সিরিয়ায় ‘মানবতার খাতিরে যুদ্ধবিরতি'
২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া এলাকাগুলোতে সাহায্য পাঠাতে চাইছে জাতিসংঘ৷ তাই রাশিয়া সমর্থিত আসাদ সরকার ও বিদ্রোহী দুই পক্ষকেই সেই সুযোগ দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে তারা৷
পূর্ব গুটায় মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকাল ৯টা থেকেই শান্ত পরিবেশ বজায় রয়েছে৷ রাশিয়ার বার্তা সংস্থাগুলোর খবর অনুযায়ী, সোমবার ঐ এলাকায় ‘মানবতার খাতিরে' বিমান হামলায় বিরতির নির্দেশ দেন পুটিন৷ সিরিয়া জুড়ে চলমান যুদ্ধ বন্ধ করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ক্রমাগত চাপের মধ্যে এই যুদ্ধবিরতির ঘোষণা এলো৷ দৈনিক যুদ্ধবিরতির আওতায় স্থানীয় সময় দুপুর ২টা পর্যন্ত এই নির্দেশ কার্যকর থাকবে৷
সিরিয়ায় বিদ্রোহীদের শেষ শক্তিশালীঘাঁটি হিসেবে পরিচিত গুটা থেকে সাধারণ মানুষরা যেন বেরিয়ে যেতে পারেন, সেজন্য ‘মানবিক করিডোরের' এই উদ্যোগ৷
গুটায় সরকারি বাহিনীর এই বিমান হামলাকে ২০১১ সালে সিরিয়ায় সংঘাত শুরু হবার পর থেকে সবচেয়ে সহিংস হামলা হিসেবে আখ্যায়িত করা হচ্ছে৷ এ হামলায় এ যাবৎ ৫শ'রও বেশি মানুষ মারা গেছেন৷ জাতিসংঘের বারবার যুদ্ধবিরতির আহ্বানের পরও প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের বাহিনী তাদের অভিযান চালিয়ে গেছে৷
এই হামলায় রাশিয়ার বিমানগুলোই বিশেষ ভুমিকা রেখেছে বলে যুক্তরাষ্ট্র সরকার ও কিছু মানবাধিকার সংগঠন দাবি করে আসছে৷
চলমান এ হামলার কারণ হিসেবে গণমাধ্যমের বিশ্লেষণ বলছে, সিরিয়ায় সংঘাতের তীব্রতা কমে আসার সুযোগে রাশিয়ার সহায়তা নিয়ে দেশের সব এলাকায় নিয়ন্ত্রণ জোরদার করতে চাইছে দামেস্ক৷ এতে করে বিদ্রোহীদের সঙ্গে শান্তি আলোচনায় আসাদ সরকার তাদের কর্তৃত্ব রাখতে পারবে৷
সে কারণে হামলার স্থান হিসেবে গুটাকে বেছে নেয়া হয়েছে৷ এর আগে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের আলোচনায় ৩০ দিনের জন্য আক্রমণ বন্ধ রাখার দাবি উঠেছিল৷ কিন্তু তার জায়গায় দিনে ৫ ঘন্টার যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে দামেস্ক৷
জাতিসংঘের মুখপাত্র আন্তোনিয়ো গুতেরেস বলেন, ‘‘টানা সংঘাতের চেয়ে পাঁচ ঘন্টা যুদ্ধবিরতি রাখার সিদ্ধান্ত ভালো৷ তবে আমরা চাই সহিংসতা বন্ধ হোক৷''
এদিকে, ওয়াশিংটন এই সহিংসতার জন্য রাশিয়াকে দুষছে৷ বলছে, একমাত্র রাশিয়াই পারে এই সহিংসতা বন্ধ করতে৷ কোনো ধরনের ‘উস্কানি' দেয়া থেকে রাশিয়াকে বিরত থাকার আহ্বানও জানিয়েছে দেশটি৷
২০১১ সালে আরব বসন্তের ধারাবাহিকতায় সিরিয়ায় গণবিক্ষোভ শুরু হয়৷ সেই বিক্ষোভ সহিংস রূপ নেয়৷ সাত বছরে সিরিয়ায় এই যুদ্ধে ৩ লাখেরও বেশি মানুষ মারা গেছেন৷
জেডএ/এসিবি (রয়টার্স, এএফপি)