‘অং সান সুচি কি শুনতে পাচ্ছেন?'
১৮ নভেম্বর ২০১৬বিবিসি বাংলার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘‘প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে আসা ২০০ রোহিঙ্গা সীমান্তে আটকা পড়েছেন৷ নিহতদেরকে সেনাবাহিনী সহিংস হামলাকারী বলে বর্ণনা করছে৷ তবে রোহিঙ্গা সূত্রগুলো বলছে, সেনাবাহিনী সেখানে বেসামরিক অধিবাসীদেরকে হত্যার পাশাপাশি ধর্ষণও করেছে এবং গ্রামের পর গ্রাম তারা জ্বালিয়ে দিয়েছে৷ মিয়ানমার থেকে বিবিসির সংবাদদাতা জানিয়েছেন, সেনাবাহিনীর হাতে নিহতের সংখ্যা সম্ভবত আরো অনেক বেশি৷ ''
রুমা মোদক ফেসবুকে লিখেছেন, ‘‘কী ভয়ঙ্কর! সুচিকে তো শান্তিতে নোবেল দেয়া হয়েছিল ? কী করে পারে মানুষ এইরকমভাবে অসহায় মানুষকে হত্যা করতে? আর জাতিসংঘ কী করছে? পৃথিবী থেকে কি মানবতা হারিয়ে গেল? হা ঈশ্বর! নিরীহ মানুষের ওপর অত্যাচার আর কত দেখতে হবে? আমি জানি আমার মতো আম-জনতার প্রতিবাদে কিছু আসে যাবে না পৃথিবীর ক্ষমতাবানদের৷ তবু তীব্র প্রতিবাদ জানাই৷ ধর্মের নামে মানুষের উপর এই অত্যাচার কিছুতেই মেনে নেয়া যায় না৷''
ফেসবুক পাতায় ফারুক সাদিক লিখেছেন, ‘‘আট লাখ জনসংখ্যার একটি জনগোষ্ঠী,যাদের কোনও দেশ নেই৷ অন্য গ্রামে গিয়েও কাজ করতে পারবে না৷ নিজের গ্রামের ভেতর ক্ষুধা লাগলে সেখানেই না খেয়ে মরতে হবে৷ অসুখ হলে চিকিৎসা করানোরও উপায় নাই৷ এরকম একটা হতভাগা জাতির ওপর সময়-অসময়ে হায়েনার মতো আক্রমণ চালায় পাশের লোকালয়ের সংখ্যাগুরুরা৷ সেখানে কেবল মুসলিম রোহিঙ্গারাই নয়, বৌদ্ধ রোহিঙ্গাও আছে৷ পৃথিবীর ইতিহাসের নিষ্ঠুরতম সাম্প্রদায়িক আগ্রাসনের শিকার হতভাগা মানুষগুলো যখন তুমুল আক্রমণের শিকার হন- তখন তাদের ঘিরে রাখা রাষ্ট্রীয় বাহিনীও যোগ দেয় তাদের ওপর আক্রমণে৷ প্রাণের ভয়ে নৌকায় পাড়ি জমান অচেনা উদ্দেশ্যে৷ আমাদের লড়াই যদি হয় পৃথিবীর লাঞ্ছনার বিরুদ্ধে, আমাদের লড়াই যদি হয় মানবতার বিপন্নতার বিরুদ্ধে, মানুষের জন্যে লড়াই- তাহলেই কেবল আমাদের পৃথিবীতে শান্তি আসবে৷''
সিএনএন-এর প্রতিবেদনের শিরোনাম: ‘‘সুচি কি শুনতে পাচ্ছেন? মিয়ানমারের মুসলিমদের উপেক্ষা করার অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে৷''
প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, তারা এমন একটি ভিডিও দেখেছেন যেটা এতটাই ভয়ঙ্কর যে প্রকাশ করার সাহস হয়নি৷ সব বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয়া হচ্ছে৷ মৃতদেহ এখানে সেখানে ছড়িয়ে আছে৷ প্রতিবেদক লিখেছেন, ‘‘এমন বিভৎসতা চোখে দেখা যায় না৷'' বাংলাদেশের অনেকেই জানিয়েছেন নৌকা করে সেখানে ভিড় করছেন রোহিঙ্গারা৷
সাবেক জাতিসংঘ মহাসচিব কফি আনান এই ঘটনার জের ধরে মিয়ানমারকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, দেশটি আবারও অস্থিতিশীল পরিস্থিতির দিকে যাচ্ছে৷ তবে মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, গণতন্ত্রের পথে হাঁটার আগে ও পরে মিয়ানমারের আদিবাসী ও সংখ্যালঘুদের উপর হত্যা, নির্যাতন ও ধর্ষণ চালিয়েছে সেনাবাহিনী৷ সবচেয়ে বেশি নির্যাতনের শিকার হচ্ছে রাখাইন রাজ্যের মানুষেরা৷
সংবাদ সংস্থা এএফপি'র প্রতিবেদনের শিরোনাম, ‘‘মিয়ানমারের মুসলিমবিরোধী বৌদ্ধ সন্ন্যাসী: ট্রাম্প আমার মতো''৷ উইরাথু নামের ঐ বৌদ্ধ সন্ন্যাসীকে নিয়েই প্রতিবেদনটি লেখা হয়েছে৷
প্রতিবেদক বলছেন, এই সন্ন্যাসীর বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে মুসলিম বিদ্বেষ ছড়িয়ে দেয়ার৷ তিনি নিজেকে ট্রাম্পের সঙ্গে তুলনা করতে পছন্দ করেন৷ তিনি প্রায়ই বিভিন্ন সভা সমাবেশে মুসলিমবিদ্বেষী বক্তব্য দেন এবং মুসলিমদের যাতে দেশে প্রবেশ করতে না দেয়া হয় সেজন্য জোর প্রচার চালান৷
সংকলন: অমৃতা পারভেজ
সম্পাদনা: আশীষ চক্রবর্ত্তী