অভিবাসীর সন্তান মেয়র পদপ্রার্থী
৩ অক্টোবর ২০১৪বার্লিন বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা সামাজিক গণতন্ত্রীদের নেতৃত্বাধীন একটি জোট সরকারের হাতে, ক্লাউস ভোভেরাইট যার গভর্নিং মেয়র বা শাসক মেয়র৷ ভোভেরাইট গত আগস্ট মাসে ঘোষণা করেন যে, তিনি ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন, যার পর তাঁর এসপিডি দলের সদস্যরা পত্র মারফত ভোটের মাধ্যমে ভোভেরাইটের উত্তরসূরি নির্বাচন করার প্রচেষ্টা করছে৷ এই পোস্টাল ব্যালট শেষ হবে আগামী ১৭ই অক্টোবর৷ ব্যালটে সালেহ-র আরো দু'জন প্রতিদ্বন্দ্বী থাকা সত্ত্বেও, যেহেতু তিনি বার্লিন বিধানসভায় এসপিডি গোষ্ঠীর নেতা, সেহেতু তাঁর জয়ের সম্ভাবনাই বেশি৷ এবং পত্রভোটে জয়ী হলে বিধানসভায় পর্যাপ্ত ভোট পেতে তাঁর কোনো অসুবিধে হওয়ার কথা নয়৷
বার্গার কিং থেকে লর্ড মেয়র
সালেহ-র কাহিনি জার্মানিতে বহিরাগতদের অন্তর্ভুক্তি ও প্রগতির একটি নিদর্শন হিসেবে গণ্য হতে পারে৷ আশির দশকের সূচনায় ফিলিস্তিনি ‘‘অতিথি শ্রমিকদের'' সন্তান হয়ে তৎকালীন পশ্চিম বার্লিনে এসেছিলেন৷ গোড়ায় ‘বার্গার কিং'-এও কাজ করেছেন; পরে নিজে একটি মুদ্রণ সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন৷ বার্লিনে চিরকালই বহু বিদেশি-বহিরাগত-অভিবাসীদের বাস, বিশেষ করে তুর্কিদের৷ অভিবাসীদের সম্পর্কে সালেহ-র মন্তব্য: ‘‘বর্তমানে বহু তরুণ মানুষজনের অনুভূতি যে, তাদের (এই সমাজে) কোনো অংশ নেই৷'' কাজেই (লর্ড মেয়র পদে) তাঁর নির্বাচন লক্ষ লক্ষ মানুষকে ‘‘সাহস এবং আশা'' দেবে ও দেখাবে যে, কে কোথায় জন্মেছে, তা সত্ত্বেও সব মানুষ এক – বলে সালেহ মনে করেন৷
ইতিহাস গড়া
মাত্র ১৮ বছর বয়সে সালেহ সামাজিক গণতন্ত্রী দলে যোগদান করেন – তার ঠিক ১৯ বছর পরে আজ তিনি বার্লিনের শাসক মেয়র হতে চলেছেন৷ তা যদি সত্যিই ঘটে, তাহলে ‘‘সেটা হবে একটা সুবিশাল সংকেত এবং আমরা সকলে মিলে বার্লিনে ইতিহাস সৃষ্টি করব,'' বলেছেন সালেহ৷ বার্লিন রাজধানী হলেও জার্মানির ‘‘দরিদ্রতম'' শহরগুলির মধ্যে পড়ে – ভোভেরাইট বার্লিনকে বলেছিলেন, ‘‘দরিদ্র হলেও আকর্ষণীয়''৷ বার্লিনকে আজ হাই-টেক স্টার্ট-আপের কেন্দ্র বলে গণ্য করা হয়, কিন্তু এখানে প্রথাগত শিল্প-কারখানা বিশেষ নেই৷
সালেহ বলেছেন: ‘‘বার্লিন বাড়ছে, বার্লিনের খুব ভালো বিকাশ ঘটছে, কিন্তু বহু মানুষের এই প্রবৃদ্ধিতে কোনো ভাগ নেই৷ অনেকের ক্ষেত্রেই – যা কিছু ঘটছে, তার সাথে তাদের যেন কোনো সম্পর্ক নেই৷ আমি চাই যে, আরো অনেকে যেন সমৃদ্ধির ভাগ পান৷''
আর বার্লিনে ইসরায়েল বিরোধী প্রতিবাদে ইহুদি বিদ্বেষ সম্পর্কে সালেহ-র মন্তব্য: ‘‘রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ আলাদা হলে, সমালোচনা করতে কোনো বাধা নেই৷ কিন্তু ইহুদি বিদ্বেষের কোনো যুক্তি থাকতে পারে না৷''
এসি/ডিজি (এপি)