স্বাস্থ্য বিমা ব্যবস্থা ঢেলে সাজানোর ডাক দিলেন ওবামা
২৩ জুলাই ২০০৯মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা অবশ্য এরই মধ্যে স্বাস্থ্য বিমা ব্যবস্থা ঢেলে সাজানোর প্রস্তাবের প্রয়োজনীয়তার উপর আবার জোর দিলেন৷
স্বপ্নের যাদুকরের মত ওবামা নির্বাচনী প্রচারাভিযানে আমেরিকার বিভিন্ন মৌলিক সমস্যার সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন৷ ক্ষমতায় আসার প্রায় ৬ মাস পর তিনি হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন, সুস্পষ্ট পরিকল্পনা ও সদিচ্ছা সত্ত্বেও কোনো বড় পদক্ষেপ নেওয়া কার্যক্ষেত্রে কতটা কঠিন৷ এমনকি সংসদের দুই কক্ষে তাঁর নিজের ডেমক্র্যাট দলের যথেষ্ট শক্তি থাকা সত্ত্বেও সব ক্ষেত্রে দলের সাংসদদের সমর্থন পাওয়াও সহজ হচ্ছে না৷ আমেরিকার রুগ্ন স্বাস্থ্য বিমা ব্যবস্থা ঢেলে সাজানোর উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনা কার্যকর করতে গিয়েও তাঁকে নিজের দলের একাংশের মধ্যেই বাধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে৷
ঠিক এমন পরিস্থিতির মধ্যে ওবামা বুধবার স্বাস্থ্য পরিষেবা কাঠামোর সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার কথা পুনর্ব্যক্ত করলেন৷ সমালোচকদের যুক্তি খণ্ডন করে দিয়ে ওবামা দাবি করেন, রেকর্ড বাজেট ঘাটতির অজুহাতে এই গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ মুলতুবি রাখলে আখেরে ক্ষতিই হবে –এই সংস্কার প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই বরং বাজেট ঘাটতি কমিয়ে আনা সম্ভব৷
বর্তমানে আমেরিকার বাজেট ঘাটতির মাত্রা প্রায় ১৮০,০০০ কোটি ডলারের মাত্রা ছুঁয়ে ফেলেছে৷ ওবামার মতে, দেশের স্বাস্থ্য পরিষেবা ও বিমা ব্যবস্থার শোচনীয় অবস্থার কারণে বিপুল অঙ্কের অর্থের অপচয় ঘটছে৷ তাই এই রুগ্ন কাঠামোর দীর্ঘমেয়াদি সংস্কারের কাজে হাত দিলে বাজেটের উপরেও চাপ কিছুটা কমবে এবং দেশের জনসংখ্যার একটা বড় অংশ অবশেষে চিকিৎসার সুযোগ পাবে৷ উল্লেখ্য, আমেরিকায় বর্তমানে প্রায় ৪ কোটি ৭০ লক্ষ মানুষ স্বাস্থ্য বিমার আওতার বাইরে রয়েছেন৷ যাদের এই বিমা আছে, তাদের মধ্যেও একটা বড় অংশকে বিশাল অঙ্কের মাশুল গুনতে হচ্ছে অথবা খারাপ সময় এলে তাদের বিমা বাতিল হয়ে যাচ্ছে৷ অনেকে আবার মাশুল দিয়েও চিকিৎসার সম্পূর্ণ ব্যয় বিমা সংস্থার কাছ থেকে ফেরত পাচ্ছেন না৷
মার্কিন সংসদে দুই দলের সদস্যদের মধ্যেই ওবামার সংস্কার প্রস্তাবের অনেক খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে মতবিরোধ রয়েছে৷ তাছাড়া এই কর্মসূচি রূপায়ণ করা হলে বাজেট ঘাটতি কমবে না বাড়বে, সেবিষয়েও জোরালো বিতর্ক চলছে৷ ওবামা অবশ্য আশ্বাস দিয়ে বলেছেন, এমন কোনো কর্মসূচিতে তিনি স্বাক্ষর করবেন না, যার ফলে ব্যয় আগের তুলনায় বেড়ে যায়৷ তিনি চলতি বছরের মধ্যেই এই পদক্ষেপ নিতে বদ্ধপরিকর৷
প্রতিবেদন: সঞ্জীব বর্মন, সম্পাদনা: হোসাইন আব্দুল হাই