আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণ
১৫ ডিসেম্বর ২০১২মোট ২০ জন শিশু আর ছয় জন পূর্ণবয়স্ক মানুষ৷ তার সঙ্গে ঘাতক নিজে৷ কানেটিকাটের গোলাগুলির ঘটনায় প্রাণহানির সংক্ষিপ্ত বিবরণ এটি৷ মাত্র ২০ বছরের অ্যাডাম লান্জার হাতে একে একে ২৬ টি মানুষ প্রাণ দিলো৷ নিহতদের মধ্যে স্কুলের প্রিন্সিপালও রয়েছেন৷ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, স্যান্ডি হুক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মূলত ৫ থেকে ১০ বছরের বাচ্চারা পড়তে আসে৷ জীবনের শুরুতেই এই পৃথিবীর বিভীষিকাময় চিত্রটি প্রত্যক্ষ করে ফেললো এই ছোট্ট শিশুগুলো৷
মার্কিনিরা বন্দুক ভালোবাসে, তাই তাদের প্রতি ঘরে ঘরেই বন্দুক দেখা যায়৷ বিশ্বের সবচেয়ে বড় অস্ত্র যোগানদাতাও তারা৷ কিন্তু সেই বন্দুকই তাদের প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে প্রতি বছর৷ কিন্তু এতো প্রাণহানি সত্ত্বেও যেন বলবার কেউ নেই৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গান কন্ট্রোলিং এর কথা বলার মতো হিম্মত এখন পর্যন্ত কোন রাজনীতিকের হয়নি৷ মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাও এখন পর্যন্ত মুখ ফুটে বন্দুক রাখার ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপের কথা বলতে পারেন নি৷ তবে শুক্রবার তাঁর বক্তব্যে প্রায় সেই সুর শোনা গেছে৷ এই নির্মম ঘটনার প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে ওবামা বলেন, সময় এসেছে রাজনীতি বাদ দিয়ে একটি যথার্থ পদক্ষেপ নেওয়ার যাতে করে এই ধরণের ঘটনা আর না ঘটে৷'' বিশ্লেষকরা বলছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট সরাসরি ‘আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণ' শব্দগুলো উচ্চারণ না করলেও সেটিই বুঝিয়েছেন৷
তবে নিউইয়র্কের মেয়র মাইকেল ব্লুমবার্গ আরও একধাপ এগিয়ে বলেছেন, ‘‘অতীতে আমরা অনেক কথাই শুনেছি৷ তবে হোয়াইট হাউস কিংবা কংগ্রেস কারও কাছ থেকেই সত্যিকার কিছু দেখিনি৷ এটার সমাপ্তি ঘটা প্রয়োজন৷'' তিনি চান, আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণ নিয়ে এবার প্রেসিডেন্ট আইনসভায় বিল তুলুক৷ এদিকে বারাক ওবামার বক্তব্যের পর প্রায় দুইশ মানুষ হোয়াইট হাউজের সামনে দাবি নিয়ে সমবেত হয়৷ তারা দাবি জানায় আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইনের৷
এদিকে জার্মানিতেও এই ধরণের গোলাগুলির খবর পাওয়া গেছে৷ কুয়েডলিংবুর্গের একটি বাসাতে ছেলের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন তার ৭২ বছরের পিতা আর তার ৬০ বছরের বান্ধবী৷ গুলিতে আহত আরেক ভাই কোনমতে প্রাণে বেঁচে গেছেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা ডিপিএ৷
আরআই/এএইচ (রয়টার্স, ডিপিএ)