সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে একজোট মিয়ানমারের আদিবাসী সশস্ত্র গোষ্ঠী
মিয়ানমারের আদিবাসী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো একজোট হয়ে লড়াই শুরু করছে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে৷ দেশটিতে সরকারবিরোধী বিক্ষোভে ৫শ’রও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে৷ বিস্তারিত ছবিঘরে৷
চুক্তি ভঙ্গ
রেস্টোরেশন কাউন্সিল অফ শান স্টেট আরসিএসএস এবং কেএনইউ এর নেতারা জানিয়েছেন, সামরিক জান্তার তাদের সাথে অস্ত্রবিরতির চুক্তি ভেঙে তাদের এলাকায় হামলা শুরু করেছে৷ আদিবাসী সশস্ত্র গোষ্ঠীদের একজোট হয়ে লড়াইয়ের আহ্বান জানিয়েছেন তারা৷
মতবিরোধ
আদিবাসী নেতারা এটাও বলছেন ৭০ বছর ধরে এই দলগুলো কোন একটি বিষয়ে একমত হতে পারে না৷ আর এ কারণেই প্রত্যেকে আলাদাভাবে যুদ্ধ করে যাচ্ছে৷
পালাচ্ছে কারেন রাজ্যের মানুষ
২৮ মার্চে তোলা এই ছবিটিতে দেখা যাচ্ছে আদিবাসীদের রাজ্য কারেনের মানুষরা একটি স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন৷ স্থানটি কোথায় তাদের নিরাপত্তার কারণে তা জানানো হয়নি৷
মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিমান হামলা
মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বিমান হামলা থেকে বাঁচতে কারেন রাজ্যের একটি স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন কারেন জাতিগোষ্ঠীর অনেক মানুষ৷ ফেসবুক থেকে ছবিটি সংগ্রহ করেছে রয়টার্স৷
সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই
মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে একজোট হচ্ছে আদিবাসী শসস্ত্র গোষ্ঠীগুলো৷ এর মধ্যে অন্যতম কারেন্নি ন্যাশনাল পোগ্রেসিভ পার্টি৷ এর জাতিগোষ্ঠীর যোদ্ধারা থাই সীমান্তে একজোট হয়ে সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করেছে৷ বেশ কয়েক বছর ধরে তারা জান্তার বিরুদ্ধে লড়াই করছে থাইল্যান্ডের পূর্বাঞ্চলের জঙ্গলে থেকে৷
থাইল্যান্ড সীমান্তে শরণার্থীদের ভিড়
কারেন গোষ্ঠীর মানুষ থাইল্যান্ডের মাই হং সোন নদীর সীমান্তে জড়ো হয়েছেন, নিজেদের শেষ সম্বলটুকু নিয়ে থাইল্যান্ডে আশ্রয় নিচ্ছেন তারা৷
থাইল্যান্ডের গ্রামে আহতরা
থাইল্যান্ড-মিয়ানমার সীমান্তের থাই প্রদেশ মাই হং সোন এর মাই সাম লিপ গ্রামে চিকিৎসা নিচ্ছেন মিয়ানমারের সহিংসতায় আহত মানুষ৷
কারেন ন্যাশনাল পার্টি
মিয়ানমারের আদিবাসী গোষ্ঠীর অন্যতম শক্তিশালী একটি দল হল কারেন ন্যাশনাল ইউনিয়ন কেএনইউ৷ দক্ষিণপূর্বাঞ্চলের কারেন রাজ্যের এই দলটি জানিয়েছে মিয়ানমারের বিক্ষোভকারীদের রক্ষায় তাদের যোদ্ধাদের রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় পাঠানো হয়েছে৷
জান্তার ঘাঁটিতে হামলা
সামরিক জান্তার বিভিন্ন ঘাঁটিতে তাদের সেনারা হামলা চালিয়েছে বলে জানিয়েছেন দলটির এক জ্যেষ্ঠ নেতা৷ উত্তরে একই ধরনের হামলা চালিয়েছে কোচিন ইনডেপেন্ডেন্স পার্টি৷
গেরিলা দলগুলোর হামলা
৩১ মার্চ আরাকার আর্মিসহ তিনটি অন্য গেরিলাদল পশ্চিমাঞ্চলের রাখাইন রাজ্যে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে৷ তাদের আন্দোলনকে ‘বসন্ত বিপ্লব’ আখ্যা দিয়ে হুঁশিয়ার করেছে সামরিকবাহিনী হত্যা বন্ধ না করলে তারা সরাসরি যুদ্ধ শুরু করবে৷
জাতীয় ঐক্যমতের সরকার
সু চি’র দলের পার্লামেন্ট সদস্য, যারা আত্মগোপনে আছেন তারা পহেলা এপ্রিল জাতীয় ঐক্যমতের সরকার গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন৷ সেখানে আদিবাসী গোষ্ঠীর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকবে বলে জানিয়েছেন তারা৷ অনলাইনে তারা এইসব জাতিগোষ্ঠীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, যাতে তারা সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে৷
কেন্দ্রীয় সেনাবাহিনী গঠন
বেসামরিক সরকারের আন্তর্জাতিক মুখপাত্র ড. সাসা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, অন্তর্বর্তীকালীন কেন্দ্রীয় সংবিধানের খসড়া প্রস্তুত, যেখানে নৃগোষ্ঠী এবং বেসামরিক নেতারা মিলে একটি কেন্দ্রীয় সেনাবাহিনী গড়ে তোলার পরিকল্পনা করছেন, যে সেনাবাহিনী বর্তমান সামরিক জান্তার বিকল্প হবে, একে তারা নাম দিয়েছেন ‘তাতমাদো’৷ তাদের মতে, এ ধরনের কেন্দ্রীয় সেনাবাহিনীই পারবে গণতন্ত্র ও স্বাধীনতা পুনরুদ্ধার করতে৷
সেনা সংখ্যা
ব্রিটিশ নিরাপত্তা বিশ্লেষক অ্যান্টনি ডেভিস জানিয়েছেন, মিয়ানমারে আদিবাসীদের মধ্যে সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্য সংখ্যা প্রায় ৭৫ হাজার৷ অন্যদিকে, মিয়ানমার সেনাবাহিনীতে সদস্য প্রায় সাড়ে তিন লাখ৷
নিহত পাঁচশর বেশি মানুষ
মিয়ানমারে জান্তাবিরোধী বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে সংঘাতে নিহতের সংখ্যা এরইমধ্যে ৫০০ ছাড়িয়েছে৷