অ্যামেরিকায় কৃষ্ণাঙ্গের মৃত্যুদণ্ড, বিতর্ক
২৫ সেপ্টেম্বর ২০২০গত জুলাই থেকে অ্যামেরিকায় কেন্দ্রীয় স্তরে আবার মৃত্যুদণ্ড দেয়া হচ্ছে। ১৭ বছর বন্ধ থাকার পর ট্রাম্প প্রশাসন আবার মৃত্যুদণ্ড চালু করেছে। তারপর এই কৃষ্ণাঙ্গ অপরাধীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হলো।
স্থানীয় সময় সকাল সাতটা নাগাদ তাঁর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়। অপরাধীর নাম ক্রিস্টোফার ভিয়ালভা। বয়স ৪০ বছর। এক খ্রিস্টান দম্পতিকে হত্যার জন্য তাঁকে এই সাজা দেয়া হয়েছিল। ইন্ডিয়ানার ফেডারেল জেলে এই মৃত্যুদণ্ড কর্যকর হয়েছে।
ক্রিস্টোফারের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হলো সেই সময় যখন বর্ণবাদের বিরুদ্ধে অ্যামেরিকা জুড়ে আন্দোলন চলছে। বিচার ব্যবস্থার বিরুদ্ধেও বর্ণবাদের অভিযোগ উঠছে। পুলিশের বর্ণবাদী মনোভাব নিয়ে প্রতিদিনই প্রায় বিক্ষোভ হচ্ছে। এক কৃষ্ণাঙ্গ নারীর পুলিশের গুলিতে মৃত্যুর বিচার সম্প্রতি শেষ হয়েছে। সেখানে একজন পুলিশের শাস্তি হয়েছে। বাকি দুই অভিযুক্ত পুলিশ কর্মী ছাড়া পেয়ে গেছেন। এরপর আবার প্রবল বিক্ষোভ শুরু হয়। সেই বিক্ষোভেও গুলিতে দুই জনের মৃত্যু হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের বক্তব্য, পুলিশ ইচ্ছে করে এমনভাবে মামলা সাজিয়েছিল, যাতে তাঁদের সাবেক সহকর্মীদের বেশি শাস্তি না হয়।
এর মধ্যেই শুরু হলো কৃষ্ণাঙ্গ বন্দির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা নিয়ে বিতর্ক। তাঁর আইনজীবীদের অভিযোগ, এই মৃত্যুদণ্ডের পিছনেও বর্ণবাদ কাজ করছে।
ক্রিস্টোফার অবশ্য নিজে স্বীকার করেছিল যে সে দম্পতিকে খুন করেছে। ওই খ্রিস্টান দম্পতি চার্চে প্রার্থনার পর বাড়ি ফিরছিলেন। সে সময় ক্রিস্টোফার ও তাঁর এক সঙ্গী গাড়ি থামিয়ে গুলি চালায়। তারপর গাড়িটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। কোনো সন্দেহ নেই, খুবই নির্মমভাবে সেই দম্পতিকে হত্যা করা হয়েছিল। ওই দম্পতি বারবার প্রাণ ভিক্ষা করেছিলেন। কিন্তু ক্রিস্টোফাররা তাতে কান দেয়নি।
বিচারের পর ক্রিস্টোফারের আইনজীবী বলেন, তাঁর বিপরীতে যে আইনজীবীরা ছিলেন, তাঁরা একটা ধারণা প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন যে, ক্রিস্টোফার হলেন ভয়ঙ্কর কৃষ্ণাঙ্গ অপরাধী। আইনজীবী সুশান অটোর দাবি, এই মামলায় বর্ণবাদের ভূমিকা ছিল।
ওয়াশিংটন ভিত্তিক সংগঠন ডেথ পেনাল্টি ইনফরমেশন সেন্টারের রিপোর্ট বলছে, মৃত্যুদণ্ড দেয়ার ক্ষেত্রে বর্ণবাদের ভূমিকা আছে। আর ট্রাম্পের আমলে একের পর এক মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে। ১৯২৭ সালের পর থেকে কখনো এত বেশি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়নি।
জিএইচ/এসজি(রয়টার্স, এপি)