সালতামামি: ইকোলাই, যক্ষা আর জবসের ভুল!
২৭ ডিসেম্বর ২০১১ইকোলাই
মে-জুন মাসে ‘ইকোলাই' নামের একটি ব্যাক্টিরিয়া বিশ্বের গণমাধ্যমের শিরোনাম হয়েছিল৷ কেননা এর কারণে ইউরোপে, বিশেষ করে জার্মানিতে, অনেকের মৃত্যু হয়৷ এছাড়া, কোথা থেকে এর উৎপত্তি - তাই নিয়ে বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে জার্মানি ও স্পেন৷ ফলে দুদেশের সম্পর্ক খারাপ হবার উপক্রম হয়৷ জার্মানির হামবুর্গে প্রথম ইকোলাই'এর উপদ্রব ধরা পড়ে৷ তখন মনে করা হয়েছিল স্পেন থেকে আসা শসা এবং লেটুসপাতাতে ইকোলাই রয়েছে৷ ফলে আমদানি করা সব্জি নষ্ট করে ফেলা সহ আমদানিও বন্ধ করে দেয়া হয়৷ তার ফলে, আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হয় স্প্যানিশ কৃষকদের৷ কিন্তু পরে দেখা যায়, জার্মান কর্তৃপক্ষের ঐ ধারণা সত্যি ছিলনা৷ অবশেষে জানা যায়, সব্জির অঙ্কুর তথা স্প্রাউটস থেকে ছড়িয়েছে ইকোলাই৷
যক্ষা নির্ণয়ে ই-নোজ
এবার ভারতীয় বিজ্ঞানীদের সাফল্যের খবর৷ শোনা যাচ্ছে, তাঁরা নাকি খুব শীঘ্রই একটি ‘ইলেক্ট্রোনিক নোজ' বা ‘ই-নোজ' তৈরিতে সক্ষম হবেন৷ যার কাজ হবে, নিশ্বাস থেকে যক্ষ্মার লক্ষণ দেখে রোগনির্ণয় করা৷ ফলে যক্ষা ছড়িয়ে পড়ার অনেক আগেই তাকে শনাক্ত করা সম্ভব হবে৷ ২০১৩ সালের মধ্যে ই-নোজ তৈরির আশা করছেন বিজ্ঞানীরা৷ উল্লেখ্য, প্রতিবছর বিশ্বের প্রায় চার লক্ষ মানুষ যক্ষা রোগে মারা যায়৷ উপমহাদেশের মানুষই যক্ষা রোগে আক্রান্ত হয় বেশি৷
ডেঙ্গুর ভ্যাকসিন
বাংলাদেশ সহ অনেক দেশেই এই জ্বর বেশ আলোচিত৷ প্রতি বছর সারা বিশ্বের প্রায় ২৫ হাজার মানুষ এই জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়৷ থাইল্যান্ডের একদল বিজ্ঞানী বলছেন তাঁরা ডেঙ্গু প্রতিরোধের জন্য একটি ভ্যাকসিন আবিষ্কার করেছেন যার নাম ‘শিমেরিক লাইভ অ্যাটেনুয়েটেড ভ্যাকসিন'৷ এই ভ্যাকসিনটিই ডেঙ্গু জ্বরের চার ধরণের ভাইরাস প্রতিরোধ করতে সক্ষম হবে বলে জানানো হয়েছে৷
ওজন কমানো
কীভাবে সেটা সম্ভব, তা নিয়ে চিন্তিত বিশ্বের প্রায় প্রতিটি মানুষ৷ এজন্য অনেকে ওষুধ খেয়ে থাকেন৷ হয়তো লাভও হয় তাতে৷ এমনই এক নতুন ওষুধের খবর দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা, যার নাম ‘নেক্সা'৷ জানা গেছে, এর মাধ্যমে এক বছরে প্রায় ১০ শতাংশ ওজন কমানো সম্ভব৷ অবশ্য ওষুধটি এখনো যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদন পায়নি৷
ক্যান্সার
স্তন ও প্রোস্টেট ক্যান্সারে প্রতি বছর বিশ্বের অনেক রোগী মারা যান৷ তাই এই ক্যান্সার নিয়ে মানুষের মনে রয়েছে ভয়৷ ফলে যারা এই রোগে ভুগছেন তারা মাঝে মধ্যেই চিকিৎসকের কাছে যান৷ ক্যান্সার কোন পর্যায়ে রয়েছে সেটা তারা জানতে চান৷ কিন্তু সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা বলেছেন, এভাবে কয়েকদিন পরপর পরীক্ষা করানো ঠিক নয়৷ এতে ভালর চেয়ে নাকি খারাপই হয় বেশি৷ তবে অন্য বিজ্ঞানীরা এই যুক্তি সম্পর্কে এখনো সন্দিহান৷ ফলে আসলে কোনটা যে ঠিক সেটা নিয়ে এখন চলছে গবেষণা৷ ২০১২ সালে হয়তো এর একটা সমাধান পাওয়া যেতে পারে৷
স্টিভ জবসের ভুল!
‘আইগড' খ্যাত জবসকে চেনেন না প্রযুক্তিপ্রেমী এমন লোক বিশ্বে নেই বললেই চলে৷ এ বছর অক্টোবরে তিনি মারা গেছেন৷ তবে খবর এটা নয়৷ যে কারণে তাঁর নাম আলোচনায় আনা হলো সেটা হচ্ছে, তাঁর অসুখ৷ অনেকদিন ধরে তিনি প্যানক্রিয়েটিক ক্যান্সারে ভুগছিলেন৷ বিরল একটি রোগ এটি৷ তবে সার্জারি করলে নিরাময় সম্ভব বলে চিকিৎসকরা বলছেন৷ কিন্তু জবস তাঁর শরীরে কাটাকাটি করতে চাননি৷ তাই সার্জারিতে না গিয়ে তিনি বিকল্প চিকিৎসা শুরু করেছিলেন৷ যেমন আকুপাংচার, খাবার-দাবার নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদি৷ কিন্তু তাতে যে খুব একটা লাভ হয়নি সেটা বোঝা যায় তাঁর মৃত্যুর মধ্য দিয়ে৷ জবস মারা যাওয়ার পর এখন শোনা যাচ্ছে, সার্জারি না করানোর সিদ্ধান্তটা তাঁর জীবনের একটা মস্ত বড় ভুল ছিল৷ মৃত্যুর ঠিক আগে, সে কথা জবস নিজেও নাকি বুঝেছিলেন৷ জবসের জীবনী থেকে পাওয়া এই তথ্য নিয়ে এখন চলছে আলোচনা৷
প্রতিবেদন: জাহিদুল হক
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ