অবহেলায় পিকাসোর শিল্পকর্ম
৫ নভেম্বর ২০১৩যুদ্ধ মানেই অরাজকতা৷ ‘চাচা আপন প্রাণ বাঁচা' – এই চিন্তাই মানুষকে তাড়া করে বেড়ায়৷ সেখানে বিলাসিতার কোনো জায়গা নেই৷ অতিপ্রয়োজনীয় জিনিস-পত্র নিয়ে কোনোরকমে ঘর ছেড়ে পালিয়ে যেতে হয় অনেক মানুষকে৷ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ইউরোপেও একই অবস্থা দেখা গেছে৷ অনেক মূল্যবান সামগ্রী হয় ধ্বংস হয়ে গেছে অথবা হারিয়ে গেছে৷ চুরির ঘটনাও কম নয়৷ বহুকাল পরে তেমনই কিছু আবার খুঁজে পেলে বিস্ময় জাগে বৈকি৷
মিউনিখ শহরে একটি ফ্ল্যাটে এবার সে রকম আবিষ্কারের ঘটনা ঘটেছে৷ একটি-দুটি নয়, প্রায় ১,৫০০ শিল্পকর্ম সবার অলক্ষ্যে পড়ে ছিল সেখানে৷ বেশ অবহেলায়, জঞ্জালের মধ্যে৷ ‘ক্লাসিকাল মডার্ন' যুগের ছবি সেগুলি৷ শিল্পীদের নাম শুনলে চোখ কপালে ওঠার কথা! পাবলো পিকাসো, ফ্রানৎস মার্ক, পাউল ক্লে, অঁরি মাতিস, মাক্স বেকমান সহ আরও অনেকের ছবি পাওয়া গেছে সেখানে৷ সাপ্তাহিক ‘ফোকুস' পত্রিকার সূত্র অনুযায়ী, এ সব ছবির দাম প্রায় একশো কোটি ইউরো তো হবেই৷
জার্মান সরকার ২০১১ সালেই এই গুপ্তধনের খবর পেয়েছিলো৷ নাৎসি আমলে যে সব শিল্পকর্ম চুরি করা হয়েছিল, তার খোঁজ চলছে বহুকাল ধরে৷ তখনই মিউনিখের ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালানো হয়৷ তবে এই ভাণ্ডার সম্পর্কে সে সময়ে সম্পূর্ণ ধারণা পাওয়া যায়নি৷ আপাতত ছবিগুলি বাজেয়াপ্ত করে একটি জায়গায় রাখা হয়েছে৷ বিশেষজ্ঞরা সেগুলির সঠিক মূল্য নির্ধারণ করবেন৷ কোথা থেকে কী ভাবে ছবিগুলি এসেছে, তাও জানার চেষ্টা চলছে৷ পিকাসোর একটি ছবির মালিকের হদিশ পাওয়া গেছে৷ তিনি ছিলেন পিকাসোর ফরাসি বন্ধু পল রেজেনবার্গ৷ ১৯৪০ সালে এই ইহুদি আর্ট ডিলার সব কিছু ফেলে প্যারিস ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন৷
এখন প্রশ্ন হলো, সব ছবি কি পাওয়া গেছে? কর্নেলিয়ুস গুরলিট নামের যে অবসরপ্রাপ্ত ব্যক্তির ফ্ল্যাটে শিল্পকর্মগুলি পাওয়া গেছে, তাঁর মা হিল্ডেব্রান্ড গুরলিট নামকরা আর্ট ডিলার ছিলেন৷ ২০১১ সালে ফ্ল্যাটে কর্তৃপক্ষ তল্লাশি চালানোর কয়েক মাস পর কর্নেলিয়ুস মাক্স বেকমানের আঁকা একটি ছবি নিলামে চড়ান৷ এমন আরও ছবি হয়ত হাতছাড়া হয়ে গেছে৷
এসবি/ডিজি (ডিপিএ, এএফপি)