হিমশিম খাচ্ছে ইন্দোনেশিয়া
৬ অক্টোবর ২০১৪দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার কয়েকটি দেশে আইএস-এর তৎপরতা সেসব দেশের সরকারের জন্য রীতিমতো বিপদসংকেত হয়ে উঠছে৷ ইন্দোনেশিয়ার ব্যবসায়ী চেপ হেরনাওায়ানকে কয়েক দিন আগে আটক করেছিল পুলিশ৷ কিন্তু জঙ্গি বা সন্ত্রাসী কার্যকলাপে জড়িত থাকার কোনো অভিযোগ না থাকায় ছেড়ে দিতে হয় তাঁকে৷ মুক্ত হয়ে হেরনাওায়ান নিজেই বলেছেন, আইএস-এর হয়ে যুদ্ধে অংশ নিতে ইন্দোনেশিয়া থেকে অনেকেই যাচ্ছেন সিরিয়ায়৷ সম্প্রতি বেশ বড় একটি দলকে নিজে পাঠিয়েছেন বলেও জানিয়েছেন ৬৩ বছর বয়সি এই ব্যবসায়ী৷
হেরনাওায়ানের মতে, ইন্দোনেশিয়ার মানুষ স্বতঃস্ফুর্তভাবেই আইএস-এ যোগ দিচ্ছে৷ তিনি জানান, এ পর্যন্ত অন্তত ২০০ জন ইন্দোনেশীয় নাগরিক আইএস-এর হয়ে যুদ্ধে অংশ নিতে ইরাক ও সিরিয়ায় গিয়েছে৷ আইএস-এর সকল কর্মকাণ্ডের প্রতি প্রকাশ্যেই সমর্থন জানাচ্ছেন হেরনাওয়ান৷
এ বছরের শুরুর দিকে জাকার্তার প্রাণকেন্দ্রে আইএস সমর্থকদের এক সমাবেশে ভাষণ দিতে দেখা যায় হেরনাওয়ানকে৷ মঞ্চে তাঁর পাশেই ছিল বাহরুমসিয়াহ নামের এক ব্যক্তি৷ পরবর্তীতে সিরিয়ায় আইএস-এর হয়ে যুদ্ধরত ইন্দোনেশীয়দের নিয়ে প্রচারিত এক ভিডিও চিত্রে দেখা গেছে বাহরুমসিয়াহ৷
আইএস সমর্থকদের এমন প্রকাশ্য তৎপরতা রুখতে পারছে না ইন্দোনেশিয়া সরকার৷ এর কারণ জানাতে গিয়ে ইন্দোনেশিয়ার পুলিশের মুখপাত্র ব্রিডেডিয়ার জেনারেল বয় রালফি বলেন, ‘‘সন্ত্রাসমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ না থাকলে তো আমরা প্রচলিত আইনে তাদের গ্রেপ্তার করতে পারি না৷''
ইন্দোনেশিয়ার নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের আশঙ্কা, এখন যাঁরা আইএস-এর হয়ে যুদ্ধ করতে ইরাক বা সিরিয়ায় যাচ্ছেন, দেশে ফিরে তারা বড় বড় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে অংশ নিতে পারেন৷ অতীতে এমনটিই হয়েছে৷ তাঁরা জানান, আফগানিস্তানে যারা যুদ্ধ করতে গিয়েছিল ২০০২ সালে বালি বোমা হামলায় তারা অংশ নিয়েছে৷ সেই হামলায় ২০২ জন নিহত হয়েছিল৷
মালয়েশিয়া থেকেও আইএস-এ যোগ দিচ্ছেন অনেকে৷ সম্প্রতি জঙ্গি সন্দেহে ৩০ জন মালয়েশীয় নাগরিকের পাসপোর্ট জব্দ করা হয়৷ গত সেপ্টেম্বরে কুয়ালালামপুর বিমানবন্দর থেকে জঙ্গি সন্দেহে গ্রেপ্তার করা হয় তিনজনকে৷ মালয়েশিয়া থেকে তাঁরা তুরস্কে যাচ্ছিলেন৷ এক সামরিক কর্মকর্তা জানান, এ পর্যন্ত ২২ জন মালয়েশীয় নাগরিক সিরিয়ার যুদ্ধে অংশ নিচ্ছে বলে তাঁরা জানতে পেরেছেন৷
ইন্দোনেশিয়া থেকে আইএস-এর হয়ে যুদ্ধ করতে গিয়ে এ পর্যন্ত অন্তত চারজন নিহত হয়েছেন৷ ভিলদান মুখোল্লাদ তাদেরই একজন৷ এ বছরের শুরুতে বাগদাদের এক রেস্টুরেন্টে আত্মঘাতী বোমা হামলায় অংশ নিয়ে প্রাণ দেন তিনি৷
এসিবি/ডিজি (এপি)