হেফাজতের ইসলামের নতুন কমিটি ঘোষণা
৭ জুন ২০২১ডয়চে ভেলের কন্টেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের তথ্য অনুযায়ী, সোমবার ঢাকার আল জামিয়াতুল ইসলামিয়া মাখজানুল উলুম খিলগাঁও এ এক সংবাদ সম্মেলনে হেফাজতের মহাসচিব নুরুল ইসলাম জিহাদী এ কমিটি ঘোষণা করেন৷
৩৩ সদস্যের নতুন কমিটিতে মামুনুল হকসহ কয়েকজন নেতা বাদ পড়লেও আমির ও মহাসচিব পদে আগের নেতারাই বহাল রয়েছেন৷ জুনাইদ বাবুনগরী আমির পদে থাকছেন; যিনি কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক সংগঠনটির সাবেক আমির শাহ আমদ শফীকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়ার মামলার আসামি৷ মহাসচিব পদেও নুরুল ইসলাম জিহাদীই রয়েছেন৷
সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে জিহাদী বলেন, "আগের কমিটির যারা গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন, তাদের নাম এই ৩৩ সদস্যের ঘোষিত কমিটি নেই৷
"ছোট পরিসরে এই কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে৷ এই কমিটি পরবর্তীতে চিন্তা-ভাবনা করে দেখবে আর কে কে এই কমিটিতে যুক্ত হবেন৷ যারা কারাগারে আছেন তারা এখানে অন্তর্ভুক্ত হবেন কিনা, তা এই পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে৷
হেফাজতের কর্মসূচি থেকে সহিংসতায় যারা মারা গেছেন, তাদের বিষয়ে তিনি বলেন, "যারা মারা গেছেন, তাদের ন্যায়বিচারের জন্য আমরা সব সময় দাবি জানিয়ে আসছি৷ ন্যায়বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমাদের এই দাবি অব্যাহত থাকবে৷ আর যারা গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন তাদের মুক্তির দাবি জানিয়ে আমরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথেও দেখা করেছি৷ তাদের মুক্তির দাবিও আমরা অব্যাহত রাখব৷ হেফাজতের নতুন কমিটি ‘সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের' সঙ্গে যুক্ত থাকবে বলে ঘোষণা দেন জিহাদী৷
হেফাজত তাহলে দুই ভাগে বিভিক্ত কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে জিহাদী বলেন, "এখানে বিভক্তির কিছু নেই৷ তারা (শফীর অনুসারী) আমাদের বলেছেন, এই কমিটিতে তারা আমাদের সাথে থাকবেন৷
প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই হেফাজতের আমির ছিলেন চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদ্রাসার মহাপরিচালক শাহ আহমদ শফী৷তিনি গত বছর মারা যাওয়ার পর নানা আলোচনার মধ্যে গত ১৫ নভেম্বর সম্মেলনে বাবুনগরীকে আমির করে হেফাজতের ১৫১ সদস্যের নতুন কমিটি গঠিত হয়েছিল৷
তার আগে দীর্ঘদিন নিষ্ক্রিয় থাকা হেফাজতের নেতারা গত বছরের শেষ দিকে ঢাকায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপনের বিরোধিতায় নেমে ফের আলোচনায় আসেন৷ সংগঠনটির নেতা মামুনুল হক ভাস্কর্য ভেঙে ফেলার হুমকিও দেন৷
নতুন কমিটি গঠনের ছয় মাস পার হওয়ার আগে গত মার্চে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাংলাদেশ সফরের প্রতিবাদে হেফাজতের কর্মসূচি সহিংসতায় গড়ায়৷এরপর মামুনুল ছাড়াও সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক ইসলামাবাদীসহ বেশ কয়েকজন নেতা গ্রেপ্তার হলে চাপে পড়ে হেফাজত৷ পুলিশ দাবি করে, হেফাজত নেতারা নাশকতার বড় ধরনের পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছিলেন, যার চূড়ান্ত লক্ষ্য ছিল রাষ্ট্রক্ষমতা দখল৷ এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৫ এপ্রিল হেফাজতের কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেন আমির জুনাইদ বাবুনগরী৷
সোমবারের সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের আহ্বায়ক কমিটির প্রধান উপদেষ্টা মহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী এবং আমির জুনাইদ বাবুনগরী উপস্থিত ছিলেন না৷
এ বিষয়ে মহাসচিব নুরুল ইসলাম জিহাদী বলেন, "আমাদের দুজন মুরব্বি কেন্দ্রীয় কমিটির প্রধান উপদেষ্টা মহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী জ্বরে আক্রান্ত এবং আমির জুনাইদ বাবুনগরীও অসুস্থ, যে কারণে উনারা আজকে উপস্থিত হতে পারেননি৷
এনএস/কেএম (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)