স্মার্টফোন বনাম ডেস্কটপ
১০ জুন ২০১৩মূলত ফেসবুকের জন্য স্টারডম গেমটি তৈরি করে সারা ফেলে জিনগা৷ সামাজিক গেমস তৈরিতে অগ্রণী এই প্রতিষ্ঠানটি সম্প্রতি তাদের এক পঞ্চমাংশ কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘোষণা দিয়েছেন৷ কারণ হচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি ডেস্কটপ কমপিউটারভিত্তিক গেম আর তেমন একটা তৈরিতে আগ্রহী নয়৷ বরং তাদের নজর এখন শুধু মোবাইল গ্যাজেটের দিকে৷
গত বছর ইয়াহুর প্রধান নির্বাহী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর গুগলের সাবেক কর্মকর্তা মারিসা মায়ারও একই ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন৷ ইয়াহু এখন মূলত মোবাইল ফোন এবং ট্যাবলেটকে কেন্দ্র করে তাদের দোকান সাজাচ্ছে৷
গুগলও মোবাইলের গুরুত্ব অনুধাবন করে অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল অপারেটিং সিস্টেম বাজারে আনে৷ বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি এই সিস্টেমের জন্য সফটওয়্যার এবং সেবা তৈরি করছে৷ শুধু তাই নয়, ‘সেল্ফ ড্রাইভিং কার’ এবং ‘গুগল গ্লাস' এর মতো পণ্যও বাজারে আনার প্রস্তুতি নিচ্ছেন গুগল৷ এসব পণ্য কম্পিউটার বা ইন্টারনেট ব্যবহারের প্রথাগত ধারাকে ব্যাপক বদলে দেবে৷
যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালিভিত্তিক পর্যবেক্ষক রব অ্যান্ডারলি গুগল গ্লাস বিষয়ে বলেন, ‘‘মানুষের মাথার সঙ্গে জুড়ে দেওয়া এই ডিসপ্লে মোবাইল ব্যবহারকারীদের আরো গুরুত্বপূর্ণ করে তুলছে কেননা এখন তাদের কাছে বিজ্ঞাপন পৌঁছানো আরো সহজ হবে এবং চলতি পথেই তাদের দেওয়া যাবে স্থাননির্ভর বিভিন্ন সেবা৷''
তিনি বলেন, ‘‘স্বচালিত গাড়ির ড্যাশবোর্ড এক বড় ট্যাবলেটে রূপ নেবে৷ গাড়ি যদি নিজে চলতে থাকে এবং তার আরোহীরা উদাসীন হয়ে ওঠে, তখন এই ড্যাশবোর্ডের মাধ্যমে তাদের কাছে ইচ্ছামত যে কোনো কিছু পৌঁছানো যাবে৷''
পরিসংখ্যানও বলছে, সাধারণ ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা দ্রুত অ্যাপস এর উপর নির্ভরশীল হয়ে উঠছেন এবং ক্রমশ গতানুগতিক ওয়েবসাইট থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন৷ গার্টনারের গবেষণায় দেখা গেছে, সাধারণ মানুষ প্রতিদিন অন্তত ২০ বার স্মার্টফোন ব্যবহার করে ইন্টারনেটে প্রবেশ করেন এবং প্রতিবার গড়ে এক মিনিটের মতো ইন্টারনেটে থাকেন৷ অন্যদিকে একজন মানুষ প্রতিদিন গড়ে চারবার ডেস্কটপ ব্যবহার করে ইন্টারনেটে প্রবেশ করেন এবং প্রতিবার গড়ে ৩৫ মিনিট করে ইন্টারনেটে কাটান৷
এই গবেষণা অবশ্য এখনই শুধু মোবাইলের দিকে দৌড়ানোর বিষয়ে সবাইকে সতর্কও করে দিচ্ছে৷ কেননা, ডেস্কটপের ব্যবহার পড়তির দিকে হলেও একেবারে কমে যায়নি৷ ফলে ‘মোবাইল ফার্স্ট' নামক যে ধারণার উদ্ভব হয়েছে সেটা যেন ‘মোবাইল ওনলি' হয়ে না যায় সেদিকেও নজর রাখতে হবে৷
এআই / এসবি (এএফপি)