বিএনপি এখনো তত্ত্বাবধায়ক চায়
১৬ জুন ২০১৩বাংলাদেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের পাল্টাপাল্টি এই অবস্থানের মধ্যেই চার সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের জন্য তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন৷ এরপর থেকেই সরকার বিরোধী আন্দোলন অনেকটাই থমকে যায়৷ আওয়ামী লীগ, বিএনপি উভয় দলই এই নির্বাচনকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নেয়৷ যদিও সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন স্থানীয় সরকার নির্বাচন হলেও প্রধান দুই দলের কেন্দ্রীয় নেতারা এই চারটি সিটি কর্পোরেশনে গিয়ে প্রচারণায় অংশ নেন৷ দুই দলই নির্বাচনকে প্রেস্টিজ ইস্যু হিসেবে নেয়৷
শনিবার অনুষ্ঠিত হয়ে গেল রাজশাহী, সিলেট, খুলনা ও বরিশালের সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন৷ এই নির্বাচনে কে হারল আর কে জিতল তার চেয়ে সুষ্ঠুভাবে এই নির্বাচন সম্পন্ন করাকে বড় জয় হিসেবে দেখছে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকার৷ সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন শেষ হওয়ার পরই আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে যে সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে তা এই নির্বাচনের মাধ্যমে আবারও প্রমাণ হয়ে গেল৷ তাই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনও আওয়ামী লীগের অধীনেই হবে৷ প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ ভোটের নামে বোমাবাজি, হামলা, গ্রেফতার এসবে বিশ্বাস করে না৷ অন্যদিকে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী শনিবার সন্ধ্যায় ডয়চে ভেলেকে বলেন, স্থানীয় সরকারের নির্বাচন আর জাতীয় নির্বাচন এক বিষয় নয়৷ তারপরও এই সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে সরকারি দল ও প্রশাসনের ব্যাপক প্রভাব ছিল৷ নেতাকর্মীদের হয়রানি করার অভিযোগও করেন তিনি৷
চার সিটির নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হওয়ার পর আওয়ামী লীগের যুগ্ম মহাসচিব মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, সরকার কিন্তু কোনোভাবেই নিজেদের প্রার্থীকে জয়ী করার ব্যাপারে চেষ্টা করেনি৷ বরং জনগণের ভোটের প্রতিফলন ফলাফলের মাধ্যমে হয়েছে৷ তিনি বলেন, প্রশাসন নিরপেক্ষভাবে কাজ করেছে৷ কোনো দলের প্রার্থী ভোট কারচুপি বা পোলিং এজেন্টদের বের করে দেয়ার অভিযোগ করতে পারেনি৷ শুধুমাত্র রাজনৈতিক কারণে বিএনপি কিছু অভিযোগ তুলেছে৷ তিনি বলেন, অযথা মানুষকে বিভ্রান্ত করতেই তারা এই ধরনের অভিযোগ তুলেছে৷ ভালো নির্বাচন হয়েছে এটা স্বীকার করতে বিএনপির প্রতি আহবান জানান তিনি৷
হানিফের এসব বক্তব্যের ব্যাপারে রুহুল কবির রিজভী বলেন, সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে প্রশানের উপর সরকারের প্রভাবের বিষয়টি পরিষ্কারভাবে ফুটে উঠেছে৷ তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া কোনো ভাবেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে না৷ বিএনপি এই নির্বাচন হতেও দেবে না৷ তিনি বলেন, সরকার যদি জনগণের মঙ্গল চায় তাহলে তাদের তত্ত্বাবধায়ক সরকার দিয়ে জনগণের রায় পরীক্ষা করার অনুরোধ করেন৷ তিনি বলেন, এই চারটি সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিএনপির বহু নেতাকর্মীকে হয়রানির মধ্যে পড়তে হয়েছে৷ অনেককে বিভিন্ন মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে৷ পালিয়ে আছেন বহু নেতাকর্মী৷ তিনি শেষবারের মতো সরকারকে অনুরোধ করেন, শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন চাইলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহাল করতে হবে৷ এটা ছাড়া কোনোভাবেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে না৷