অতিরিক্ত সূর্যের তাপে অ্যালার্জি হতে পারে

বৈশ্বিক জলবায়ুর পরিবর্তন মানুষের শরীরে এবং মনে নানাভাবে প্রভাব ফেলে৷ মেঘলা আকাশ যেমন মন খারাপ করে দেয়, তেমনি মিষ্টি রোদ কিছু করার উৎসাহ দেয়, বিশেষ করে শীতপ্রধান দেশে৷ আনুমানিক দুই কোটি ৫০ হাজারেরও বেশি জার্মান শুধু আবহাওয়ার কারণে বিষন্নতা বা মানসিক কষ্টে ভোগেন৷

তাই ছুটি কাটাতে জার্মানরা ছোটেন রোদের দেশের সমুদ্র সৈকতে৷ সেখানে তাঁরা শুয়ে থাকেন, অর্থাৎ রৌদ্রস্নান করেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা৷ কিন্তু অতিরিক্ত সূর্য গ্রহণে ত্বকে অ্যালার্জি দেখা যেতে পারে, যা থেকে ত্বকের ক্যানসারও হতে পারে৷

সুস্থ এবং সুন্দর থাকতে মানুষের শরীরে কতটুকু রোদের প্রয়োজন বা কখন অ্যালার্জি হতে পারে? কী করেই বা বুঝবেন যে অ্যালার্জি হচ্ছে? ত্বক বিশেষজ্ঞ ড. ফোগ্ট বলেন, ‘‘রোদের অ্যালার্জি অনেক ধরনের৷ বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ঘাড়, গলা এবং হাতের ওপরের অংশে প্রথমে বেশ চুলকায়, তারপর ফুলে ফোসকার মতো হয়৷ তবে তা তিন থেকে চার সপ্তাহ পরে আবার চলেও যায়৷’’

মিউনিখ শহরের বিশেষজ্ঞ ড. ফোগ্ট বলেন, ‘‘প্রতিটি মানুষের স্বভাব, ত্বক বা অন্য সব কিছুই ভিন্ন ভিন্ন৷ তাই পৃথক পৃথক কারণে হয়ে থাকে এই অ্যালার্জি৷ আর তা যে কোনো অ্যালার্জির ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য৷ সাধারণত মানুষের স্বভাব, সূর্যের তাপ, গায়ে মাখার রাসায়নিক যুক্ত কোনো ক্রিম ব্যবহারের কারণে হয়৷ তবে প্রধান কারণ সাধারণত সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি৷’’

‘‘সূর্যের আলো মানুষের শরীরে এবং মনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে৷ রোদে রয়েছে ভিটামিন ‘ডি’, যা ত্বকের জন্য জরুরি এবং যা মানুষকে হাসি-খুশি রাখতে বড় ভূমিকা রাখে৷ ত্বক শরীরের সবচেয়ে বড় এবং গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ৷ তাই এর যত্ন নেওয়া খুব জরুরি৷’’ বলেন ত্বক বিশেষজ্ঞ ড. হান্স-উলরিশ ফোগ্ট৷

শুধু শীতপ্রধান দেশ নয়, গ্রীষ্মপ্রধান দেশেও গায়ে তেল মেখে বাচ্চাদের রোদে শুইয়ে রাখা বা গোসল করানো হয় ভিটামিন ‘ডি’ গ্রহণের জন্য৷

সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি তো আছেই, তাছাড়াও পাশাপাশি অ্যান্টিবায়োটিক, অন্যান্য ওষুধ সেবন, কসমেটিক এবং খুব বেশি লেবু বা লেবু জাতীয় ফল খাওয়া হলেও রোদের অ্যালার্জি হয়৷ এই অ্যালার্জি যেতে বেশ কয়েক সপ্তাহ সময় লাগতে পারে৷ এছাড়া অতিরিক্ত তাপে ত্বক পুড়ে ও বুড়িয়েও যেতে পারে, যা ত্বক ক্যানসারের ঝুঁকি আরো বাড়িয়ে দেয়৷ তাই রোদে অবশ্যই টুপি বা ‘হ্যাট’ পরা উচিত৷

‘সানক্রিন লোশন’ সূর্যের বিকিরণ থেকে ত্বককে রক্ষা করলেও, সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি মানুষের ত্বকের যে পরিবর্তন করে, তা সারতে বেশ সময় লাগে৷ ত্বকের বেশ কয়েকটি স্তর থাকায় ধীরে ধীরে ত্বক সুস্থ হয়ে ওঠে৷