ম্যার্কেল-প্রতিদ্বন্দ্বী শুলৎসের পরিকল্পনা
১৭ জুলাই ২০১৭সেপ্টেম্বরের জাতীয় নির্বাচনে চ্যান্সেলর পদে ম্যার্কেলের প্রতিদ্বন্দ্বী মার্টিন শুলৎস৷ ক্ষমতায় গেলে তিনি কী করবেন – সেই আভাস রবিবার দলীয় এক সম্মেলনে দিয়েছেন তিনি৷ ‘আধুনিক জার্মানির জন্য ভবিষ্যত পরিকল্পনা' শীর্ষক এক ঘোষণায় দশটি বিষয় উল্লেখ করেছেন তিনি, যার মধ্যে বাজেট সারপ্লাস দেশের মধ্যে এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) বিনিয়োগের বিষয়টি বিশেষভাবে গুরুত্ব পেয়েছে৷
‘‘জার্মানি আরো করতে পারে'', বার্লিনে এসপিডি নেতাদের বলেন শুলৎস৷ তিনি বলেন, ‘‘কেউ কেউ আছেন যারা ভবিষ্যতের জন্য অপেক্ষা করেন৷ আমরা ভবিষ্যত গড়তে চাই৷''
ম্যার্কেল এবং তাঁর অর্থমন্ত্রী ভল্ফগাং শয়েবলের বিরুদ্ধে অনেকে অভিযোগ করেন যে, তাঁরা বাজেট এবং ট্রেড সারপ্লাস ধরে রাখছেন ও দেশে বিনিয়োগ এবং খরচ খুব কম করছেন৷ পাশাপাশি ইইউ-র বৃদ্ধির পথেও বাধা সৃষ্টি করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে৷
ম্যার্কেলের জবাব
মার্টিন শুলৎসের বক্তব্যে থাকা বিনিয়োগে ঘাটতির জবাব বেশ দ্রুতই দিয়েছেন ম্যার্কেল৷ বিনিয়োগের প্রতি তাঁর উদাসীনতার যে অভিযোগ প্রতিদ্বন্দ্বী তুলেছেন তা প্রত্যাখ্যান করে ম্যার্কেল বলেছেন যে, সমস্যা আসলে অর্থ বরাদ্দে নয়, পরিকল্পনায়৷
‘‘আমরা বর্তমানে যে টাকা আছে তা খরচ করতে পারছি না'', বলেন বারো বছর ধরে চ্যান্সেলর পদে থাকা ম্যার্কেল, সঙ্গে যোগ করেন, ‘‘নির্মাণ শিল্প এবং আঞ্চলিক কর্তৃপক্ষ পরিকল্পনা গ্রহণের ক্ষেত্রে ‘বোটলনেক' পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে৷''
মধ্যবর্তী বাজেট পরিকল্পনায় কেন্দ্র সরকার বিনিয়োগের জন্য বাড়তি অর্থবরাদ্দ রেখেছে বলেও জানিয়েছেন ম্যার্কেল৷ তবে তিনি স্বীকার করেছেন যে, এক্ষেত্রে আরো অনেক কিছু করণীয় রয়েছে৷
প্রসঙ্গত, শিক্ষা, পরিচর্যা, হাসপাতাল এবং গৃহায়ন খাতে বিনিয়োগের জন্য জার্মানি শত শত কোটি ইউরো বরাদ্দ রাখলেও স্থানীয় কর্তৃপক্ষ উপযুক্ত পরিকল্পনার অভাবে সেখান থেকে অল্পই খরচ করতে পেরেছে৷
চাকুরি, শিক্ষা এবং পরিবার
শুলৎসের ঘোষিত দশটি বিষয়ের মধ্যে জার্মান অর্থনীতির ‘ডিজিটালাইজেশনের' বিষয়েও গুরুত্ব দেয়া হয়েছে৷ এতে সরকারি সেবাসমূহকে অনলাইন করার কথা বলা হয়েছে যাতে দীর্ঘ আমলাতান্ত্রিক জটিলতা এড়ানো সম্ভব হয়৷ যদিও ম্যার্কেলও এই সমস্যা নিরসনের কথা বলেছেন, তবে নির্দিষ্ট কোনো সময়সীমার কথা উল্লেখ করেননি৷ অন্যদিকে, শুলৎস পাঁচবছরের মধ্যে এটা সম্ভব মনে করছেন৷
এছাড়া ক্ষমতায় গেলে আরো ন্যায্য মজুরি, চাকুরি নিরাপত্তা বাড়ানো, মাস্টার্স লেভেল অবধি বিনা খরচায় শিক্ষা, পরিবারের জন্য আরো ট্যাক্স কমানো, বাড়ি কিনতে আগ্রহীদের আর্থিক সহায়তা এবং অবসর ভাতা রক্ষণাবেক্ষণের মতো বিষয়ও উঠে এসেছে সামাজিক গণতন্ত্রী দলের চ্যান্সেলর পদপ্রার্থীর ঘোষণায়৷
উল্লেখ্য, চলতি বছরের শুরুর দিকে চ্যান্সেলর পদে শুলৎসের নাম ঘোষণার পর এসপিডি দলের প্রতি সমর্থন বেশ খানিকটা বেড়ে যায়৷ কিন্তু সেই সমর্থন আবারো পড়তির দিকে চলে যাচ্ছে, অন্যদিকে ম্যার্কেল কার্যত হয়ে উঠছেন অপ্রতিরোধ্য৷ নির্বাচনের আগে এই পরিস্থিরি বদলে যেতে পারে এমন আভাস দিতে পারছেন না পর্যবেক্ষকরা৷
এআই/ডিজি (এএফপি, এপি, ডিপিএ)