হৃদযন্ত্রের সমস্যায় সময়ই মূল বিষয়
৮ সেপ্টেম্বর ২০১৫দুঃখজনক হলেও এমন ঘটনা প্রতিদিন ঘটে৷ বুকে ব্যথা, নিঃশ্বাসের কষ্ট, বুক চেপে ধরে বসে পড়া, সংজ্ঞা হারানো৷ তখন সময়ের মূল্য টের পাওয়া যায়৷ তখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া পরীক্ষা করা৷ কয়েক ধরনের কার্ডিয়াক অ্যারিথমিয়া-র ক্ষেত্রে অবিলম্বে চিকিৎসার প্রয়োজন৷ তাই অনেক প্রকাশ্য জায়গায় মোবাইল ডিফিলিব্রেটর প্রস্তুত রাখার প্রবণতা বাড়ছে৷
বেশিরভাগ ইউনিটের মধ্যেই সাহায্যকারীদের জন্য স্পষ্ট নির্দেশ লেখা থাকে৷ সবার আগে ইসিজি করতে হয়৷ এই ইউনিট হৃদযন্ত্রের মাইক্রো-ইলেকট্রিক কারেন্ট পরিমাপ করে৷ হৃদযন্ত্রের পেসমেকার – অর্থাৎ সাইনাস নোড এই মাইক্রো-ইলেকট্রিক স্পন্দন সৃষ্টি করে৷ সাধারণত সেগুলি একটি নির্দিষ্ট ছন্দে হৃদযন্ত্রের পেশির মধ্যে সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে৷ এই স্টিমুলাসের কারণে উদ্দীপিত হয়ে হৃদযন্ত্রের পেশি সঙ্কুচিত হয়৷ এই সঙ্কোচনের ফলে হৃদযন্ত্র তার পাম্প করার কাজ চালিয়ে যেতে পারে৷ তারপর পেশিগুলি শিথিল হয়৷ হৃদযন্ত্র আবার রক্তে ভরে যায়৷ ক্রিয়া আবার নতুন করে শুরু হয়৷ ইসিজি অনুযায়ী এই ক্রিয়ায় যদি ব্যাঘাত ধরা পড়ে, তখন সেই যন্ত্র ডিফিব্রিলেটর চালু করে দেয়৷ সেটি তখন নির্দিষ্ট ও শক্তিশালী বিদ্যুতের স্পন্দন দিতে থাকে৷ সেটি হৃৎপিণ্ডের গোটা পেশিকে উদ্দীপিত করে৷ তখন সাইনাস নোড হৃৎপিণ্ডের নিয়ন্ত্রিত ছন্দ আবার চালু করে৷ তখন হৃৎস্পন্দন ঠিকমতো শুরু হয়ে যায় এবং তা শরীরকে প্রয়োজনীয় অক্সিজেন দিতে পারে৷
দ্রুত পদক্ষেপ নিলে প্রাণ বাঁচানো যেতে পারে, কারণ হৃদযন্ত্র জনিত বেশিরভাগ মৃত্যুর কারণ ফিব্রিলেশন৷ প্রতি মিনিটে বিশ্বের কোথাও না কোথাও কোনো মানুষ কার্ডিয়াক ফিব্রিলেশনের শিকার হচ্ছে৷ ঠিক সময়ে ডিফিলিব্রেটর প্রয়োগ করলে অনেকেরই প্রাণ বাঁচতে পারে৷ শরীরে মধ্যে বসানো ডিফিলিব্রেটরও একইভাবে কাজ করে৷ অপারেশন করে রোগীর বুকের ত্বকের নীচে ইসিজি-র সঙ্গে সংযুক্ত ডিফিব্রিলেটর বসানো হয়৷ হৃদযন্ত্রের পেশির সঙ্গে তা সংযুক্ত করা হয়৷ ইসিজি ফিলিব্রেশন শনাক্ত করলেই ডিফিব্রিলেটর শক্তিশালী বিদ্যুতের স্পন্দন পাঠায়৷
এই ধরনের প্রক্রিয়া রুটিন হয়ে উঠছে৷ দুই-তিন দিনের মধ্যেই রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাচ্ছে৷ এভাবে অ্যারিথমিয়ার ঝুঁকি আছে – এমন মানুষকে আচমকা হৃদযন্ত্রের সমস্যার কারণে মৃত্যু থেকে বাঁচানো সম্ভব৷
এসবি/ডিজি