অভিযোগ অস্বীকার করলেন ব্যর্থ বিমান হামলার নায়ক
৯ জানুয়ারি ২০১০শুক্রবার ফেডারেল আদালতে শুনানিতে বিচারকের এক প্রশ্নের জবাবে স্পষ্ট করেই জানিয়ে দিয়েছেন তার কথা৷ বলেছেন, তার বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ আনা হয়েছে এবং সেগুলোতে তার অপরাধের যে কথা বলা হয়েছে, সেই সব অভিযোগ তিনি স্বীকার করেন না৷
দশ মিনিটের শুনানি, ক্লান্ত মুত্তালাব
দশ মিনিট ছিল এই শুনানির ব্যাপ্তিকাল৷ ডেট্রয়টের আদালতে যখন তাকে আনা হচ্ছিলো, তখন তিনি ছিলেন খুবই শান্ত৷ একটি সাদা টি শার্ট এবং খুবই লম্বা খাঁকি প্যান্ট পরা মুত্তালাবকে ধীর হেটে আদালতের অভ্যন্তরে হেটে যেতে দেখা গিয়েছে৷ তবে তাকে দেখাচ্ছিল খুবই ক্লান্ত এবং অসুস্থ৷ তার শারীরিক এই অবস্থা দেখে যখন বিচারক তাকে প্রশ্ন করেন, তিনি কোন দাওয়াই গ্রহণ করেছেন কিনা, এর জবাবটি ছিল খুবই চতুর৷ বললেন ব্যথানাশক দাওয়াই গ্রহণ তিনি করেছেন, তবে তার বিরুদ্ধে যে ছয়টি অভিযোগ গঠন করা হয়েছে, সেগুলো তিনি ঠিকই বুঝতে পারছেন৷
সরকারের পক্ষ থেকে তার জন্য নিয়োজিত আইনজীবী মিরিয়াম এল শিফার তাঁর মক্কেল মুত্তালাবের পক্ষে বলেন, মুত্তালাব আনীত অভিযোগগুলো স্বীকার করেন না৷
উপস্থিত এক সাক্ষী বললেন..
এই শুনানি চলাকালে আদালত ভবনে উপস্থিত ছিলেন ঐ ব্যর্থ বিমান হামলার ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হেব্বে আরেফ৷ ২৫ ডিসেম্বর ডেট্রয়টগামী অ্যামেরিকান এয়ার লাইনের ঐ বিমানে তিনি ছিলেন একজন যাত্রী হিসাবে৷ পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, সেই দিন তাকে আমরা যখন বিমানে দেখলাম, সেখানে তিনি ছিলেন নিস্প্রভ৷ একটি কথাও বলেননি৷ আজ তাকে দেখলাম আদালত ভবনে কথা বলতে৷ মুসলিম এই নারী আইনজীবীকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, তিনি কেন এই আদালতে এসেছেন, এর উত্তরে তিনি বলেলেন, আমি এসেছি এই বিচারকার্য দেখতে৷ আমি এসেছি কারন এই ঘটনা ব্যক্তিগতভাবে আমাকে এবং আমার দেশকে আঘাত করেছে৷
মুত্তালাবের বিরুদ্ধে যত অভিযোগ
মিশিগান জেলা আদালতে দাখিল করা দলিলে মুত্তালাবের বিরুদ্ধে তার পোষাকের মধ্যে লুকিয়ে বোমা বহন করার অভিযোগ আনা হয়৷ সাত পাতার অভিযোগ পত্রে বলা হয়েছে, বোমাটিতে পেন্টাএরিথ্রিটল টেট্রানাইট্রেট - পিইটিএন, ট্রায়াসিটোন ট্রাইপারঅক্সাইড - টিএটিপি এবং অন্যান্য উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন বিস্ফোরক দ্রব্য ছিল৷ বোমাটি এই উদ্দেশ্যেই বহন করা হচ্ছিল যাতে মুত্তালাব যখন চাই তখনই ফ্লাইট ২৫৩ বিমানে সেটির বিস্ফোরণ ঘটাতে পারে৷
দোষ প্রমাণ হলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
গণ বিধ্বংসী অস্ত্র বহনের এসব অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হলে ঐ তরুণের বিরুদ্ধে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় হতে পারে৷ এছাড়া তার বিরুদ্ধে আনীত অন্যান্য অভিযোগ সমূহের জন্য ২০ থেকে ৩০ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে৷
প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা তাঁর প্রশাসনের গৃহীত নিরাপত্তার বিভিন্ন ফাঁক ফোঁকর সম্পর্কে এবং নিজের দায় এবং আগামীর নির্দেশনা জানিয়ে দেয়া বক্তব্যের একদিন পর ফেডারেল আদালতে এই শুনানি অনুষ্ঠিত হলো৷
প্রতিবেদন: সাগর সরওয়ার
সম্পাদনা: রিয়াজুল ইসলাম