আডিডাস’এর এক ইউরোর জুতো
২১ নভেম্বর ২০১০এক মডেল প্রকল্পের আওতায় আডিডাস বাংলাদেশে পাঁচ হাজার জোড়া জুতো বিক্রি করেছে৷ এক ধরণের স্যান্ডেল-শু৷ আডিডাস'এরই অঙ্গ সংস্থা রিবক'এর তকমা লাগানো জুতো এগুলো৷ বাংলাদেশে স্পোর্টস শু'এর বাজারে রিবক অগ্রগামী৷ এই স্যান্ডেল-শু বিক্রি হয়েছে ৮০ থেকে ১২০ বাংলাদেশী টাকায় - ইউরোর হিসেবে যা কিনা ৮১ সেন্ট থেকে ১ ইউরো ২২ সেন্ট৷ অর্থনীতি ও ব্যবসা সংক্রান্ত জার্মান দৈনিক হান্ডেল্সব্লাট লিখছে:
রিবক'এর চলতি মডেল বদলিয়ে তৈরি করা হয়েছে এই স্যান্ডেল-শু৷ আডিডাস জানিয়েছে, মাত্র তিন দিনের মধ্যে সব জুতো বিক্রি হয়ে যায়৷ ঢালাও উৎপাদনের জন্য মডেলটির আরো একটু রদবদল করা হবে যাতে দাম আরও কম হয়৷ পরীক্ষিত মডেলটির উৎপাদন খরচ দাঁড়িয়েছিল বিক্রির দামের চেয়ে অনেক বেশি৷
হান্ডেল্সব্লাট পত্রিকা এই প্রকল্পের লক্ষ্য প্রসঙ্গে লিখেছে: স্বল্পমূল্যে এরকম জুতো বিক্রি করে আডিডাস বিকাশমুখী দেশগুলোতে তার সামাজিক সংশ্লিষ্টতা জোরদার করতে চায়৷ একই সঙ্গে সেখানকার দরিদ্র মানুষরা কী ধরণের জিনিস কিনতে অভ্যস্ত সে সম্পর্কেও তথ্য সংগ্রহ করতে এবং বিপণনের উপযুক্ত পথও পরীক্ষা করে দেখতে আগ্রহী এই কোম্পানি৷ সমৃদ্ধির হার বাড়তে থাকার সাথে তৃতীয় বিশ্বের কোটি কোটি দরিদ্র মানুষ একদিন মধ্যবিত্ত শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত হলে বিশাল এক বাজার তৈরি হবে৷ সেই প্রত্যাশাটাও কাজ করেছে ভিতরে ভিতরে৷
আডিডাস'এর এই প্রকল্পের সঙ্গে আজকের ‘সোশাল বিজনেস' সংক্রান্ত ধ্যানধারণার একটা যোগ আছে বলে জানিয়েছে হান্ডেল্সব্লাট পত্রিকা৷ দুবছর আগে বাংলাদেশের নোবেল শান্তি পুরস্কারজয়ী মুহাম্মদ ইউনুস'এর সঙ্গে আডিডাস-প্রধান হ্যার্বার্ট হাইনার'এর সাক্ষাতের মধ্য দিয়েই এই প্রকল্পের সূচনা৷ বছর কয়েক হল ইউনুস ‘সোশাল বিজনেস' অর্থাৎ সমাজকল্যাণমুখী ব্যবসার কথা বলছেন জোরেশোরে৷ পত্রিকা লিখছে:
ঢালাও উৎপাদন কবে শুরু করবে আডিডাস এবং তা বাংলাদেশেই শুরু হবে কিনা তা এখনও স্পষ্ট নয়৷ এপর্যন্ত কোম্পানি সেখানে কোন জুতো তৈরি করায়নি৷ পরীক্ষামূলক মডেলটি নেয়া হয়েছে ইন্দোনেশিয়া থেকে৷ এই উচ্চাভিলাষী প্রকল্পটি অবশ্য আডিডাস'এর জন্য বিপণনের সমস্যা তৈরি করতে পারে৷ কেননা তাকে অবশ্যই দেখতে হবে, তার স্বল্পমূল্যের জুতোর কারণে স্থানীয় জুতোর বাজার যেন নষ্ট না হয়৷
ভাষান্তর: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন