স্কুলে হিজাব পরা, না পরা নিয়ে দ্বন্দ্ব আজারবাইজানে
২৬ জানুয়ারি ২০১১নারদারান৷ কাস্পিয়ান সাগরের কোলে আজারবাইজানের একটি গ্রাম৷ দারিদ্র্যের কষাঘাতে জর্জরিত৷ কিন্তু ইসলামিক ভাবধারায় পরিচালিত৷ রাস্তার দু'পাশে পোস্টারের দিকে তাকালে দেখা যায়, পবিত্র কোরানের বাণী৷ আর স্থানীয় দোকানগুলোতে পাওয়া যায় না কোনো ধরণের সুরা৷
গত মাসে নারদারানে মসজিদের বাইরে বিক্ষোভ করে সাধারণ মানুষ৷ তাঁরা শিক্ষামন্ত্রী'র একটি ছবিতে আগুন ধরিয়ে দেয়৷ এবং সমস্বরে বলতে থাকে ‘‘হিজাব বাদ দেওয়ার চেয়ে বরং আমাদের মৃত্যুই ভালো৷''
বিদ্যালয়ের পোশাক কেমন হওয়া উচিত তা নির্ধারণ করতে গত বছর নতুন নিয়ম জারি করা হয় আজারবাইজানে৷ যেখানে ছাত্রীদের মাথায় স্কার্ফ পরা নিষিদ্ধ করা হয়৷ আর তারপর থেকেই শুরু হয় বিতর্ক৷
শিক্ষামন্ত্রী মিসির মার্দানভ গতমাসে বলেছেন, ‘‘আজারবাইজান ধর্মনিরপেক্ষ একটি দেশ৷ আর শিক্ষা আইনের মাধ্যমে এই বিষয়টি নির্ধারণ করা হয়েছে৷'' তারপরও অনেক বাবা-মা ক্ষিপ্ত হয়ে যান৷
হিকমত আলী নামে একজন গ্রামবাসী ঘোষণা দেন, ‘‘হিজাব নিষিদ্ধ করার মধ্য দিয়ে ধর্মীয় অধিকার লঙ্ঘনের আইনগত স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে৷''
স্থানীয় মসজিদের ইমাম আদালত আলী বলেন, ধর্মীয় অনুভূতিতে সরকারের হস্তক্ষেপের চেষ্টা এখানকার ধর্মবিশ্বাসী মানুষদের দ্বন্দ্বে লিপ্ত হতে বাধ্য করছে৷ তিনি বলেন, আমি ধর্মনিরপেক্ষ কোনো ব্যক্তি হতে চাই না৷ আমি ধর্মপ্রাণ একজন মানুষ৷ এই ইমাম আরও বলেন, হ্যাঁ, আমি আজারবাইজানের আইনগুলো পর্যবেক্ষণ করে দেখবো৷ তবে কোনো আইন যখন ধর্মীয় আইনের সঙ্গে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করবে তখন আমি ধর্মীয় আইনকেই বেশি গুরুত্ব দেবো৷
অন্যদিকে রাজধানীর একজন অভিভাবক গুলনারা আখমেডোভা বলেন, যদিও তিনি একজন ধার্মিক মানুষ, কিন্তু তিনি এটাও বিশ্বাস করেন, স্কুলের মেয়েরা হিজাব পরবে কি পরবে না সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার মতো যথেষ্ট বড় নিশ্চয়ই তারা হয়েছে৷ তিনি বলেন, একজন নারী হিজাব পরবেন কি না সেই সিদ্ধান্তটি তাঁর নিজেরই নেওয়া উচিত৷ কিন্তু দেখা যায়, বাচ্চা মেয়েদের হিজাব পরতে প্রায়ই জোর করা হয়৷ প্রকৃতপক্ষে যারা হিজাব পরার কোনো মানেই বোঝে না৷
প্রতিবেদন: জান্নাতুল ফেরদৌস
সম্পাদনা: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী