সাংসদদের জন্য আচরণবিধি
৩১ আগস্ট ২০১৩ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ বা টিআইবি কয়েকমাস আগে এক জরিপে জানিয়েছিল বাংলাদেশের ৯৭ ভাগ সংসদ সদস্যই নেতিবাচক কাজে জড়িত৷ এই নেতিবাচক কাজে জড়িতদের মধ্যে সরকারি দলের সংসদ সদস্যই বেশি৷ তাদের মধ্যে মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী আছেন ২৭ জন৷
টিআইবি'র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান ডয়চে ভেলেকে জানান, এই নেতিবাচক কাজের মধ্যে রয়েছে স্থানীয় পর্যায়ে ঠিকাদারি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, উন্নয়নমূলক কাজে প্রভাব বিস্তার করে আর্থিকসহ নানা ধরণের সুবিধা আদায়৷ কিছু সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক কাজে জড়িত থাকারও অভিযোগ আছে৷ রিপোর্ট প্রকাশের পরও পরিস্থিতির তেমন কোনো উন্নতি হয়নি৷ সংসদ সদস্যরা স্থানীয় সরকারের কাজে হস্তক্ষেপের সুযোগ পায় বলেই এই পরিস্থিতি বলে তিনি জানান৷
শনিবার সংসদ সদ্যদের আচরণবিধি নিয়ে ঢাকায় এক সেমিনারে বক্তারা বলেছেন, স্থানীয় সরকারের কাজে এমপিদের হস্তক্ষেপ বন্ধ না হলে তাদের নেতিবাচক আচরণ বদলাবে না৷ সুজনের সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন এই সংসদেই এরকম একটি আইন যেন পাস করা হয়৷ সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার এটিএম শামসুল হুদা বলেন, আইন করা না গেলেও সংসদ সদস্যদের জন্য একটি আচরণবিধি প্রণয়ণ দরকার৷ যার মাধ্যমে স্থানীয় সরকারের কাজে তাদের হস্তক্ষেপ বন্ধের বিধি করতে হবে৷ নয়তো তারা নেতিবাচক কাজ থেকে বের হতে পারবেন না৷ তিনি বলেন সংসদ সদস্যদের কাজ আইন প্রণয়ন করা৷ তারা যেন সেই কাজেই মনোনিবেশ করেন৷
ড. ইফতেখারুজ্জামান ডয়চে ভেলেকে জানান, তারা তাদের জরিপ এবং অভিজ্ঞতায় দেখেছেন স্থানীয় পর্যায়ের উন্নয়নমূলক কাজসহ সব ধরণের কাজেই এমপিরা হস্তক্ষেপ করেন৷ তাদের নির্দেশ বা পরামর্শ ছাড়া ঠিকাদারিসহ নানা ধরণের কাজ বণ্টন করা কঠিন৷ আর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ আরো প্রায় সব ধরণের প্রতিষ্ঠানই থাকে তাদের নিয়ন্ত্রণে৷ ফলে তারা স্বাভাবিক কারণেই নেতিবাচক কাজে জড়িয়ে পড়েন৷ তাই ২০১০ সালের ১৪ই জানুয়ারি টিআইবির অনুরোধে সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী বেসরকারি দিবসে সংসদে একটি বিল উত্থাপন করেছিলেন৷ বিলটির শিরোনাম ‘সংসদ সদস্য আচরণ আইন, ২০১০'৷ বিলে সংসদ সদস্যদের দায়িত্ব, আচরণ, কর্মপরিধি এবং আচরণ লঙ্ঘন করলে শাস্তির বিধান প্রস্তাব করা হয়েছিল৷ কিন্তু বিলটি উত্থাপনের পর সেই অবস্থায়ই পড়ে আছে৷
ড. ইফতেখার মনে করেন সংসদ সদস্যদের আচরণ ও কাজ নিয়ে অবশ্যই সুনির্দিষ্ট আইন থাকা প্রয়োজন৷ নয়তো স্থানীয় পর্যায়ে স্থানীয় সরকারকে তাদের মর্জির ওপরে চলতে হবে৷