1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

অসহায় বাংলাদেশ

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা২৩ মার্চ ২০১৩

টর্নেডোর মতে প্রাকৃতিক দুর্যোগে এখনো বাংলাদেশে নিয়তিই ভরসা৷ কারণ টর্নেডোর পূর্বাভাষের কোন প্রযুক্তি নেই বাংলাদেশে৷ অথচ এই দুর্যোগে ব্যাপক প্রাণহানি ঘটে৷ শুক্রবারেও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় টর্নেডোতে কমপক্ষে ২২ জন নিহত হয়েছেন৷

https://p.dw.com/p/1834t
Bangladeshi women mourn the death of relatives in a tornado at Chandi in Brahmanbaria district, Bangladesh, Saturday, March 23, 2013. The tornado ripped through 20 villages in eastern Bangladesh, killing almost two dozens of people, with another 200 hurt, a government official said Saturday. (AP Photo/A.M. Ahad)
ছবি: picture alliance / AP Photo

শুক্রবার স্থানীয় সময় বিকেল পাঁচটার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তিনটি উপজেলার সংলগ্ন বিশটি গ্রাম ১৫ মিনিটের মধ্যে লন্ডভন্ড হয়ে যায়৷ কমপক্ষে ২২ জন নিহত হন৷ আর আহত হন ৫ শতাধিক৷ দুমড়ে মুচড়ে যায় ঘর-বাড়ি, গাছ পালা, ফসলের ক্ষেত৷ আখাউড়ার আমোদাবাদ দিঘী গ্রামের ৮০ বছরের বৃদ্ধ আবুল হোসেন চৌধুরী জানান, তাঁর জীবনে এমন ঘটনা দেখেন নি৷ মুহূর্তে সব কিছু ধ্বংস হয়ে যায়৷ যেন রোজ কেয়ামত নেমে আসে৷

কেন এমন হয়? এই প্রশ্নের জবাবে আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়া কর্মকর্তা আয়েশা খাতুন ডয়চে ভেলেকে জানান, টর্নেডো স্থানীয়ভাবে ছোট এলাকায় সৃষ্টি হয়৷ ওই এলাকায় বায়ুর চাপ খুবই কমে গিয়ে বাতাস হাল্কা হয়ে উপরে উঠে যায়৷ আর চারপাশের ভারী বাতাস শূন্যস্থান পুরণ করতে তীব্র বেগে, প্রচণ্ড শক্তিতে ওই এলাকায় আঘাত হানে৷ তার স্থায়িত্ব হয় খুব অল্প সময়৷ তবে এই সময়ের মধ্যে ব্যাপক ধ্বংসলীলা ঘটে৷

A Bangladeshi woman walks with children past a dead cow after a tornado hit the region, at Chandi in Brahmanbaria district, Bangladesh, Saturday, March 23, 2013. The tornado ripped through 20 villages in eastern Bangladesh, killing almost two dozens of people, with another 200 hurt, a government official said Saturday. (AP Photo/A.M. Ahad)
শুক্রবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তিনটি উপজেলার সংলগ্ন বিশটি গ্রাম লন্ডভন্ড হয়ে যায়, কমপক্ষে ২২ জন নিহত হনছবি: picture alliance / AP Photo

আয়েশা খাতুন জানান, এই টর্নেডের কোন পূর্বাভাষ দেয়ার মত প্রযুক্তি বাংলাদেশে নেই৷ স্থানীয়ভাবে এত অল্প সময়ে এই প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘটে যে স্যাটলোইটের মাধ্যমে তা পর্যবেক্ষণ সম্ভব নয়৷ তাই কোন প্রস্তুতিমূলক ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হয়না৷ দেয়া যায়না কোন সতর্কবার্তা৷ কেবল ঘটে যাওয়ার পরই জানা যায়৷

তিনি বলেন, ‘‘সারা দেশে শুক্রবার ঝড়োহাওয়া এবং বৃষ্টি ও বজ্রবৃষ্টির আশঙ্কার তথ্য তাদের কাছে ছিল৷ আর সেজন্য তার ২ নম্বর সতর্ক সংকেত দিয়েছিলেন৷ কিন্তু টর্নেডোর সতর্ক সংকেত দেয়া সম্ভব ছিলনা৷’’

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. এ কে এম মাকসুদ কামাল ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘টর্নেডোর সময় ছোট এলাকায় বাতাসের তীব্র ঘুর্ণনের সৃষ্টি হয়৷ যা ভয়াবহ৷’’ তিনি জানান, প্রতিবছরই দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে গড়ে ৪/৫টি টর্নেডোর ঘটনা ঘটে৷ তবে ভয়াবহ টর্নেডো প্রতি ১০ বছরে একবার আঘাত হানে বলে পর্যক্ষেণে দেখা গেছে৷ ২০ বছর আগে মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় টর্নেডোর আঘাতে ওই জনপদই নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছিল৷

মাকসুদ কামাল বলেন, ‘‘আমাদের দেশে না থাকলেও এখন টর্নোডোর পূর্বাভাষ দেয়া সম্ভব৷ আমেরিকা এবং ইউরোপ একধরনের রাডার ব্যবহার করে অন্তত ৪৫ মিনিট আগে টর্নেডোর পূর্বাভাষ দিতে পারে৷ আর এধরনের পূর্বাভাষ দিয়ে জীবন ও সম্পদ রক্ষার নজির আছে৷ এমনকি এখন ভূমিধসেরও পূর্বাভাষ দেয়া সম্ভব৷’’

অধ্যাপক কামাল মনে করেন, এধরনের প্রযুক্তি বাংলাদেশেও ব্যবহার করা উচিত৷ অসহায়ের মত প্রকৃতির হাতে মানুষের জীব ও সম্পদ ছেড়ে দেয়ার চিন্তা ঠিক না৷ তিনি বলেন, ‘‘ঝড়, জলোচ্ছ্বাস, সাইক্লোন, বন্যার মত প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা এবং ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশের সাফল্য ঈর্ষণীয়৷ তাই টর্নেডোর পূর্বাভাষ দেয়া গেলে জীবন ও সম্পত্তির ক্ষতি অনেক কমিয়ে আনা যাবে৷’’

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য