1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘আটক বাণিজ্য বন্ধ করুন’

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা৩০ মে ২০১৪

যশোরে মানবাধিকার বিষয়ক এক কর্মশালায় পুলিশকে আটক বাণিজ্য বন্ধ করতে বলেছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান৷ তাঁর কথায়, সবাই আইন অনুযায়ী কাজ করলে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা কমে আসবে৷

https://p.dw.com/p/1C94q
ড. মিজানুর রহমান (ফাইল ফটো)ছবি: DW

মিজানুর রহমান বলেন, ‘‘নারায়ণগঞ্জের সাত খুনের ঘটনার পর স্পষ্ট হয়েছে যে আইনকে নিজস্ব গতিতে চলতে দিতে হবে৷ এখানে কোনো ধরনের অবৈধ বা অন্যায় প্রভাব খাটিয়ে আইনকে পাশ কাটিয়ে চলতে দেয়া যাবে না৷ সেই যুগের শেষ হয়েছে৷’’

বৃহস্পতিবার যশোরের ঐ কর্মশালায় উপস্থিত পুলিশের ঊর্ধতন কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে মিজানুর রহমান বলেন, ‘‘পুলিশের আটক বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত অন্তত ১২৮ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করার জন্য সরকার দুর্নীতি দমন কমিশনকে নির্দেশ দিয়েছে৷ আপনাদের অনুরোধ করব, আপনাদের অধীনে যাঁরা আছেন তাঁরা যেন কোনোভাবে আটক বাণিজ্যের সঙ্গে সম্পৃক্ত না থাকেন৷’’

তিনি বলেন, ‘‘এদিকে সবাইকে সজাগ এবং সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে৷ কেননা, এটা মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন৷ এর কারণেই দরিদ্র মানুষ আইনের অধিকার পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন৷’’ তাই পুলিশকে আইনানুগ ক্ষমতা প্রয়োগের জন্য অনুরোধ করেন অধ্যাপক রহমান৷ এক্ষেত্রে কোনো বাধার সম্মুখীন হলে তাঁকে জানানোর কথাও বলেন তিনি৷

বিচারকদের উদ্দেশ্যে ড. মিজান বলেন, ‘‘বিচার বিভাগকেও তাদের বিবেককে জাগ্রত করে বিচারকাজ পরিচালনা করতে হবে৷ আমাদের বিচারকেরা যদি দরিদ্রবান্ধব না হন, দরিদ্র মানুষের কান্না যদি আপনাদের হৃদয়কে স্পর্শ না করে, তাঁদের কান্না-দুঃখ-কষ্ট যদি আপনার দুয়ার পর্যন্ত পৌঁছাতে না পারে, তাহলে সেই আদালত, সেই বিচারক ও সেই বিচার ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তা দেশে ফুরিয়ে যাবে৷ এখন কিন্তু আপনাদের ওপর যতটুকু আস্থা রয়েছে, ধীরে ধীরে তা বৃদ্ধি করা সম্ভব৷’’ তাঁর কথায়, ‘‘এ দেশকে আমরা নষ্ট হতে দিতে পারি না৷ সবাই নতুন যাত্রা শুরু করেছে৷ সেখানে বাংলাদেশ পিছিয়ে থাকতে পারে না৷’’

Bangladesch Polizei Khaleda Zia Residenz Dhaka Protest Rally Wahlen
পুলিশের আটক বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত অন্তত ১২৮ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করার জন্য সরকার দুর্নীতি দমন কমিশনকে নির্দেশ দিয়েছেছবি: picture-alliance/Landov

কর্মশালা শেষে ড. মিজানুর রহমান ডয়চে ভেলেকে টেলিফোন মারফত পুলিশের আটক বাণিজ্যের ব্যখ্যা দিয়ে বলেন, ‘‘মামলার এজাহারে কয়েকজনের নাম দিয়ে অজ্ঞাত পরিচয় আরো ব্যক্তিদের কথা বলা হয়েছে৷ এই সুযোগেই নিরীহ মানুষকে আটক করে ঘুস আদায়ের অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে অনেকের বিরুদ্ধে৷ অর্থাৎ সাম্প্রতিক সময়ে মানবাধিকার লঙ্ঘনের যেসব ঘটনা ঘটেছে, তার পিছনে রয়েছে অবৈধ ঘুস বাণিজ্য৷ এছাড়া মামলার ভয় দেখিয়ে এবং অযথা আটক করেও বাণিজ্য করে চলেছে পুলিশের এক শ্রেণির সদস্যরা৷’’

ড. মিজান বলেন, ‘‘নারায়ণগঞ্জের সাত খুনের ঘটনাও প্রমাণ করে যে, আইনের বাইরে গিয়ে কতিপয় র‌্যাব সদস্য বেআইনি কাজে জড়িয়ে পড়েছেন৷ তাঁরা যদি আইন মানতেন এবং আইন মানার জন্য মনিটরিং ও চাপ থাকতো, তাহলে এই ঘটনা ঘটতো না৷’’

অধ্যাপক রহমানের কথায়, ‘‘আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে আইনের ভিতরে থেকেই কাজ করতে হবে৷ আইনের বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই৷ সবাইকে আইনি সীমার মধ্যেই থাকতে হবে৷’’