অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ব্যবস্থায় সংস্কার আনছে টিউনিশিয়া ও মিশর
১৫ মার্চ ২০১১স্বৈরশাসকরা রাজনীতিতে শক্তিশালী নিরাপত্তা বাহিনীকে কীভাবে ব্যবহার করতে পারে, তার বড় উদাহরণ ছিল এই দুই দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ব্যবস্থা৷ বলা হচ্ছে, এতোদিন এই দুই দেশের গোয়েন্দা সংস্থার ভূমিকা ছিল অনেকটা সাবেক পূর্ব জার্মানির গোয়েন্দা বাহিনী স্টাসি'র মতো৷
সংস্কারবাদীরা বলছেন, পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে জার্মানির উদাহরণকে অনুসরণ করা যেতে পারে৷ অর্থাৎ যারা জনগণের উপর গোয়েন্দাগিরি করবে তাদের সেটা করার অধিকার আছে কিনা, তার কৈফিয়ৎ চাওয়ার ব্যবস্থা রাখা৷ শুধু তা-ই নয়, তাদের গুপ্তচরবৃত্তিমূলক কর্মকাণ্ডের ফলে জনজীবনে বিঘ্ন সৃষ্টি হলে দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তির ব্যবস্থাও করতে হবে৷
মিশরের বিরোধী শিবিরের অন্যতম আলোচিত ব্যক্তিত্ব আইমান নূর৷ বললেন, ‘‘আসলে এখন যা প্রয়োজন তা হলো ঐ গোষ্ঠীর নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের বিচার করা৷ আমরা ঠিক তাই চাচ্ছি, যা জার্মানি করেছিল৷''
জনগণের শক্তি এমন যে তা সম্প্রতি হোসনি মুবারককে তাঁর ক্ষমতা থেকে উৎখাত করতে সক্ষম হয়েছে৷ মিশরে মুবারক বিরোধী বিক্ষোভের সময় মানুষকে হত্যার অভিযোগে নিরাপত্তা সংস্থার প্রধানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷ এবং সেসময় নির্বিচারে মানুষকে হত্যা করার বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে৷ নিরাপত্তা সংস্থার অন্য ৪৭ জনকে নথিপত্র গায়েব করে ফেলার অভিযোগে আটক করা হয়েছে৷ আর এখন থেকে জনগণের প্রাত্যহিক জীবনে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা সংস্থার ঐসব বিতর্কিত ভূমিকার সমাপ্তি ঘটবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মিশরের নতুন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী৷
এদিকে মার্চের ৭ তারিখে টিউনিশিয়ার নতুন সরকার একই ধরণের নিরাপত্তা সংস্থাগুলোকে লুপ্ত করে ফেলেছে৷ এ প্রসঙ্গে ‘হিউম্যান রাইটস ওয়াচ' এর বৈরুতের গবেষক নাদিম হোরি বলেন, ‘‘প্রকৃত বিপ্লব শুরু হয়েছিল তখনই, যখন টিউনিশিয়ার লোকজন রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা সংস্থার দর্প ভেঙে দিয়েছিল এবং মিশরীয়রা রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা সংস্থার বিরুদ্ধে ঝড় তুলতে পেরেছিল৷''
মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে এই ধরণের জবাবদিহিতা বহির্ভূত নিরাপত্তা বাহিনী দেখা যায়৷ যারা সরকারের স্বচ্ছতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে গণবিক্ষোভের সময় সরকারের পক্ষ নেয়৷ তাই এখন সময় হয়েছে এসব বাহিনীর বিতর্কিত ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলার বলে মত বিশ্লেষকদের৷
প্রতিবেদন: জান্নাতুল ফেরদৌস
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন