অক্টোবর মাসে বিশ্বের জনসংখ্যা সাতশো কোটি ছাড়াবে
১১ জুলাই ২০১১সংস্থা আশঙ্কা প্রকাশ করে জানিয়েছে এ বছরের ৩১ অক্টোবরের মধ্যে জনসংখ্যা ৭০০ কোটি ছাড়িয়ে যাবে৷ প্রতি সেকেন্ডে তিনটি সন্তান ভূমিষ্ঠ হচ্ছে পৃথিবীতে অর্থাৎ বছরে ৮ কোটি শিশু জন্মগ্রহণ করছে৷ অনেকের আশঙ্কাই বাস্তব রূপ পেতে যাচ্ছে৷ এ বছরের ৩১ অক্টোবরের মধ্যেই বিশ্বের জনসংখ্যা হবে সাতশো কোটির বেশি৷
জনসংখ্যার এই স্ফীতির কোন নেতিবাচক দিক আছে কি? চোখ বন্ধ করে বলা যায় অবশ্যই আছে৷ বিশেষ করে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলো অতিরিক্ত জনসংখ্যার কারণে এগিয়ে যেতে পারছে না৷ তৃতীয় বিশ্বের অনেক দেশে দেখা যায় একেকটি পরিবারে আট থেকে থেকে দশটি করে সন্তান৷ আফ্রিকার বেশ কিছু দেশে এই সমস্যা অনেক বেশি তীব্র৷ ধারণা করা হচ্ছে ২০৫০ সালের মধ্যে আফ্রিকার জনসংখ্যা দুই বিলিয়ন ছাড়িয়ে যাবে৷ বিষয়টি চিন্তিত হবার মত কারণ আফ্রিকায় প্রতি চারজনের মধ্যে তিনজনের আয় দিনে দুই ডলারেরও কম৷
বেনিনের রাজধানী কোতোনু থেকে ১৪০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত নাসাটা গ্রাম৷ পিয়ের পোলকা একজন কৃষক৷ তিন স্ত্রী এবং ১৮ জন সন্তান নিয়ে তার পরিবার৷ তবে এতগুলো সন্তানের মুখে ঠিকমত খাবার তুলে দিতে পারেন না তিনি৷ স্কুলে পড়ার খরচ তিনি দিতে পারছেন না৷ বাচ্চারা সারাদিন বাড়িতেই থাকে৷ পিয়েরের বয়স ৬০৷ তার যা উপার্জন তা দিয়ে সংসার চালাতে তিনি হিমশিম খাচ্ছেন৷ আক্ষেপের সঙ্গে তিনি বললেন,‘‘এতগুলো মানুষের জন্য প্রতিদিনের খাবার যোগাড় করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়৷ এত বিশাল পরিবারের দেখাশোনা আমি কীভাবে করবো? প্রতিদিন এ জন্য আমার প্রয়োজন অন্তত তিন হাজার বেনিন ফ্রঁ৷''
তিন হাজার ফ্রঁ হল চার ইউরোর কিছু বেশি৷ তা দিয়ে কোনমতে চলা সম্ভব৷ বাচ্চাদের জন্য কাপড়-চোপড় কেনা ছাড়াও স্কুলের খরচ উঠে আসবে এই টাকা থেকে৷ কিন্তু তা হচ্ছে না কারণ এত টাকা পিয়েরের নেই৷ প্রতিটি সন্তান ঘোরাঘুরি করছে ছেঁড়া টি-শার্ট বা শার্ট পরে৷ কারো পায়ে স্যান্ডেল বা জুতো নেই৷ প্রায় অভুক্ত অবস্থায় এরা যে দিন কাটায় তা তাদের রুগ্ন শরীর দেখলেই বোঝা যায়৷
বেনিন সরকার বেশ কিছু প্রকল্প হাতে নিয়েছে এসব মানুষকে সাহায্য করতে৷ অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার মূলনীতি হল জনসংখ্যা বিস্ফোরণ ঠেকানো৷ তাই পরিবার পরিকল্পনা গ্রহণের কথা বলা হচ্ছে, মাতৃ মৃত্যুহার এবং শিশুমৃত্যুর হার কমানোর ওপর জোর দেয়া হচ্ছে৷ তা না করলে সার্বিক উন্নয়ন ব্যাহত হবে বইকি৷
প্রতিবেদন: মারিনা জোয়ারদার
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক