পেলে-র আফসোস
৫ এপ্রিল ২০১৪অ্যাসোশিয়েটেড প্রেসের সাক্ষাৎকারে পেলে বলেছেন, তিনি অবসর নেওয়া যাবৎ বিগত কয়েক দশকে খেলার ট্যাকটিকস ক্রমেই আরো বেশি ডিফেন্সিভ হয়ে উঠেছে৷ একটানা আক্রমণাত্মক খেলা আজকাল প্রায় দেখাই যায় না, পেলে যে ব্যাপারে আদৌ সুখী নন৷ ‘‘ইটালি চিরকালই ডিফেন্সিভ খেলতো, আমার সময়ে, আজ, চিরকালই,'' বলেছেন পেলে৷ ‘‘কিন্তু আজ – খুব সম্ভবত বিপুল পরিমাণ অর্থ, নতুন প্রযুক্তি কিংবা স্পন্সরদের কাছ থেকে টাকা পাবার আশায় – খেলায় জিতটা কীভাবে আসছে, লোকজন তা নিয়ে চিন্তাই করে না৷''
পেলে বলছেন, এখন কোচদের বার্তা হল: জিতলে কিনা সেটা প্রশ্ন নয়; না হারলেই হল৷ ‘‘ওরা আর বিউটিফুল গেমের জন্য কেয়ার করে না, ফুটবল রুচি বা আভিজাত্যের পরোয়া করে না৷ আমাদের আমলে আমরা এ সব বিষয় নিয়ে ভাবতাম, একটু ‘শো' দিতাম, মানে লোক-দেখানো খেলা খেলতাম,'' বলেছেন পেলে৷
ব্রাজিলের পক্ষে ‘হেক্সা', অর্থাৎ ছ'নম্বর বিশ্বকাপ জেতা খুব সহজ হবে না বলে পেলে মনে করেন: ‘‘জার্মানির খুব ভালো দল আছে, তরুণ দল৷ তারপর স্পেন৷ স্পেন এমন একটি দল, যারা আট-দশ বছর ধরে একসঙ্গে খেলে৷ সুন্দর, সুসংগঠিত একটি দল৷... ইটালিও ফেলনা নয়৷ উরুগুয়ের কথা ভাবতে হবে৷... আর্জেন্টিনাও আসছে৷'' কাজেই কাজটা খুব সহজ হবে না৷
এ মূল্যায়ন কার, সেটাও মনে রাখতে হবে: ব্রাজিল প্রথম তিনবার বিশ্বকাপ জেতে ১৯৫৮, ১৯৬২ এবং ১৯৭০ সালে৷ তিনবারই পেলে সেই দলে ছিলেন – শুধু ছিলেন না, ৯২টি খেলায় মোট ৭৭টি গোল করেন৷ সান্টোস ক্লাবের স্টার ছিলেন ১৯৫৬ থেকে ১৯৭৪ সাল অবধি৷ তারপর নিউ ইয়র্ক কসমস দলে যোগদান করে মার্কিন মুলুকে ‘সকার'-কে প্রতিষ্ঠা করার কৃতিত্বও তাঁর৷ কসমসের হয়ে খেলেন ১৯৭৫ থেকে ১৯৭৭ সাল অবধি৷ আজও তাঁর ম্যানহ্যাটানে একটি ফ্ল্যাট আছে৷
মারাদোনা কিংবা মেসি-র সঙ্গে তাঁকে তুলনা করে চলে না, কেননা তাদের খেলার শৈলী আলাদা বলে পেলে-র ধারণা৷ ধরা যাক পেলে কোনো বড় ক্লাবের দায়িত্বে পেলেন: আজকের প্লেযারদের মধ্যে কাকে সর্বাগ্রে সাইন করাতেন? দৃশ্যত নেইমার-কে, কেননা ‘‘সে তো আমাদের'', অর্থাৎ একে ব্রাজিলিয়ান, তায় নেইমার ঐ সান্টোস থেকেই বার্সেলোনায় গেছেন৷ কিন্তু পেলে নিজে ছিলেন ফরোয়ার্ড এবং বহু গোল স্কোর করেছেন৷ কাজেই তাঁর বাছাই হবে: ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডো৷
এসি/এসবি (এপি)