ব্যাটারি তৈরিতে শিশুশ্রমিক
১৯ জানুয়ারি ২০১৬বিশ্বের মোট কোবাল্টের অন্তত অর্ধেক আসে কঙ্গো থেকে৷ অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলছে, কঙ্গোর খনিগুলোতে শিশুরা কাজ করছে৷ তাদের কারও কারও বয়স এমনকি সাতও হতে পারে৷ মানবাধিকার এই সংস্থাটি বলছে, হয়ত এই শিশুদের সংগ্রহ করা কোবাল্টই স্মার্টফোনের ব্যাটারি তৈরিতে ব্যবহৃত হচ্ছে৷
কঙ্গোর দক্ষিণে বেশ কিছু খনি রয়েছে৷ কোনো খনি কোম্পানি সেখানে কর্মরত না থাকলেও ব্যবসায়ীরা অনানুষ্ঠানিকভাবে সেই খনি থেকে কোবাল্ট সহ অন্যান্য মূল্যবান ধাতু সংগ্রহ করে৷ আর এ কাজে প্রাপ্তবয়স্কদের সঙ্গে শিশুদেরও কাজে লাগানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে অ্যামনেস্টি৷
প্রতিবেদন তৈরিতে খনিতে আগে কাজ করেছে এবং এখন কাজ করছে এমন ৮৭ জন ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলেছে অ্যামনেস্টি৷ এর মধ্যে ১৭ জন শিশু ও ১৮ জন কোবাল্ট ব্যবসায়ী রয়েছে৷
ব্যবসায়ীরা কোবাল্ট সংগ্রহের পর সেগুলো ‘কঙ্গো ডঙফাঙ মাইনিং' বা সিডিএম কোম্পানির কাছে বিক্রি করে৷ সিডিএম চীনের মিনারেল জায়ান্ট ‘হুয়াইয়ো কোবাল্ট'-এর একটি সাবসিডিয়ারি৷ কঙ্গো থেকে যাওয়া কোবাল্ট প্রক্রিয়াজাত করে দু'টি চীনা কোম্পানি৷ তারপর সেগুলো চীন ও দক্ষিণ কোরিয়ায় ব্যাটারি তৈরি করে এমন কোম্পানির কাছে বিক্রি করা হয়৷ এই কোম্পানিগুলো অ্যাপল, মাইক্রোসফট, সামস্যাং, সনি সহ গাড়ি নির্মাতা ডাইমলার ও ফল্কসভাগেনের জন্য ব্যাটারি তৈরি করে৷
কোম্পানিগুলো যা বলছে
অ্যামনেস্টির পক্ষ থেকে ঐ কোম্পানিগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা যে জবাব দিয়েছে সেগুলো ‘সুনির্দিষ্ট' নয় বলে মন্তব্য করেছে মানবাধিকার এই সংস্থাটি৷ যেমন অ্যাপল বলেছে, তাদের ব্যবহার করা কোবাল্ট কঙ্গো থেকে এসেছে কিনা তা ‘খতিয়ে' দেখা হচ্ছে৷ তবে তারা অতীতে অপ্রাপ্তবয়স্ক শ্রমিক ব্যবহারের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে৷ মাইক্রোসফট আর স্যামসাং বলেছে, তাদের কোবাল্ট কঙ্গো থেকে এসেছে কিনা তা তারা নিশ্চিত করতে সমর্থ নয়৷ আর সনি, ডাইমলার ও ফল্কসভাগেন বলেছে, অ্যামনেস্টি যা বলছে তা যে ঘটছে তার প্রমাণ নেই৷ এদিকে, হুয়াইয়ো কোবাল্ট বলছে, তারা কোবাল্ট সংগ্রহের ক্ষেত্রে সরবরাহকারী বাছাইয়ে কঠোর পদ্ধতি অনুসরণ করে৷ যারা শিশুদের শ্রমিক হিসাবে ব্যবহার করে তাদের কাছ থেকে কোবাল্ট ক্রয় করা হয় না৷ ২০১৪ সালে যখন তারা দু'টি খনি পরীক্ষা করতে গিয়েছিল তখন কোনো শিশুর দেখা তারা পায়নি বলেও জানিয়েছে কোম্পানিটি৷
ষড়যন্ত্র!
কঙ্গোর সরকার বলছে, কোবাল্ট উৎপাদনকারী অন্য দেশগুলো কঙ্গোর সুনাম ক্ষুণ্ণ করতে এ ধরনের অভিযোগ করছে৷
২০১৪ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০১৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত কঙ্গোর দক্ষিণের খনিগুলোতে কাজ করতে গিয়ে কমপক্ষে ৮০ জন প্রাণ হারিয়েছে বলে জানিয়েছে অ্যামনেস্টি৷
ইউনিসেফ বলছে ২০১৪ সালে কঙ্গোর দক্ষিণাঞ্চলের খনিগুলো প্রায় ৪০ হাজার শিশু কাজ করেছে৷ এর মধ্যে অনেকে কোবাল্ট খনিতে কাজ করেছে৷
জেডএইচ/ডিজি (ডিপিএ)