রেজিষ্টার্ড চিকিৎসক আছেন মাত্র একজন৷ আর সরকারি বেসরকারি মিলিয়ে ১,৬৯৮ জনের জন্য আছে একটি বেড৷ বাংলাদেশে মোট হাসপাতালের সংখ্যা সরকারি বেসরকারি মিলিয়ে ৩,৫৭৫টি৷ এরমধ্যে সরকারি হাসলপাতাল মাত্র ৫৯২ টি৷ সরকারি হাসপাতালের মধ্যে উপজেলা এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে হাসপাতাল আছে ৪৬৭টি আর ১২৫টি হাসপাতাল বিশেষায়িত এবং জেলা পর্যায়ে৷
আর এতে স্পষ্ট যে সরকারি স্বাস্থ্য সেবার চেয়ে বেসরকারি পর্যায়ে স্বাস্থ্য সেবার অবকাঠামো বেশি৷ এবং বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা ব্যয়বহুল ও সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে৷ বেসরকারি খাতে ৫,২২০টি ডয়াগনস্টিক সেন্টার আছে৷ এর একাংশ আবার অনুমোদন ছাড়াই হাসপাতালের কার্যক্রমও পরিচালনা করে৷ তাদের সেবার মান নিয়ে আছে বিস্তর অভিযোগ৷ অভিযোগ রয়েছে সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকরা সেখানে ঠিকমতো সেবা না দিয়ে বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে প্রাইভেট প্র্যাকটিসে বেশি আগ্রহী৷
বাংলাদেশে এখন ডেন্টাল সার্জন বাদে মোট নিবন্ধিত চিকিৎসকের সংখ্যা ৬৫ হাজার ৭৭৬ জন৷ আর হাসপাতালে সরকারি বেসরকারি মিলিয়ে বেডের সংখ্যা ৯২,৮০৪ টি৷ বাংলাদেশে ইউনিয়ন পর্যায়ে ১৩ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক আছে৷ সেখানে কাজ করেন ১৩ হাজার ২৪০ জন কমিউিনিটি স্বাস্খ্যকর্মী৷ এসব ক্লিনিক প্রধানত মা ও শিশুদের সেবায় নিয়েজিত৷ শিশুদের প্রয়োজনীয় টিকা সরকারি উদ্যোগেই দেয়া হয়৷
টিকা দেয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদশের সাফল্য ঈর্ষনীয়৷ এ ক্ষেত্রে সাফল্য প্রায় শতভাগ৷ বাংলাদেশের স্বাস্থ্য সেবার আরেকটি দিক হলো, এখন প্রায় ৯৭ ভাগ পরিবার নলকুপ বা টেপের পানি পান করেন৷ আর ৬৩ ভাগ পরিবার স্যানিটারি ল্যাট্রিন ব্যবহার করে৷
যেখানে সব সাফল্য ম্লান হয়ে যায়:
স্বাস্থ্য খাতের বিভিন্ন পর্যায়ে দুর্নীতির চিত্র নিয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) ২০১৪ সালে এক রিপোর্ট প্রকাশ করে৷ তাতে সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসা সেবার চিত্র তুলে ধরা হয়৷ প্রতিবেদনে বলা হয়, হাসপাতালগুলোতে চাহিদার তুলনায় শয্যার স্বল্প৷ অধিকাংশ ক্ষেত্রে নারী ও পুরুষের জন্য পৃথক টিকিট কাউন্টার এবং নারী রোগীর জন্য বহির্বিভাগে পৃথক বসার ব্যবস্থা নেই৷
জেলা সদর হাসপাতালে সিসিইউ, আইসিইউ, সিটি স্ক্যান যন্ত্র এবং লিফট নেই৷ নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থা নেই৷ উপজেলা পর্যায়ে এ সমস্যাটি আরও প্রকট৷ জেনারেটর থাকলেও তা চালানোর জন্য জ্বালানি তেলের বরাদ্দ পর্যাপ্ত নেই৷ হাসপাতালে মজুদ ওষুধের তালিকা কোনো কোনো ক্ষেত্রে যেমন টানানো হয় না, তেমনি নিয়মিত তা হালনাগাদও করা হয় না৷
অধিকাংশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এক্স-রে যন্ত্র সচল থাকে না৷ এছাড়াও আলট্রাসনোগ্রাম, এক্স-রে ফিল্ম ও ইসিজি যন্ত্রের অভাব রয়েছে৷ জেলা সদর হাসপাতালগুলোতে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জাম, বিশেষ করে ডিজিটাল এক্স-রে, ইকো-কার্ডিয়াক, মাইক্রোস্কোপ প্রভৃতির অভাব রয়েছে৷ হাসপাতালগুলোতে অ্যাম্বুলেন্সও কম৷ অনুমোদিত অ্যাম্বুলেন্সের সবগুলো আবার সচল নয়৷
দুর্নীতি, অনিয়ম:
টিআইবি'র প্রতিবেদনে বলা হয়,স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন প্রতিষ্ঠানগুলোতে নিয়োগ, বদলি ও পদোন্নতিতে ১০ হাজার থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত উৎকোচ দিতে হয়৷ সরকারি প্রতিষ্ঠানের চিকিৎসকদের সঙ্গে রোগনির্ণয় কেন্দ্র ও দালালদের কমিশন ভাগাভাগির সম্পর্ক রয়েছে৷
অ্যাডহক চিকিৎসক নিয়োগে ৩ থেকে ৫ লাখ টাকা এবং তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী নিয়োগে ১ থেকে ৫ লাখ টাকা ঘুষ নেয়ার অভিযোগ রয়েছে বলে জানায় টিআইবি৷
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, হাসপাতালে রোগীর পথ্যের সরবরাহকারী বাছাইয়ে দলীয় রাজনৈতিক প্রভাব রয়েছে৷ এতে সব ঠিকাদারের দরপত্রে অংশ নেয়ার সুযোগ থাকে না৷ ঠিকাদার দরপত্র কমিটির সদস্যদের সঙ্গে কোনো কোনো ক্ষেত্রে সমঝোতা আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে কাজ আদায় করে৷ দরপত্রে উল্লিখিত খাদ্যসহ নানা দ্রব্য সঠিকভাবে সরবরাহ করা হয় না৷
চিকিৎসকদের সঙ্গে ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কমিশনভিত্তিক চুক্তি থাকে৷ এ কমিশনের হার নির্ভর করে কোনো ডাক্তার কত রোগী পাঠায়, তার ওপর৷ এ কমিশনের হার ৩০ থেকে ৫০ ভাগ পর্যন্ত হয়৷ একইভাবে দালালদের কমিশন ১০ থেকে ৩০ ভাগ পর্যন্ত হয়ে থাকে৷
সরকারি চিকিৎসকরা বেসরকারি ক্লিনিক হাসপাতালেই সময় দেন বেশি৷ রোগীদের সেখানেই যেতে বলেন৷ বেসরকারি হাসপাতালে অনেক ক্ষেত্রে প্যাথোলজিস্ট না রেখে তাদের সিল ব্যবহার করে বিভিন্ন পরীক্ষার প্রতিবেদন তৈরি করে রোগীদের রিপোর্ট দেয়া হয়৷ আর সেখানে কোন পরীক্ষার কত খরচ তার কোনো নিয়মনীতি নেই৷ চিৎিসকরাও মোটা অংকের ফি আদায় করেন৷
বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা ব্যয় অনেক চড়া হলেও মান দেখার যেন কেউ নেই৷
স্বাস্থ্য খাতে বাজেট বাড়ছে কিন্তু পর্যাপ্ত নয়
স্বাস্থ্য খাতে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বরাদ্দ বেড়েছে৷ এই খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১৭ হাজার ৪শ' ৮৭ কোটি টাকা৷ গত বছরের তুলনায় প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা বেশি৷ যা মোট বাজেটের ৫.৬ শতাংশ, গত অর্থ বছরের তুলনায় ১.৩ শতাংশ বেশি৷ স্বাস্থ্য খাতে গত ২০১৫-১৬ অর্থবছরে বরাদ্দ ছিল মোট ১২ হাজার ৭২৬ কোটি টাকা, যা মোট বাজেটের ৪.৩ শতাংশ৷ আর ২০১৪-১৫ অর্থবছরে সার্বিক উন্নয়ন ও অনুন্নয়ন মিলিয়ে এ খাতের জন্য ১১ হাজার ১৪৬ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছিল, যা মোট বাজেটের ৪.৪৫ শতাংশ ছিল৷ এর আগে ২০১২-২০১৩ অর্থবছরে স্বাস্থ্য খাতে মোট বাজেটের ৪.৮৬ শতাংশ বরাদ্দ ছিল৷
যা জানালেন একজন চিকিৎসক
স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ হাসাপাতালের অধ্যাপক এবং নাক, কান ও গলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. মনি লাল আইচ লিটু ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘বাস্তব অবস্থা হচ্ছে, ১৬ কোটি মানুষের দেশে এখনো চিকিৎসা ব্যবস্থা ও স্বাস্থ্য সেবা অপ্রতুল৷ এখানে যেমন চিকিৎসক এবং হাসপতালের বেড প্রয়োজনের তুললায় অনেক কম, তেমনি রোগ নির্নয়ের জন্য পর্যাপ্ত আধুনিক যন্ত্রপাতিও নেই৷ ফলে সরকারি হাসপাতালগুলো চাইলেও রোগীদের ঠিকমতো চিকিৎসা দিতে পারেনা৷ প্রতিদিন চিকিৎসা নিতে সরকারি হাসপাতালে লম্বা লাইন হয়৷''
তিনি বলেন, ‘‘এটা সত্য যে এর বিপরীতে বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা সেবার অনেক দাম৷ সবার পক্ষে তাই সেই সেবা নেয়া সম্ভব হয়না৷''
চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগের কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘‘কমিশন খাওয়া, ক্লিনিকে রোগী ভাগিয়ে নেয়া দণ্ডনীয় অপরাধ৷ এসব যারা করেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার বিধান আইনে আছে৷''
অধ্যাপক মনিলাল আইচ লিটুর প্রস্তাব, ‘‘সমস্যা সমাধানে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসকদের ডাবল শিফট চালু করা যেতে পারে৷ তাতে কর্মঘন্টা বেড়ে যাবে এবং বেশি মানুষ চিকিৎসা সেবা পাবে৷''
তিনি জানান, ‘‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে এটা চালু হয়েছে এবং সুফল পাওয়া যাচ্ছে৷ এজন্য অবশ্য সরকারে খবরচ বাড়বে৷ তবে গ্রহণযোগ্য ফি'র বিনিময়েও দ্বিতীয় শিফট চালু করা যায়৷''
মনিলাল আইচ লিটু দাবি করেন, ‘‘সরকারি হাসপাতালগুলোতে নানা অনিয়ম এবং অব্যবস্থা থাকলেও এখন ওষুধ সরবরাহের বিষয়টি বেশ ভালো অবস্থায় রয়েছে৷ সরকারি হাসপাতাল থেকে এখন ১৫০ ধরণের ওষুধ দেয়া হয় বিনামূল্যে৷''
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক যা বললেন
স্বাস্থ্য অথিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ ডয়চে ভেলেকে বলেন ‘‘পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে৷ ৩৩তম বিসিএসে আমরা ছয় হাজার ডাক্তার নিয়োগ দিয়েছি৷ তাদের উপজেলা পর্যায়ে পোস্টিং দিয়েছি৷ তারা কিন্তু দু'বছর ধরে উপজেলা পর্যায়ে আছেন৷ কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে আমরা সাধারণ মানুষের কাছে স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে গেছি৷ এখন ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে প্রতিদিন হাসপাতালগুলোর সার্বিক অবস্থা মনিটর ও বিশ্লেষণ করা হচ্ছে৷ এরপরও অব্যবস্থাপনা যে নেই তা নয়, তবে ২০৩০ সালের মধ্যে স্বাস্থ্যসেবা খাতে আমরা টেকসই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কাজ করছি৷''
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘বেসরকারি স্বাস্থ্য সেবা নিয়ে অভিযোগ আছে এবং সে অভিযোগ কিছুটা সত্যও৷ আমরা অবৈধ ক্লিনিক হাসপাতালের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান চালাই৷''
বেসরকারি হাসপাতাল বা ক্লিনিকে চিকিৎসার খরচ অনেক বেশি- এটা স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘‘আমরা স্বাস্থ্যবিমা চালু করছি৷ ধনী লোকরা নিজেরাই প্রিমিয়ামের টাকা দেবেন, গরিব মানুষের প্রিমিয়াম দেবে সরকার৷ এটা ২০৩০ সালের আগেই হবে৷ তখন সরকারি আর বেসরকারি চিকিৎসা ব্যবস্থার ভেদ দূর হবে৷ তাছাড়া মানুষ স্বাস্থ্য সচেতন হচ্ছে, তাই এই সেবার প্রতি তাদের আগ্রহ এবং চাপ বাড়ছে৷ এটাও একটা অগ্রগতি৷''
আপনার কি কিছু বলার আছে? লিখুন নীচের মন্তব্যের ঘরে৷