অভিবাসীর চাপে ন্যুব্জ বেইজিং নগরী
২৪ অক্টোবর ২০১১বেইজিং এর টংগুয়ান স্যাটেলাইট শহরটি তৈরি হয়েছিল চৌদ্দ বছর আগে৷ উদ্দেশ্য ছিল অল্প কিছু মানুষ সেখানে সব নাগরিক সুযোগসুবিধাসহ বসবাস করবে৷ অথচ চৌদ্দ বছর পরও সেখানে অভিজাত বিদ্যালয়, হাসপাতাল এবং বিনোদনের অভাব প্রকট৷ বেইজিং এর ডাউনটাউনের যাদের জন্য সেই নাগরী তৈরি হয়েছিল, তারা সেখানে বাস করছেন ঠিকই৷ তবে বড় অগোছালো জীবন সেখানে৷
বেইজিংয়ে অভিবাসীর সংখ্যাও ক্রমশ বাড়ছে৷ চীনের গ্রামাঞ্চল থেকে আসা লাখো তরুণ ভিড় করছে রাজধানীতে৷ একটি চাকুরি, একটু সচ্ছল জীবনের আশায়৷
বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল শহরগুলোর একটি বেইজিং৷ গত এক দশকে এই শহরে ভিড় জমিয়েছে এক কোটি মানুষ৷ অবশ্য এই অবস্থা শুধু বেইজিং এর নয়, বিশ্বের আরো অনেক নগরীর জনসংখ্যা বাড়ছে৷ বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলোর পরিস্থিতি ক্রমশ নাজুক হচ্ছে৷ আফ্রিকা, এশিয়া এবং দক্ষিণ অ্যামেরিকার নগরগুলোতে ভিড় করছে চাকুরীপ্রার্থীরা৷ শুধু চাকুরি নয়, খরা, বন্যাসহ নানা প্রাকৃতিক কারণে কৃষকরা নিজের এলাকা ছেড়ে বড় শহরমুখী হচ্ছে৷
জাতিসংঘের অর্থনৈতিক এবং সামাজিক বিষয়ক দপ্তরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ১৯৫০ সালে বিশ্বে নগরবাসীর সংখ্যা ছিল ৭৩০ মিলিয়ন৷ ২০০৯ সালে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৩.৫ বিলিয়নে৷ ধারণা করা হচ্ছে, আগামী চার দশকের মধ্যে নগরবাসী হবে ৬.৩ বিলিয়ন মানুষ৷
পরিসংখ্যান আরো বলছে, ২০২৫ সালের মধ্যে বিশ্বে মেগাসিটির সংখ্যা হবে ২৯৷ যার মানে হচ্ছে, এসব শহরের গড় বাসিন্দার সংখ্যা দশ মিলিয়ন বা তারও বেশি হবে৷ ২০০৯ সালেই অবশ্য মেগাসিটির সংখ্যা ছিল ২১টি৷
চীনের অর্থ এবং অর্থনৈতিক বিষয়ক উপমন্ত্রী ইয়াং ওয়েইমিন এর মতে, চীনের মানুষের এই শহরমুখী স্রোত উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় নেতিবাচক প্রভাব তৈরি করছে৷ তিনি বলেন, বড় শহরগুলোর উপর চাপ বাড়ছে৷ অথচ ছোট এবং মাঝারি শহরগুলোতে শিল্প-কারখানার অভাব রয়েছে, ফলে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হচ্ছে না৷ তাই সবাই বেইজিং, শাংহাই এবং গোয়ানজু'র দিকে ছুটছে এবং বাড়তি বিড়ম্বনা তৈরি করছে৷
জাতিসংঘের আবাস সংক্রান্ত দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০৭০ সাল নাগাদ বন্যা দুর্গত বড় শহরগুলোর তালিকার প্রথম দশ'এ থাকবে দরিদ্র দেশগুলো৷ সুনির্দিষ্টভাবে বলতে গেলে, চীন, ভারত এবং থাইল্যান্ড হবে বড় ভুক্তভোগী৷
প্রতিবেদন: আরাফাতুল ইসলাম
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন