সুন্দরবনের দ্বীপটি হারিয়ে যেতে পারে
কলকাতা থেকে প্রায় দেড়শ’ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত ছোট্ট দ্বীপ ঘোড়ামারা৷ সাগরের পানি বাড়ায় দ্বীপটি ক্রমেই আরো ছোট হয়ে যাচ্ছে৷
ছোট্ট দ্বীপ
আয়তন ৪ দশমিক ৬ বর্গকিলোমিটার৷ তবে গত ২০ বছরে দ্বীপের আয়তন কমে প্রায় অর্ধেক হয়ে গেছে৷ দ্বীপের বর্তমান জনসংখ্যা ৪,৮০০ জন৷ অথচ বছর দশেক আগেও সংখ্যাটি ছিল প্রায় সাত হাজার৷
সাগরের পানি বাড়ছে
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সাগরের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সুন্দরবনের অনেক দ্বীপ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে৷ কয়েকটি দ্বীপ নিশ্চিহ্ন হওয়ার পথে রয়েছে৷ ঘোড়ামারা তার মধ্যে একটি৷
জীবিকা ধ্বংস
বন্যার পানিতে ঘরবাড়ি ভাঙার পাশাপাশি দ্বীপবাসীদের আয়ের অন্যতম উপায় পান চাষও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে৷ তাই পানচাষী মিহির কুমার মন্ডল বলেন, ‘‘প্রতিবছর সাগরের লবণাক্ত পানি আমার খামারে ঢুকে পড়ে চাষের ক্ষতি করে৷’’
চলে যেতে যান
ছবিতে শেখ আফতাব উদ্দীন ও তাঁর স্ত্রী মমতা বিবিকে তাঁদের নতুন বাড়ির সামনে দেখতে পাচ্ছেন৷ আগের বাড়িটি বন্যার পানিতে ভেঙে যাওয়ায় এই বাড়িটি তৈরি করতে হয়৷ তবে সরকার নিরাপদ জায়গায় আশ্রয়ের ব্যবস্থা করলে সেখানে চলে যেতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন আফতাব উদ্দীন৷
সাড়া মেলেনি
গ্রামের একজন বয়স্ক ব্যক্তি সঞ্জীব সাগর জানান, সরকার যদি নিরাপদ জায়গায় বিনামূল্যে জমির ব্যবস্থা করে তাহলে অর্ধেক জনগণই দ্বীপ ছেড়ে যেতে আগ্রহী৷ তবে তাঁদের সরিয়ে নিয়ে যেতে এবং ক্ষতিপূরণ দেয়ার আবেদনে এখনো কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি বলে জানান তিনি৷
মন্তব্য করতে চাননি
পশ্চিমবঙ্গ সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের দুই কর্মকর্তা ঘোড়ামারার বাসিন্দাদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কোনো পরিকল্পনা আছে কিনা, সে ব্যাপারে মন্তব্য করতে রাজি হননি৷ ছবিতে দ্বীপের জেলেদের জালে ধরা পড়া ইলিশ দেখতে পাচ্ছেন৷
একদিন না একদিন সরাতে হবেই
জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দ্বীপের সব জনগণকে একদিন সেখান থেকে সরিয়ে নিতেই হবে৷ ‘‘তাঁদের অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার একটা পরিকল্পনা থাকতে হবে৷ স্পষ্ট করে বললে সরকারকে একটা পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে,’’ বলেন নতুন দিল্লির জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক গবেষক সুরুচি ভাড়ওয়াল৷