হংকং-এর পেশাজীবীদের পাচার ও দাসত্ব বিরোধী উদ্যোগ
৩ আগস্ট ২০১১হংকং-এর স্বনামধন্য পেশাজীবীদের অন্যতম কেন ল৷ শিল্পোদ্যক্তা কেন ল'র রয়েছে তথ্য প্রযুক্তি তথা আইটি'র বিশাল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান৷ তবে তাঁর এখন দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে দাসত্ব বিরোধী কর্মী হিসেবে ভূমিকা রাখা৷ তাঁরা প্রতিষ্ঠা করেছেন মেকং ক্লাব৷ এই ক্লাবের লক্ষ্য হচ্ছে গোটা এশিয়ায় দাসত্বের আধুনিক ধারা তথা মানব পাচারের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়া৷ গত জুলাই থেকে এই ক্লাবের কার্যক্রম শুরু হয়েছে৷ ক্লাবের কৌশল ঠিক করা হয়েছে এর সদস্যদের যোগাযোগ, দক্ষতা এবং পারদর্শিতা কাজে লাগিয়ে মানব পাচারের শিকার ব্যক্তিদের বাঁচানো৷
মেকং ক্লাবের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ‘মাদারঅ্যাপ' নামক আইটি প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী কেন ল৷ তিনি বলেন, ‘‘চার বছর আগের চীনের মূল ভূখণ্ড সফরের কথা আমার বেশ মনে পড়ে৷ সেখানে আমি বেশ কিছু পেশাদার ভিক্ষুক দেখেছিলাম৷ অথচ তারা ছিল মাত্র ছয় থেকে সাত বছর বয়সি৷ আমার কাছে মনে হয়েছে যে, তাদের নিশ্চয়ই কোন একটা চক্রের কাছে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে৷ সেই থেকে আমি ভাবছিলাম কীভাবে আমি এদের সাহায্য করতে পারি৷'' কেন ল জানান, ‘‘মেকং ক্লাব প্রতিষ্ঠার পেছনে দর্শন হচ্ছে মানব পাচার প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তোলা৷ মানব দাসত্ব বন্ধে আমরা বেসরকারি খাতের মেধাকে কাজে লাগাতে চাই৷ মেকং ক্লাব দাসত্ব বিরোধী জগতের সাথে বেসরকারি অঙ্গনের একটি যোগসূত্র৷ যাতে করে দাসত্ব বিরোধী আন্দোলনে উভয় ক্ষেত্রের প্রতিনিধিরা একসাথে কাজ করতে পারে৷''
সরকারি দপ্তরের উদ্যোগের বাইরে পেশাজীবীদের এই ক্লাব পাচার বন্ধে তাদের নিজস্ব দক্ষতার প্রয়োগ করতে চায়৷ মেকং ক্লাবের সাথে জড়িত আইনজীবীরা মানব দাসত্ব বন্ধে আদালতে সহযোগিতা করবেন৷ টেলিকম বিশেষজ্ঞরা সারা এশিয়ার জন্য একটি হটলাইন স্থাপন করবেন যাতে পাচারের শিকার ব্যক্তিরা সেখানে সহায়তার জন্য যোগাযোগ করতে পারে৷ আর ব্যাংকাররা কাজ করবেন মানব পাচারকারীদের অবৈধ অর্থনৈতিক লেনদেন চিহ্নিত করার মাধ্যমে৷ জাতিসংঘের মানব পাচার বিষয়ক আন্ত-সংস্থা প্রকল্প - ইউএনআইএপি'র প্রধান ম্যাথিউ ফ্রিডম্যান পেশাজীবীদের এই উদ্যোগকে অভিনব ধারণা সমৃদ্ধ এবং উৎসাহব্যঞ্জক হিসেবে স্বাগত জানিয়েছেন৷
উল্লেখ্য, জাতিসংঘের হিসাবে, বর্তমানে সারা বিশ্বে প্রায় আড়াই কোটি মানুষ দাসত্বের বন্ধনে আবদ্ধ৷ এর মধ্যে শুধুমাত্র এশিয়াতেই রয়েছে নব্বই লাখেরও বেশি৷
প্রতিবেদন: হোসাইন আব্দুল হাই
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন