অমর একুশে বইমেলা শুরু
১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে আয়োজিত অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তিনি মাসব্যাপী এই বইমেলার উদ্বোধন করেন৷
মেলা উদ্বোধনের আগে প্রধানমন্ত্রী বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার-২০২৩ বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন৷
এছাড়া তিনি বাংলা একাডেমি প্রকাশিত 'বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সংগৃহীত রচনা: দ্বিতীয় খন্ড'সহ কয়েকটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন৷
'পড়ো বই, গড়ো দেশ: বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ প্রতিপাদ্যে বাংলা একাডেমি এবারের বইমেলার আয়োজন করছে৷
মোট ৩৭টি প্যাভিলিয়নসহ বইমেলায় ৬৩৫টি প্রতিষ্ঠানকে মোট ৯৩৭টি স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে৷ বাংলা একাডেমি মাঠে ১২০টি প্রতিষ্ঠানকে ১৭৩টি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ৫১৫টি প্রতিষ্ঠানকে ৭৬৪টি স্টল বরাদ্দ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ৷
গত বছর ৬০১টি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে মোট ৯০১টি স্টল বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল৷
প্রতি কর্মদিবসে বইমেলা বিকাল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত এবং সরকারি ছুটির দিনে সকাল ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে এবং দুপুরের খাবার ও নামাজের জন্য এক ঘণ্টা বিরতি থাকবে৷
যে কোনো ধরনের সমালোচনা এড়াতে এ বছর বাংলা একাডেমি এককভাবে মেলার সমস্ত আয়োজন সম্পন্ন করেছে উল্লেখ করে অমর একুশে গ্রন্থমেলা কমিটির সদস্য সচিব কে এম মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, "আজ সকালের মধ্যে প্রায় ৯৫ শতাংশ কাজ শেষ হবে৷"
কে এম মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, " আগের বছরগুলোতে কিছু ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি মেলার আয়োজনে জড়িত ছিল, যার ফলে গত বছর কিছুটা সমালোচনার সম্মুখীন হয়েছিল৷"
মেলায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও মাসব্যাপী সেমিনারের পাশাপাশি শিশু-কিশোরদের জন্য ছবি আঁকা, সংগীত ও আবৃত্তি প্রতিযোগিতার ব্যবস্থা থাকবে৷
আয়োজকরা জানিয়েছেন, ২৩ জানুয়ারি ডিজিটালাইজড লটারি সিস্টেমের মাধ্যমে পুরোনো এবং নতুন তালিকাভুক্ত প্রকাশনার জন্য স্টল বরাদ্দ সম্পন্ন করা হয়েছিল৷
অমর একুশে গ্রন্থমেলা কমিটির সদস্য সচিব কে এম মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, বিগত বছরের মতো এবারও মেলার মূল মঞ্চ হবে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে৷ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন ও 'লেখক বলছি' মঞ্চ সোহরাওয়ার্দী উদ্যান প্রাঙ্গণে স্থাপন করা হবে৷ রমনা কালী মন্দিরের পাশে সাধুসঙ্গ এলাকায় 'শিশু চত্বর' স্থাপন করা হয়েছে৷
বাংলা সাহিত্যের বিভিন্ন ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্য এ বছর ১১টি বিভাগে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার-২০২৩ দেওয়া হয়৷ বিভাগগুলো হলো: কবিতা, কথাসাহিত্য, প্রবন্ধ/গবেষণা, অনুবাদ, নাটক, শিশুসাহিত্য বিভাগ, মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু, পরিবেশ/বিজ্ঞান ক্ষেত্র, জীবনী এবং লোক কাহিনি৷
পুরস্কারপ্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছেন : শামীম আজাদ (কবিতা), ঔপন্যাসিক নুরুদ্দিন জাহাঙ্গীর ও সালমা বাণী (যৌথভাবে কথাসাহিত্যে), জুলফিকার মতিন (প্রবন্ধ/গবেষণা), সালেহা চৌধুরী (অনুবাদ), নাট্যকার মৃত্তিকা চাকমা ও মাসুদ পথিক (যৌথভাবে নাটক), তপঙ্কর চক্রবর্তী (শিশু সাহিত্য), আফরোজা পারভিন এবং আসাদুজ্জামান আসাদ (মুক্তিযুদ্ধের উপর গবেষণা), সাইফুল্লাহ মাহমুদ দুলাল এবং মো. মজিবুর রহমান (বঙ্গবন্ধুর উপর গবেষণা), পক্ষীবিদ ইনাম আল হক (পরিবেশ/বিজ্ঞান ক্ষেত্র), ইসহাক খান (জীবনী) এবং তপন বাগচী ও সুমন কুমার দাস (যৌথভাবে লোক কাহিনী)৷
বইমেলার সার্বিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে ডিএমপি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) মেলার নির্বিঘ্ন নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সর্বাত্মক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে৷ ডিএমপি বইমেলা মাঠের ভেতরে ও বাইরে ইউনিফর্ম ও সাদা পোশাকে পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন করবে এবং মেলার আশপাশের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য ওয়াচ টাওয়ার ও ফায়ার টেন্ডার স্থাপন করা হবে৷
মেলার মাঠ ও এর আশপাশের এলাকা সিসিটিভি ক্যামেরা ও ড্রোন নজরদারিতে থাকবে বলে জানান ডিএমপি কমিশনার হাবীবুর রহমান৷
ডিএমপি টিমগুলোকে পুরো অনুষ্ঠানস্থলে নজরদারি করার দায়িত্ব দেওয়া হবে এবং পাশাপাশি কোন ধরনের গুজব ঠেকাতে সোশ্যাল মিডিয়া মনিটর করা হবে৷
এসএইচ/এসিবি (দ্য ডেইলি স্টার)