চট্টগ্রাম বিস্ফোরণ
৮ অক্টোবর ২০১৩সোমবারের ঐ বিস্ফোরণের ঘটনায় আহতদের মধ্যে একজন মাদ্রাসা ছাত্র মো. হাবিব হাসপাতালে চিকিত্সাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার মারা গেছে৷ তার হাতের কব্জি উড়ে গিয়েছিল৷ পুলিশ কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম জানান, এই ঘটনায় মুফতি ইজাহারুলসহ ১১ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা হয়েছে চট্টগ্রামের খুলসী থানায়৷ তাদের মধ্যে নয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷ মুফতি ইজাহারুল ইসলাম চৌধুরী এবং তার ছেলে পালাতক আছেন৷ তাদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে৷
পুলিশ কমিশনার জানান, সোমবার রাতে মাদ্রাসায় অভিযান চালিয়ে বিস্ফোরণস্থল থেকে গ্রেনেড ও বোমা তৈরির বিস্ফোরক পাওয়া গেছে৷ পাওয়া গেছে বোমার স্প্লিন্টারও৷ এছাড়া মুফতি ইজাহারুলের বাসায় অভিযান চালিয়ে ১৮টি বোতল অ্যাসিড উদ্ধার করা হয়েছে৷ ইজাহারুলের বাসা মাদ্রাসা কমপ্লেক্সে৷ তিনি জানান, বিস্ফোরণের পরপরই মাদ্রসার লোকজন পানি ঢেলে বিস্ফোরকের আলামত নষ্টের চেষ্টা করে৷ এছাড়া আগেই আগুনের কথা বলে ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়ায়, তারা পানি দিয়ে আগুন নেভানোয় বিস্ফোরণের কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি৷
তবে পুলিশ কমিশনার জানান, প্রাথমিক তদন্তে তারা জানতে পেরেছেন যে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী তারা মাদ্রাসার ভেতরে গ্রেনেড এবং বোমা তৈরি করছিল৷ তাদের উদ্দেশ্য ছিল পুলিশের ওপরই হামলা করা৷ বিশেষ করে, সরকার বিরোধী আন্দোলনের সময় এগুলো তারা ব্যবহার করতো৷ আগামী ১২ই অক্টোবর প্রধানমন্ত্রীর চট্টগ্রাম সফরের সঙ্গে এই তত্পরতার কোনো যোগসূত্র আছে কিনা জানতে চাইলে পুলিশ কমিশনার বলেন, এখনও কোনো যোগসূত্র তারা পাননি৷ তবে তদন্ত চলছে৷
এদিকে চট্টগ্রামের সাংবাদিক রিয়াজ হায়দার ডয়চে ভেলেকে জানান, মুফতি ইজাহারুলের এই মাদ্রাসায় জঙ্গি তত্পরতার অভিযোগ ছিল অনেক আগে থেকেই৷ গত বিএনপি সরকারের সময় চট্টগ্রামের বাশখালী এলাকায় অস্ত্র এবং বিস্ফোরকসহ তাঁর বেশ কয়েকজন লোকজন ধরা পড়েছিল৷ তিনি জানান, মুফতি ইজাহার হেফাজতের নায়েবে আমির ছাড়াও নেজামে ইসলামের একাংশের চেয়ারম্যান৷ চট্টগ্রামে গণজাগরণ মঞ্চ প্রতিহত করতে মাদ্রাসা ছাত্রদের তিনিই নেতৃত্ব দিয়েছিলেন৷
চট্টগ্রামের লালখান বাজারের জমিয়াতুল উলুম আল মাদ্রাসাটি পাঁচ একর জায়গা জুড়ে৷ প্রাচীন এই কওমি মাদ্রাসাটিতে মোট ৮টি ভবন রয়েছে৷ তবে সোমবার রাতে পুলিশি অভিযানের পর মাদ্রাসাটি ফাঁকা হয়ে যায়৷ মুফতি ইজাহার ও তাঁর ছেলে হারুন পালিয়ে যাওয়ায়, ছাত্রদের একটা বড় অংশও পালিয়েছে৷ মাদ্রাসার চারপাশে মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশ৷ অবশ্য এ নিয়ে হেফাজতে ইসলামের বক্তব্য জানতে তাদের একাধিক শীর্ষ নেতার মোবাইলে যোগাযোগ করা হলেও, তাদের ফোন বন্ধ পাওয়া য়ায়৷