অভিজিৎ হত্যাকাণ্ড
৭ জুলাই ২০১৫তিনি জানান, ‘‘বইমেলার সময় বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এলাকায় ৭০টি সিসিটিভি স্থাপন করা হয়েছিল৷ সেই সব সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ, অভিজিতের ঘনিষ্টজনদের ফোন কল এবং আরো কিছু তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয়া সাতজনের ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া গেছে৷'' তিনি বলেন, ‘‘তারা যে হত্যাকাণ্ডে জড়িত আমরা তার প্রমাণ সংগ্রহ করেছি৷ তাদের নাম জানা গেছে, পাওয়া গেছে একাধিক ছদ্ম নামও৷ তবে তাদের ঠিকানা জানা যায়নি৷''
বইমেলা থেকে বাসায় ফেরার পথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় ২৬শে ফেব্রুয়ারি রাত ৮টার দিকে অভিজিৎকে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা৷ হামলায় অভিজিতের স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যাও গুরুতর আহত হন৷ রাত ১০টার দিকে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিম অভিজিৎ হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে৷
এরপর ২রা মে আল-কায়েদার ভারতীয় উপমহাদেশ শাখার (একিউআইএস) প্রধান অসিম উমরের নামে ইন্টারনেটে প্রচারিত এক ভিডিও বার্তায় দাবি করা হয় যে, একিউআইএস-এর সদস্যরাই অভিজিৎকে হত্যা করেছে৷ ভিডিওতে বাংলাদেশি ব্লগার আহমেদ রাজীব হায়দার, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এ কে এম শফিকুল ইসলাম ও করাচি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শাকিল আউজকেও হত্যার দাবি করা হয়৷
মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘‘শনাক্ত করা সাতজনই অভিজিৎ হত্যায় সরাসরি অংশ নিয়েছিল বলে আমরা নিশ্চিত৷ এরা সবাই শিক্ষিত৷ এদের মধ্যে একজন সদ্য পাস করা চিকিৎসক৷ সবাই সদ্য নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সদস্য বলেও তথ্য পেয়েছি আমরা৷ তাদের ছবিও পাওয়া গেছে৷ ঠিকানা না জানা গেলেও বিভিন্ন সূত্র ধরে তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে৷''
তিনি আরো জানান, ‘‘এ সব ছবিসহ কিছু তথ্য এবং কাগজ-পত্র শনাক্ত করার জন্য মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই-এর মাধ্যমে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী অভিজিতের স্ত্রী রাফিদা আহমেদের কাছে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে৷''
এ নিয়ে গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র এবং ব্লগার ডা. ইমরান এইচ সরকার ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘ডিবি অভিজিৎ হত্যায় জড়িত সাতজনকে যদি চিহ্নিত করে থাকে, তাহলে এটি একটি ভালো খবর৷ কিন্তু তারা এখনো তাদের নাম-পরিচয় জানতে পারেনি, ঠিকানাও জানে না তারা৷ তাই সন্দেহ হয়৷ আসলেই এতদিন পর তারা চিহ্নিত করতে পেরেছে না এটা ‘আই ওয়াশ'?''
তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, ‘‘স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী দাবি করেছেন পহেলা বৈশাখ বাংলা নববর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় যৌন নিপীড়নের ঘটনায় কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷ কিন্তু পুলিশ বলছে কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি৷ অভিজিৎ রায়ের ক্ষেত্রেও যদি একই রকম হয়, তাহলে তা হবে দুঃখজনক৷''
বিষয়টি নিয়ে অভিজিৎ রায়ের বাবা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. অজয় রায়ের কোনো মন্তব্য জানা যায়নি৷
প্রসঙ্গত, অভিজিৎ হত্যার পর ফেসবুকে হত্যার হুমকির দায়ে ফারাবি নামে একজন উগ্রপন্থি যুবককে আটক করা হয়৷ তাকে আটকের পর কয়েক দফা রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের পরেও সে হত্যাকাণ্ডে জড়িত বলে স্বীকার করেনি, জানিয়েছে ডিবি৷