অন্তর্বর্তী সরকারে কে কোন মন্ত্রণালয় পেলেন
নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়। দেখে নিন, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/বিভাগের দায়িত্ব কারা পেলেন৷
ড. মুহাম্মদ ইউনূস
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসাবে ৮ আগস্ট রাতে দায়িত্ব নিয়েছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস৷ ১৯৮৩ সালে গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠান করেন৷ ক্ষুদ্র ঋণের মাধ্যমে গ্রামীণ নারীদের দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য ২০০৬ সালে ড. ইউনূস ও গ্রামীণ ব্যাংক শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পান৷ তার অধীনে থাকছে ২৭টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ৷ এর মধ্যে রয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও সশস্ত্র বিভাগ৷
আরও যেসব মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ইউনূস
এছাড়া তিনি প্রতিরক্ষা, শিক্ষা, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়, খাদ্য, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত, ভূমি, বস্ত্র ও পাট, কৃষি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, রেলপথ, জনপ্রশাসন, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়, নৌ-পরিবহন, পানি সম্পদ, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকবেন৷
ইউনূসের দায়িত্বে থাকা আরও মন্ত্রণালয়
এছাড়া তিনি তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান, বাণিজ্য, শ্রম ও কর্মসংস্থান, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকবেন৷
সালেহউদ্দিন আহমেদ
নতুন সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয় এবং পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন তিনি৷ বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন ৷ ১৯৭০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতিতে স্নাতোকত্তর৷ পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় প্রশাসনে সিভিল সার্ভিস অব পাকিস্তান (সিএসপি) ক্যাডারে যোগ দেন। ১৯৭৮ সালে ক্যানাডার হ্যামিল্টন শহরে অবস্থিত ম্যাকমাস্টার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন৷
ড. আসিফ নজরুল
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন তিনি৷ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক৷ এছাড়া তিনি একজন কথাসাহিত্যিক, রাজনীতি-বিশ্লেষক, সংবিধান বিশেষজ্ঞ ও কলামিস্ট। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পুরোটা সময়জুড়ে শিক্ষার্থীদের পাশে ছিলেন তিনি৷
আদিলুর রহমান খান
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে শিল্প মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকছেন তিনি৷ একজন মানবাধিকার কর্মী এবং মানবাধিকার সংস্থা অধিকারের প্রতিষ্ঠাতা। তিনি একজন আইনজীবী এবং সাবেক ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হিসাবেও দায়িত্ব পেয়েছেন৷
এ এফ হাসান আরিফ
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন তিনি৷ তিনি একজন বাংলাদেশি আইনজীবী, বাংলাদেশের সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এবং ফখরুদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, ভূমি, এবং ধর্ম মন্ত্রণালয় বিষয়ক উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
মো. তৌহিদ হোসেন
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব থাকছে তাঁর হাতে৷ বাংলাদেশের সাবেক পররাষ্ট্র সচিব হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি৷ এছাড়া দক্ষিণ আফ্রিকায় বাংলাদেশের সাবেক হাইকমিশনারও ছিলেন তিনি৷
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান
তিনি পেয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব৷ পরিবেশবিষয়ক সচেতনতা তৈরির স্বীকৃতি হিসেবে ২০০৭ সালে জাতীয় পরিবেশ পদক, ২০১২ সালে র্যামন ম্যাগসেসে পুরস্কার এবং প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ২০০৯ সালে ‘পরিবেশের নোবেল’খ্যাত গোল্ডম্যান এনভায়রনমেন্টাল পদক পান তিনি৷ ২০০৯ সালে টাইম সাময়িকী তাকে হিরোজ অব এনভায়রনমেন্ট খেতাবে দেয়৷ সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের জন্ম ১৯৬৮ সালে, ঢাকায়।
শারমিন মুরশিদ
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকছেন তিনি৷ নির্বাচন পর্যবেক্ষক হিসেবে তিনি বাংলাদেশে বেশ পরিচিত৷ এছাড়া তিনি ব্রতীর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা৷
এম. সাখাওয়াত হোসেন
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন তিনি৷ তিনি সাবেক সামরিক কর্মকর্তা৷ নির্বাচন কমিশনার হিসাবেও দায়িত্ব পালন করেছেন৷ অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের আগে তিনি এসআইপিজির সিনিয়র রিসার্চ ফেলো (এনএসইউ) হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন৷
ফরিদা আখতার
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে মৎস ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন তিনি৷ একজন উন্নয়নকর্মী হিসাবে কৃষির উন্নয়নে কাজ করেছেন৷ তিনি উবিনীগ (উন্নয়ন বিকল্পের নীতি নির্ধারণী গবেষণা) এর নির্বাহী পরিচালক৷
বাকি দুই উপদেষ্টা
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সাবেক নায়েবে আমীর আ.ফ.ম খালিদ হাসান ধর্ম মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন৷ গ্রামীণ শিক্ষার ব্যবস্থাপনা পরিচালক নূর জাহান বেগম পেয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব৷
নাহিদ ইসলাম
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক নাহিদ ইসলাম৷ তাদের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা আন্দোলনেই পদত্যাগে বাধ্য হন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা৷
আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া (ডানে) যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন৷ শুরু থেকেই ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন তিনি৷