অবহেলিত শিশুদের জন্য স্বীকৃতি
১৪ অক্টোবর ২০১৪কৈলাশ সত্যার্থী তাঁর জীবন উৎসর্গ করেছেন, যে সব লক্ষ লক্ষ শিশু শ্রমের দাসত্বে বাঁধা পড়ে আছে, তাদের মুক্তির জন্য, তাদের পরিস্থিতির উন্নতি ঘটানোর জন্য৷ সত্যার্থীর জন্ম ১৯৫৪ সালে, পেশায় তিনি ইলেকট্রিক ইঞ্জিনিয়ার৷ ১৯৮০ সালে তিনি ‘বচপন বচাও আন্দোলন' (বিবিএ), বা শৈশব বাঁচাও আন্দোলন সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করেন৷
সে'যাবৎ বিবিএ হাজার হাজার দোকান-কারখানা ও বসতবাড়িতে হানা দিয়ে শিশু শ্রমিকদের উদ্ধার করেছে৷ সত্যার্থীকে বারংবার শিশুশ্রম সংক্রান্ত সচেতনতা বৃদ্ধির প্রচেষ্টায় সংশ্লিষ্ট হতে দেখা গেছে৷ ১৯৯৮ সালে শিশুশ্রমের বিরুদ্ধে বিশ্ব পদযাত্রার নেতৃবর্গের মধ্যে ছিলেন সত্যার্থী: সেই পদযাত্রা ১০৩টি দেশ পরিব্রজনা করে৷
গত ১০ই অক্টেবর নরওয়ের নোবেল কমিটি ‘‘শিশু-কিশোরদের নিপীড়নের বিরুদ্ধে এবং সব শিশুর শিক্ষার অধিকারের দাবিতে সংগ্রামে'' উভয়ের অবদানের জন্য ৬০-বছর-বয়সি কৈলাশ সত্যার্থী ও ১৭-বছর-বয়সি মালালা ইউসুফজাইকে যুগ্মভাবে নোবেল শান্তি পুরস্কার প্রদান করে৷ ডয়চে ভেলের সাক্ষাৎকারে কৈলাশ সত্যার্থী শিশুশ্রমের বিরুদ্ধে তাঁর সংগ্রামের প্রেরণা, সেই সংগ্রামের পথে প্রতিবন্ধক ও তাঁর ভবিষ্যতের স্বপ্নের কথা বলেন৷
ডয়চে ভেলে: আপনার কাছে, এবং আপনার কাজের জন্য এই পুরস্কারের মূল্য কী?
কৈলাশ সত্যার্থী: এই পুরস্কার শিশুদের দাসত্ব ও শোষণের বিরুদ্ধে সংগ্রামে আমাকে আরো শক্তি যোগাবে৷....যে সব লক্ষ লক্ষ শিশুরা উপেক্ষিত এবং অবহেলিত, তাদের পক্ষে এ'টি একটি বড় সম্মান ও স্বীকৃতি৷
শিশুশ্রমের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর প্রেরণা পেলেন কোথা থেকে?
আমি শৈশব এবং ছাত্রজীবন থেকেই বিষয়টি নিয়ে ভাবনাচিন্তা করে থাকি৷ তা থেকে আমি এই সিদ্ধান্তে আসি যে, যে সব শিশুর শৈশব কেড়ে নেওয়া হয়েছে, আমাকে তাদের হয়ে কাজ করতে হবে৷....ধীরে ধীরে আমি বুঝতে শিখি যে, শিশুশ্রম বুনিয়াদী মানবাধিকার ভঙ্গের সমতুল৷
শিশুশ্রমের বিরুদ্ধে সংগ্রামে কী ধরনের বাধা পেয়েছেন?
এটা চিরকালই একটা কঠিন যুদ্ধ ছিল৷ আমি আমার দু'জন সহকর্মীকে হারিয়েছি: একজনকে গুলি করে মারা হয়েছে, অন্যজনকে পিটিয়ে মারা হয়েছে৷ আমাকে এবং আমার পরিবারের সদস্যদের একাধিকবার আক্রমণ করা হয়েছে৷
(নোবেল শান্তি পুরস্কার) একজন পাকিস্তানি নাগরিক ও মানবাধিকার আন্দোলনকারী, মালালা ইউসুফজাইকেও প্রদান করা হয়েছে৷ একজন ভারতীয় ও একজন পাকিস্তানির যুগ্ম বিজয়ী হওয়া সম্পর্কে আপনার কী বক্তব্য?
আমি মালালাকে শ্রদ্ধা করি৷ উনি একজন চমৎকার মহিলা৷ পুরস্কার ঘোষণার পর আমি ফোনে ওঁর সঙ্গে কথা বলেছি , এবং আমরা কিভাবে বিভিন্ন বিষয়ে একত্রে কাজ করতে পারি, এখানে যেমন মেয়েদের জন্য শিক্ষা ও শিশুশ্রম – তা নিয়ে আমরা অনেকক্ষণ কথা বলেছি৷ তবে আরো বড় কথা, আমরা কিভাবে আমাদের এলাকায় – এবং সারা বিশ্বে – শান্তি পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে পারি, শান্তির পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারি, তা নিয়েও আমরা আলোচনা করেছি৷