অন্তর্বর্তী সরকারের রূপরেখা
১১ সেপ্টেম্বর ২০১৩দুই নেত্রীর সঙ্গে জাতিসংঘ মহাসচিবের টেলিফোন আলাপের পর মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরির চিঠি দেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দলকে সংলাপের জন্য চাপে ফেলেছে৷ আর ইউরোপীয় ইউনিয়নের পর্যবেক্ষক দলও রাজনৈতিক সংকট নিরসনে সংলাপের কথা বলেছেন৷ সব মিলিয়ে বাংলাদেশের আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন
এই পরিস্থিতিতে বিএনপি তার অবস্থানে কিছুটা পরিবর্তন এনেছে৷ এর আগে তারা নির্বাচনকালীন সরকারের কোনো রূপরেখা প্রকাশ করতে রাজি না হলেও এবার হয়েছে৷ সোমবার বিএনপি-র ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানিয়েছেন, তাঁরা খুব শিগগিরই নির্বাচনকালীন সরকারের রূপরেখা প্রকাশ করবেন৷ আর মঙ্গলবার তাকে স্বাগত জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিম৷ তিনি ১৪ দলের এক বৈঠক শেষে জানিয়েছেন, বিএনপি চাইলে সংসদে এই রূপরেখা প্রকাশ করতে পারে৷ আর সংসদের বাইরেও তা নিয়ে আলোচনা হতে পারে৷
এই পরিস্থিতিকে সাদা চোখে রাজনীতিতে সুবাতাস মনে করতে পারেন যে কেউ৷ তবে জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষক পরিষদের প্রধান অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহর কথা ভিন্ন৷ তিনি ডয়চে ভেলেকে বলেন, আন্তর্জাতিক চাপ এবং ভেতরে-বাইরে কূটনৈতিক তত্পরতার কারণেই দুই দলই এখন সংলাপের কথা বলছে৷ কিন্তু কেউ কারো অবস্থান থেকে সরে দাঁড়ায়নি৷ তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ নাসিম নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে আলোচনার কথা বললেও তিনি এও বলেছেন, যে নির্বাচন হবে সংবিধানের অধীনে৷ আর মঙ্গলবারও বিএনপির একাধিক নেতা বলেছেন, নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া আর কিছু তাদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়৷ তাই তিনি মনে করেন, সংলাপ বা আলোচনা হয়তো হবে, কিন্তু সমাধান আসবেনা৷ বাংলাদেশে অতীতে দুই রাজনৈতিক দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা ঘটা করে সংলাপ করেছেন৷ কিন্তু সফল হয়নি৷ এ পর্যন্ত কোনো রাজনৈতিক সংলাপ সফল হওয়ার নজির নেই বাংলাদেশে৷
তবে অধ্যাপক কলিমুল্লাহ মনে করেন, আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতার কোনো বিকল্প নেই৷ সে জন্য দুই দলকেই ছাড় দিতে হবে৷ শর্তহীন আলোচনায় বসে আলোচনার টেবিল থেকেই যৌক্তিক যে সিদ্ধান্ত আসবে, তা সবাইকে মেনে নিতে হবে৷ তা না হলে সংঘাত অনিবার্য৷ এই সংঘাত শেষ পর্যন্ত এড়ানো যাবে কিনা, তা বলার সময় এখনো আসেনি৷