1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আটক কুস্তিগিরেরা, পাশে ফুটবল অধিনায়ক

২৯ মে ২০২৩

রোববার আন্দোলনরত কুস্তিগিরদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দিল্লি পুলিশ। পাশে সুনীল ছেত্রী।

https://p.dw.com/p/4RvRv
সাক্ষী মালিককে আটক করা হচ্ছে
ছবি: Altaf Qadri/AP Photo/picture alliance

একদিকে যখন নতুন পার্লামেন্ট ভবনের উদ্বোধন হচ্ছে, অন্যদিকে সে সময়ই দিল্লির যন্তরমন্তর থেকে আন্দোলনরত কুস্তিগিরদের রীতিমতো টেনে হিঁচড়ে আটক করে দিল্লি পুলিশ। অভিযোগ, ব্যারিকেড টপকে তারা পার্লামেন্টের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করেন। গণমাধ্যমের ফুটেজে দেখা যায়, অলিম্পিকে মেডেলজয়ী কুস্তিগিরেরা ব্যারিকেড টপকাচ্ছেন। এরপর তাদের রীতিমতো রাস্তায় ফেলে মারতে শুরু করেন পুলিশকর্মীরা। একে একে তাদের পুলিশ ভ্যানে তোলা হয়।

ঘটনার পর টুইট করে কুস্তিগিরদের পাশে দাঁড়ান ভারতীয় জাতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক সুনীল ছেত্রী। টুইটে তিনি লেখেন,  "কেন আমাদের কুস্তিগিরদের এই ভাবে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে? কারও সঙ্গে এই রকম ব্যবহার করা কাম্য নয়। আমি আশা করি পুরো বিষয়টির সঠিক ভাবে মূল্যায়ন করা হবে।”

বর্তমান ক্রীড়াবিদদের মধ্যে সুনীলই প্রথম কুস্তিগিরদের পাশে দাঁড়িয়ে টুইট করেন। রাজনৈতিক মহলে অবশ্য বিষয়টি নিয়ে আলোড়ন পড়ে গেছে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী সকলেই এর প্রতিবাদ করেছেন।

রাহুল লিখেছেন, প্রধানমন্ত্রীর যখন 'রাজ্যাভিষেক' হচ্ছে, তখন দেশের জন্য সম্মান এনে দেওয়া কুস্তিগিরদের রাজপথে ফেলে মারা হচ্ছে। ঘটনার ছবি দিয়ে হিন্দিতে টুইট করেছেন রাহুল।

জাতীয় কুস্তি ফেডারেশনের প্রধান ব্রিজভূষণ শরণের বিরুদ্ধে অভিযোগ কুস্তিগিরদের। অভিযোগ, তিনি এক নাবালিকা কুস্তিগিরকে যৌন হেনস্থা করেছেন। পক্সোয় তার বিরুদ্ধে মামলার দাবিতে গত বেশ কিছুদিন ধরে যন্তরমন্তরে অবস্থান বিক্ষোভ করছেন কুস্তিগিরেরা। এদের মধ্যে আছেন, অলিম্পিকে পদকজয়ী কুস্তিগির সাক্ষী মালিক, বিনেশ ফোগত, বজরং পুনিয়ারা।

এরা প্রত্যেকেই অলিম্পিক এবং আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে ভারতের জন্য পদক এনে দিয়েছেন। ভারতের সর্বোচ্চ সম্মানেও ভূষিত হয়েছেন। আন্দোলনের একেবারে গোড়া থেকে তারা যন্তরমন্তরে অবস্থান বিক্ষোভ করেছেন।

রোববার তাদের আটক করার পর রাতে দিল্লি পুলিশের তরফে জানানো হয়, কুস্তিগিরদের বিরুদ্ধে একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। এর মধ্যে দাঙ্গা করা, পুলিশকে হেনস্থা করা এবং আইনশৃঙ্খলা ভঙ্গ করার মতো গুরুত্বপূর্ণ ধারা আছে।

এদিকে কুস্তিগিরদের আন্দোলন ঘিরে নতুন প্রশ্ন সামনে এসেছে। ২০২৩ সালে চীনে এশিয়াড গেমস। ২০২৪ সালে অলিম্পিক। এই দুই গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্টে ভারতীয় কুস্তিগিররা আদৌ অংশ নিতে পারবেন কি না, তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। আন্দোলনের জেরে কুস্তি অ্যাকাডেমিতেও কার্যত বিদ্রোহের সুর। আন্দোলনের কারণে প্র্যাকটিসে নেই মেডেলজয়ী কুস্তিগিরেরা। এই পরিস্থিতিতে আদৌ কুস্তিগিরদের দুই গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্টে পাঠানো যাবে  কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। ফেডারেশন অবশ্য জানিয়েছে, এই প্রশ্ন অবান্তর এবং অমূলক।

গত কয়েক বছরে বক্সিং, কুস্তি এবং ভারোত্তলনে ভারত অত্যন্ত ভালো ফল করেছে। প্রায় সমস্ত ইভেন্ট থেকে পদক জয় করে নিয়ে এসেছে। এই ঘটনা সেই পথে কাঁটা তৈরি করল বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। যেভাবে কুস্তিগিরদের আন্দোলনকে আটকানো হচ্ছে, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে। বস্তুত, কেন কুস্তিগিরদের সঙ্গে আলোচনার টেবিলে বসা হচ্ছে না, তা নিয়েও একাধিক প্রশ্ন উঠেছে।

ভারতের ক্রীড়া মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, কুস্তিগিরদের আচরণ মেনে নেওয়া যায় না। কিন্তু এর প্রভাব সার্বিকভাবে ভারতীয় খেলার উপর পড়বে না। কুস্তিগিররা সমস্ত ইভেন্টেই অংশগ্রহণ করবেন।

এসজি/জিএইচ (পিটিআই, এনডিটিভি)