সুন্দরী গাছের বন, তাই সুন্দরবন?
১৭ মে ২০১৪বঙ্গোপসাগরের ঢেউ অতটা জোরালো না হতে পারে, কিন্তু ঘূর্ণিঝড়? তার হাত থেকে কে বাঁচাবে বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ অরণ্য সুন্দরবনকে?
বলা বাহুল্য, সুন্দরবন হলো বিশ্বের বৃহত্তম টাইডাল হ্যালোফাইটিক ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট, সব মিলিয়ে ২৪ হাজার বর্গকিলোমিটার৷ এখানকার মূল ম্যানগ্রোভ প্রজাতি হলো সুঁদরি বা সুন্দরী গাছ, হেরিটিয়েরা ফর্মেস৷ সুন্দরবন আবার ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট৷ সেই ইউনেস্কোই বলছে, এ শতাব্দীর শেষ অবধি সাগরের পানি যদি ৪৫ সেন্টিমিটার বাড়ে, তাছাড়া অন্যান্য পন্থায় পরিবেশের হানি হয়, তাহলে সুন্দরবনের ৭৫ শতাংশ ম্যানগ্রোভ ধ্বংস হয়ে যেতে পারে৷ ইতিমধ্যেই তো লোহাচরা দ্বীপ আর দক্ষিণ তালপট্টি দ্বীপ পুরোপুরি সাগরের পানিতে ডুবে গেছে, ঘোড়ামারা দ্বীপও অর্ধেক ডোবা৷
ম্যানগ্রোভ অরণ্যকে সাগর আর উপকূলের মধ্যে এক ধরনের ‘বাফার' বলে ভাবা যেতে পারে৷ তাদের শিকড়গুলো তীররেখাকে ধরে রাখে, বেঁধে রাখে; মাটির ক্ষয় রোধ করে৷ অবশ্য সুন্দরবন অঞ্চলে ঢেউয়ের আঘাত সামলানোর ব্যাপারটা নেই৷ বলতে কি, অধিকাংশ ম্যানগ্রোভ গজায় কমশক্তির ঢেউয়ের এলাকায়৷ অন্যদিকে ম্যানগ্রোভ পলি পড়ার হার বাড়াতে পারে; ম্যানগ্রোভের শিকড়ে নানা ধরনের ভারী ধাতুর কণিকা জমা হয়, অর্থাৎ নিষ্কাশনের কাজ করে৷ সাগরের বান কিংবা সুনামি এলে বহু শিকড় বিশিষ্ট ম্যানগ্রোভ গাছগুলির সে আঘাত সহ্য করার ক্ষমতা অসামান্য৷ এছাড়া ম্যানগ্রোভের শিকড়ে নানা ধরনের স্পঞ্জ, শ্যাওলা, কাঁকড়া, চিংড়ি ইত্যাদি শান্তিতে বাড়তে পারে৷ আর ম্যানগ্রোভ তো সর্বত্রই মাছেদের নার্সারি বলে পরিচিত৷